Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাঁদপুরে ‘রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই’ আদালতে মামলা

চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১১:৩১ এএম

চাঁদপুর শহরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারের সময় রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই করার অভিযোগে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী দাদন। গত ২৭ জানুয়ারি দি-ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ৮ জনকে আসামী করে চাঁদপুর আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।

মামলায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস.এম. শাহ আলম রবিন, ডাক্তার শামছুন নাহার তানিয়া, ওটি ইনচার্জ সুলতানা আক্তার সেতু, ফার্মেসির আ. খালেক কিরণ, মার্কেটিং অফিসার আব্দুল গাফফার মাহিম ও ইমাম হোসেন, নার্স হাসিনা আক্তার শেলি, ওটি ক্লিনার সমিতা বেগম ওরফে সকিনাকে আসামি করা হয়।

মামলা সূত্রে জানাযায়, গেলো বছরের ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজার এলাকার দাদনের স্ত্রী রাহেলা আক্তারকে চাঁদপুর দি-ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর ওইদিন রাতেই সিজার করা হয়। রিলেজ দেওয়ার ফলে বাড়িতে গেলে অপারেশনের স্থানে ব্যাথা শুরু হয়। কয়েকদিন পর অপারেশনের স্থান দিয়ে পুঁজ ও পানি বের হলে পুনরায় হাসপাতল কৃর্তপক্ষকে জানালে তারা হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন। হাসপাতালের ডাক্তার শামছুন্নাহার তানিয়া রোগীকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী ১৯ আগস্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ২০ আগস্ট ভর্তি হয়ে দীর্ঘ ১ মাস ২ দিন চিকিৎসা নেওয়াবস্থায় দুইবার অপারেশন করতে হয়।

মামলার বাদী দাবি করেন, ‘দি ইউনাইটেড হাসপাতালে অপারেশনের সময় তার পেটের ভিতরে গজ রেখে সেলাই করে দেয়া হয়েছে। একারনেই তার পেট ফুলে যায় এবং পুঁজ রক্ত বের হতে থাকে। এ কারণে তার ১০ লাখ টাকারও বেশি চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যায় হয়েছে। তার স্ত্রী বর্তমানে মৃত্যুর মুখে রয়েছে, যে কোন সময় মারা যেতে পারে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস.এম. শাহ আলম রবিন জানান, গেলো ৬-৭ মাস আগে আমার এখানে দাদন মিয়ার স্ত্রী সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করে। সিজারের চিকিৎসক ছিলেন ডা. শামছুন্নাহার তানিয়া ও এনেস্থেশিয়া ছিলেন ডা. আরিফ। রোগী সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কিছুদিন পর পেটের ব্যাথ্যা হচ্ছে এমনটি জানানোর পর ওই রোগীর চিকিৎসক ডা. শামছুন্নাহার তানিয়াকে জানানো হয়। তিনি তখন সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ডিউটিরত। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগীর সিজারের স্থান ইনফেকশনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

বিএমএ নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে অপারেশনে ডাক্তার শামছুন্নাহার তানিয়ার কোন ত্রুটি পাওয়া যায়নি। বাদী দাদন আমার বন্ধুর সম্পর্কিত আত্মীয়।
‘আমার দায়িত্ব ছিলো ডাক্তারদের সাথে তাকে মিট করিয়ে দেয়া, আমি সেটি করেছি। তিনিও সে বৈঠক থেকে সন্তুষ্ট চিত্তে বাড়ি ফিরে গেছেন। এখন এসে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তা আমার বোধগম্য নয়।’

এ বিষয়ে ডা. শামছুন্নাহার তানিয়া জানান, সিজারের সময় রোগীর কোনো গজ ব্যবহার করা হয় না। ঐ রোগীর ক্ষেত্রে তাই ভেতরে গজ থেকে যাওয়ার কোনো আশংকা নেই। তিনি আরো জানান, ঢাকার রিপোর্টে বলা হয়েছে রোগীর ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ