পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাংলাদেশ রেলওয়েতে বর্তমানে ইঞ্জিন আছে ২৮১টি। এর মধ্যে ১৮৬টি মিটারগেজ ও ৯৬টি ব্রডগেজ। এসব ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর। অথচ এরই মধ্যে ১৬৮টি ইঞ্জিনের বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরনো এসব ইঞ্জিনের মধ্যে রয়েছে ১১০টি মিটারগেজ ও ৫৮টি ব্রডগেজ। ব্যয়বহুল মেরামত ও অধিক জ্বালানি ব্যয়ের মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ এসব ইঞ্জিন চলমান রাখা হয়েছে। এছাড়া অনেক পুরনো মডেল হওয়ায় মেরামতের সময় প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশও পাওয়া যাচ্ছে না এখন।
এ অবস্থায় ৭০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কোরিয়া ট্রেড ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (কেএসইউআরই), এক্সিম ব্যাংক অব কোরিয়া (কে-এক্সিম) এবং কমার্শিয়াল ফ্যাসিলিটির কাছ থেকে। ৭০টি রেল ইঞ্জিন দিতে প্রতিবছর ২০ হাজার ডলার করে এজেন্ট ফি দাবি করে বসেছে কোরিয়ান কোম্পানি। প্রতি ডলারে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৬ টাকা ধরে মোট দাঁড়ায় প্রায় ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এ নিয়ে ১৯ বছরে বাংলাদেশকে মোট ৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার দিতে হবে; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (১ ডলার=৮৬ টাকা) প্রায় ৩ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে কোরিয়ান কোম্পানির এমন প্রস্তাবকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) শেরে বাংলানগরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অ-নমনীয় ঋণ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন- অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রতিনিধি ও কোরিয়ান কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা।
সভায় অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, ৭০টি রেলইঞ্জিন পেতে বাংলাদেশের সময় লাগবে ১৯ বছর। এই সময়ে প্রতি বছর ২০ হাজার ডলার এজেন্ট ফি দেওয়া সম্ভব নয়। প্রয়োজনে এক বছর ২০ হাজার ডলার এজেন্ট ফি দেওয়া যাবে, প্রতি বছর সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
‘৭০টি রেল ইঞ্জিন কিনতে দুই হাজার ৬৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ দেবে কোরিয়ান কোম্পানি। ঋণে লন্ডন ইন্টার ব্যাংক সুদের হার (লাইবর) প্লাস ১ দশমিক ৬০ শতাংশ।’
রেল মন্ত্রণালয় জানায়, পুরানো ইঞ্জিনগুলো প্রত্যাহার করা জরুরি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে ৭০টি দক্ষিণ কোরিয়ার মিটারগেজ (এমজি) ডিজেল ইলেকট্রিক রেলইঞ্জিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর নয় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তা কেনা সম্ভব হয়নি। অথচ বর্তমানে রেলওয়েতে ইঞ্জিন সংকটের কারণে কোচ পরিচালনা করায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। রেলপথে যাত্রীর সংখ্যা বাড়লেও সে তুলনায় ইঞ্জিন মিলছে না।
সূত্র জানায়, এক হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালে রেল ইঞ্জিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সময় বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পের মোট ব্যয়ও বেড়েছে। যদিও ২০১৭ সালের জুন মাসে ৭০টি ইঞ্জিন রেল লাইনে ‘অবমুক্ত’ করার সময়সীমা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এগুলো সংগ্রহ করা হয়নি। এরপর ২০১৮ সালের জুন মেয়াদে রেলইঞ্জিন সংগ্রহ করবে বলে ঘোষণা দেয় মন্ত্রণালয়। অথচ এই মেয়াদেও হচ্ছে না। এখন ৭০টি রেলইঞ্জিন সংগ্রহের জন্য ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময় চায় মন্ত্রণালয়। এই মেয়াদেও রেলপথে ইঞ্জিনগুলো চলাচল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৭০টি এমজি ইঞ্জিন কেনার মাধ্যমে পুরাতন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লোকোমোটিভ প্রতিস্থাপন করা হবে। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। সরকারি অর্থায়নের পরিবর্তে টেন্ডার ফাইন্যান্সিং হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই কোম্পানিকে দেখানো হচ্ছে।
৭০টি রেল ইঞ্জিন কেনা বাবদ আরো ৬৯৮ কোটি টাকা বাড়ছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় জনবল বাবদ ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকা বেড়েছে। সব কিছু সমন্বয় করতেই বারবার সময় বাড়ছে।
বারবার সময় বাড়ানো প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) মিহির কান্তি গুহ বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি না প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কেউ বলতে পারবে।
প্রকল্পের পরিচালক আহমেদ মাহবুব চৌধুরী বলেন, এজেন্ট ফি নিয়ে একটা বিষয় আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে চলমান। আমরা চাই দ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়ে ৭০টি রেল ইঞ্জিনের সেবাগ্রহণ করি। আমাদের রেলইঞ্জিন দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।