মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের ঘটনাবলীর প্রতি নজর রাখা বেশির ভাগ পর্যবেক্ষক দ্বিধাহীনভাবে একমত যে সারা বিশ্বের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনছেন ইমরান খান। তবে বেশির ভাগই বুঝতে পারছেন না যে এই সরকার কিভাবে দেউলিয়াত্বের মুখে থাকা অর্থনীতিকে রক্ষা করছেন এবং পিটিআই সরকার যদি রাজনৈতিক জনপ্রিয়হীনতার মূল্যে কঠিন সিদ্ধান্ত না নিত, তবে কী হতো।
কোনো সরকারই এখন একেবারে নিখুঁত হয় না এবং শুরু থেকেই পাকিস্তানের প্রতিটি সরকার সমালোচনার মুখে পড়েছে। সমালোচনা ও গণতন্ত্র হাতে হাত ধরে চলে। তবে মূল কথা মনে রাখতে হবে যে, কোনো সরকারকে অযোগ্য ঘোষণা করার আগে কিছু মৌলিক বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত। মিডিয়া ও নাগরিক সমাজের অনেকে সহজেই ভুলে যান যে পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সরকার বিদায় নেয়ার আগে পাকিস্তান টালমাটাল হয়ে পড়েছিল, আক্ষরিক অর্থেই দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল। অর্থনীতি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল, মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলছিলো। খাকান আব্বাসী সরকারের মিফতাহ ইসমাইল সংশোধনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আগের সরকারগুলোর তুলনায় বর্তমান সরকার অনেক বেশি অর্থনৈতিক জটিলতায় পড়েছে। এই সরকার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে চরম কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বার্ষিক ভিত্তিতে প্রবাসী আয় ব্যাপকভাবে বাড়াতে তরুণদের প্রতি ইমরান খানের অনুরোধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি পিটিআই সরকারের প্রথম বছরে সরকারের প্রবাসী আয় আগের বছরের চেয়ে বেড়ে যায়। এর অর্থ কী? এর মানে হলো প্রবাসে ইমরান খান সরকার অনেক জনপ্রিয়। এই সরকার যদি পিপিপি ও পিএমএলএন সরকারের তালগোল পাকানো বিষয়াদি ঠিক না করত, তবে পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে পড়ত।
অধিকন্তু, মুডির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে বর্তমান সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলা হয়েছে। পাকিস্তানের অর্থনীতি স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে বলে মতামত দেয়া হয়েছে এতে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্বীকার করার উপায় নেই যে পাকিস্তান বিপুল ঋণগ্রস্ত। ফলে পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফিরতে কত সময় লাগবে তা কেউ জানে না।
কূটনীতিক ক্ষেত্রেও পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে চীন পর্যন্ত নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে। চীন পাকিস্তান মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়টি সম্পন্ন হলে পাকিস্তানের রফতানি ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে। এতে করে অর্থনীতির উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সউদী আরব সম্প্রতি পাকিস্তানের সাথে সমঝোতা স্মারকে সই করেছ ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করার জন্য। এর মধ্যে গোয়াদারে ৮ বিলিয়ন ডলারের একটি মেগা তেল শোধনাগার রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মালয়েশিয়া ও ইতালি থেকেও আরো বিনিয়োগ আসতে পারে। বর্তমান সরকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জনশক্তি রফতানি বাড়ানোর ব্যাপারে। জিসিসি ভুক্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রফতানি ২০০ ভাগ বাড়ানোর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এসব অগ্রগতির ফলে আগামী দিনগুলোতে পাকিস্তানের অর্থনীতি উন্নত হবে বলে আশা করা যায়। এতে করে পাকিস্তানিদের মনোবলও চাঙ্গা হবে। বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো আরো কয়েক মাস থাকলেও ইমরান খানের সরকার পাকিস্তানকে সঠিক পথেই নিয়ে যেতে পারবেন বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।