মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠিগুলোর একটি রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠি শেষ পর্যন্ত ন্যায় বিচারের আশার আলো দেখতে শুরু করেছে, যেটার শুরু করে দিয়েছে গাম্বিয়া। জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) যে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, মিয়ানমার এখন আইনগতভাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে বাধ্য, এবং এটা নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে চারটি পদক্ষেপ নিতে হবে।
এই নজিরবিহীন আদেশের অর্থ হলো মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গাদেরকে হত্যাকান্ড থেকে রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে এবং আগে সংগঠিত গণহত্যার নমুনা সংরক্ষণ করতে হবে। ন্যায়বিচারের পথে এই গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের পরও এখনও উদ্বেগ রয়ে গেছে যে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দায়িদের কিভাবে বিচারের আওতায় আনা হবে।
ফিনান্সিয়াল টাইমসে গত সপ্তাহে এক লেখায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু কি নির্লজ্জভাবে বলেছেন যে, আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার তথ্যপ্রমাণের ক্ষেত্রে ‘চরমভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থীদের বিবৃতির উপর নির্ভর করা হয়েছে’ যাদেরকে ‘হয়তো ঘটনা সম্পর্কে অযথার্থ ও অতিরঞ্জিত তথ্য দেয়া হয়েছে’।
এই ধরনের বক্তব্য থেকে ধারণা করা যায় যে, সু কি তার সুনাম রক্ষার জন্য সম্ভাব্য যে কোন কিছু করবে, যেটা এরই মধ্যে যথেষ্ট ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ কারণে, যারা ক্ষমতায় আছেন, এবং যথাযথ দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য আহবান জানানোর সক্ষমতা যাদের আছে, তাদেরকে অবিলম্বে তৎপরত হতে হবে।
এই আদেশ যদিও রোহিঙ্গাদের জন্য এবং তাদেরকে যারা সমর্থন দিচ্ছে, তাদের জন্য একটা বিজয়ের মতো, কিন্তু আমাদেরকে সামনের দীর্ঘ পথের কথা ভুলে গেলে চলবে না। আইসিজের আদেশকে চুড়ান্ত বিজয় হিসেবে মনে করার কিছু নেই। বরং আন্তর্জাতিক জনগোষ্ঠি হিসেবে আমাদেরকে মিয়ানমারের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে, এবং দেখতে হবে যে, রোহিঙ্গা মুসলিমদের সুরক্ষার জন্য নির্দেশগুলো বাস্তবায়ন করা হয় কি না।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান মিন অং লাইং সামরিক বাহিনীর বহু সদস্যদের মধ্যে একজন যাকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। সু কি যেভাবে সামরিক বাহিনীর পক্ষ নিয়েছে, তাতে তিনিও গণহত্যাকে বৈধতা দেয়ার মতো কাজ করছেন, এবং তাকেও একদিন নিশ্চয়ই বিচারের মুখে দাঁড়াতে হবে।
আইজিসের ক্ষমতা যদিও সীমিত এবং কোন অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার কোন ক্ষমতা তাদের নেই, এ অবস্থায় আমাদের সরকারগুলোকে চাপ দিতে হবে যাতে তারা এ ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, এবং যাতে বিশ্বের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠিগুলো সুরক্ষা পায়।
মামলাটি আইসিজেতে নিয়ে এসে গাম্বিয়া প্রথম দেশ হিসেবে এ বিষয়ে নেতৃত্বের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তাদের এই ভ‚মিকা অন্য দেশগুলোর জন্য উদাহরণ হওয়া উচিত এবং যাতে অন্যেরাও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে, যদি তার আদালতের আদেশকে শ্রদ্ধা করতে ব্যার্থ হয়।
এটা দেখার বিষয় যে, যে সব পশ্চিমা দেশগুলো গণতন্ত্রের নামে বড় বড় কথা বলে, তারা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত কতটা আগ্রহী থাকে। মিয়ানমার যাতে আদালতের আদেশ মেনে চলে, সে জন্য মুসলিম দেশগুলোকেও সক্রিয় হতে হবে, মিয়ানমারে যে রোহিঙ্গারা এখনও রয়ে গেছে, তাদের সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে, এবং জীবিতদের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইসিজের বাইরে কথা বলার সময গাম্বিয়ার জাস্টিস মন্ত্রী আবুবাকার তামবাদু মন্তব্য করেন যে, ‘আদালত আজ যে রায় দিয়েছে, সেটা সর্বসম্মত। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১৭ জন বিচারপতি – যারা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি ও ম‚ল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করেন, তারা সবাই একমত হয়েছেন যে, বিশ্বের কোথাও গণহত্যার বিষয়টি সহ্য করা যায় না এবং মিয়ামারের স্বীকৃত জাতিগত গ্রুপ হিসেবে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেয়া প্রয়োজন’।
এই আদেশে যদিও ন্যায় বিচার নিয়ে কিছু আশাবাদ তৈরি হয়েছে, কিন্তু মিয়ানমারকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ দিতে হবে যাতে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অপরাধীদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়, এবং তারা যাতে তাদের বর্বর আচরণের পরিণতি ভোগ করতে পারে। সূত্র : দ্য নিউ অ্যারাব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।