রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে
সড়কটি যেন মানুষ নিরাপদে পারাপার হতে পারে সে জন্য সরকার কোট কোটি টাকা ব্যয় করে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করেছে একাধিক ফুট ওভার ব্রিজ। কিন্তু না চিত্রটাই ওল্টো যে ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে মানুষ দুর্ঘটনামুক্ত পারাপার হওয়ার কথা সেখানে কোন মানুষের পদচিহ্নই পড়ছে না। বরং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছে। যার ফলে গড়ছে মারাত্মক সব দুর্ঘটনা। কিছুতেই যেন বন্ধ করা যাচ্ছে না এই পারাপার। সম্প্রতি এভাবে সড়ক পার হতে গিয়ে মহসড়কের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাটে ভ্রাম্যমাণ একজন ষাটোর্ধ্ব লুঙ্গি বিক্রেতা লরির চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এরপর ট্রাফিক পুলিশ একটু নড়ে চড়ে উঠলেও ঘটনার ২ঘণ্টার মাথায় ফের মানুষের অবাধে চলাচল শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই সোলায়মানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে দুর্ঘটনাটি হয়েছে সে অংশ দিয়ে প্রতি দিনে রাতে হাজার হাজার মানুষ সড়ক পারাপার হচ্ছে। আমরা কতক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখবো। অনেক সময় বাধাদিলে পথচারিদের সাথে আমাদের বাক-বিত-ায় লিপ্ত হতে হয়। সওজকে একাধিকবার ফাঁকা স্থানটি বন্ধ করার জন্য বললেও তারা কালক্ষেপণ করছেন। এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে মিরসরাইয়ের ধুমঘাট ব্রিজ পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে মোট ৬টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৯৪ থেকে ১কোটি ২৫ লাখ টাকা। অথচ তা আজ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। কেন না পথচারীরা কোনভাবেই ফুট ওভার ব্রিজগুলো ব্যবহার করছেন না। ফলেই স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক, ব্যবসায়ীক বিভিন্ন নামে শুভেচ্ছা জানিয়ে কিংবা দোকানের বিজ্ঞাপন প্রচারের উদ্দেশ্যে ব্যানার আর ফেস্টুন লাগিয়ে রেখেছে। এদিকে এসব ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করার কারণ হিসেবে যেটা দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার সময় (যখন ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি) মহাসড়কের বিভিন্ন বাজার কেন্দ্রিক মাঝামাঝি স্থানে একটি বাস যাতায়াতের মত স্থান ফাঁকা রেখেছেন। যা দিয়ে পথচারীসহ মোটরসাইকেল, রিক্সা ও ছোট যান পারাপার হচ্ছে। আর এদিকে এদের পারাপারে সুযোগ দিতে সড়কে চলাচলরত বাস ট্রাকগুলোকে তাদের গতি কমিয়ে আনতে হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় চলমান গাড়িগুলো থেমে থাকে আর পথচারীরা পারাপার হচ্ছে। আবার অনেক সময় দেখা যায়, দ্রুত গতিতে আসা কিছু যান খুবজোরে ব্রেক কষেও পথচারীদের রক্ষা করতে পারেন না। এদিকে সড়কের মাঝে ফাঁকাস্থানগুলো আজো বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনের কর্তৃপক্ষ প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, মহাসড়কটিকে চারলেনে উন্নীত করতে গিয়ে সড়কের মাঝে অর্থাৎ চারলেন নির্ধারণ করার জন্য আইলেনের ব্যবহার করতে হয়েছে। যার কারণে ওই সময় পথচারীদের পারাপারের কোন মাধ্যম ছিল না। সেজন্য আমরা সড়কের বাজার কেন্দ্রিক মাঝামাঝি কিছু স্থানে আইলেন না দিয়ে ফাঁকা রেখেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে ফুটওভার ব্রিজ ও ইউটার্ন নির্মাণ করা হলেও ফাঁকা স্থানটি বন্ধ করতে গেলে বিভিন্ন রকমের বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি। কারা বাধা দিয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় বাজার কমিটি, বাজারের ব্যবসায়ীরা এবং পৌর কর্তৃপক্ষও অনুরোধ করেছেন। তাহলে কি ফাঁকাস্থানগুলো এভাবে থেকে যাবে? এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, না এভাবে থাকবে না। আমাদের প্রকল্পের ৯৯ শতাংশ কাজ পরিপূর্ণ হলে আমরা এই ফাঁকাস্থানগুলো বন্ধ করে দেব। এখন করছেন না কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন করতে গেলে স্থানীয়ভাবে বাধা আসতে পারে যার ফলে প্রকল্পের সময় ধীরগতি হতে পারে। শেষ সময়ে করলে তখন আর কোন সমস্যা থাকবে না। এ বিষয়ে বারইয়ারহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ’র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন পথচারীদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। তারা যাতে জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদে চলাচলের জন্য ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।