Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ শহরে সিএএবিরোধী বিক্ষোভ, কেরালার মসজিদে উড়ল ভারতীয় পতাকা সিএএ ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে ভারতব্যাপী মানব শৃঙ্খল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

ভারতে বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। দেশটিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের আবহে ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস একটু ভিন্ন স্বাদে পালিত হলো। সিএএ ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে সাধারণ মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে তৈরি করল মানবশৃঙ্খল। কেরালা থেকে কলকাতার মানব শৃঙ্খলের প্রচুর ছবি-ভিডিও এখন ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। কেরালায় সিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ আয়োজন করেছিল এই মানবশৃঙ্খলের। সেই শৃঙ্খলে যোগ দিয়েছিলেন সকল ধর্মের বিভিন্ন পেশার মানুষজন। একে অপরের হাত ধরে রবিবার তৈরি হয়েছিল ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মানবশৃঙ্খল। উত্তর কেরলের কাসারগড় থেকে দক্ষিণ কেরালার কালিইক্কাভিলা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল প্রজাতন্ত্র দিবসের শৃঙ্খল। আয়োজকদের দাবি, এই মানব শৃঙ্খলে অংশ নেন প্রায় ৬০-৭০ লাখ মানুষ। বিকাল ৪ টায় শুরু হয় এই মানব শৃঙ্খল। সেই শৃঙ্খলে ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনাও পাঠ করা হয়। এদিকে, শুধু কেরালা নয়। কলকাতাতেও আয়োজিত হয়েছিল মানবশৃঙ্খলের। গোলপার্ক থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে মানবশৃঙ্খল তৈরি করেছিলেন সকল বয়সের বিভিন্ন পেশার মানুষজন। এছাড়াও রাঁচী, বেঙ্গালুরুর মতো শহরেরও রাস্তায় নেমে প্রজাতন্ত্র দিবসে সিএএ-এর বিরোধিতা করেন ভারতবাসী। এবিপির অপর এক খবরে বলা হয়, ইসলাম বিরোধী বলে পরিচিত দল বিজেপি বরাবরই মসজিদ, মাদরাসা এবং মক্তবগুলোকে দেশদ্রোহীদের আখড়া, জঙ্গি তৈরির কারখানা, পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ বলে দাবি এসেছে। কিন্তু বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় উত্তাল ভারতে কেরালার ছবি বিজেপির পক্ষে বেশ অস্বস্তিকরই। রবিবার ভারতের ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবসে কেরালার ১০ হাজার মসজিদে উত্তোলন করা হয়েছে জাতীয় পতাকার। জাতীয় পতাকা তোলা হয় রাজ্যের বিভিন ধর্মীয় স্থানেও। ওয়াকফ বোর্ডের নির্দেশেই এই পদক্ষেপ বলে জানালেন কুট্টিয়ারি জামা মসজিদ কমিটির সচিব কে বশির। তিনি বলেন, ‘নাগরিক আইনের কারণে সংবিধানই তো এখন ভয়ঙ্কর জায়গায় রয়েছে।’ শুধু জাতীয় পতাকা উত্তোলনই নয়, সংবিধানের প্রথম পংক্তিও পতাকা উত্তোলনের পর পাঠ করেন মুসলিম নেতা ও সাধারণ মানুষ। এভাবেই সিএএ বিরোধী আন্দোলনে একজোট হচ্ছেন দেশবাসী বলে জানালেন তারা। এবিপি এ খবর জানায়। অপর দিকে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৩০টি শহরে বিক্ষোভ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভ‚ত মার্কিন নাগরিকরা। রোববার ভারতের ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবসে শান্তিপ‚র্ণ এই বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় ভারতের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে নতুন নাগরিকত্ব আইন বাতিলের আহবান জানান বিক্ষোভকারীরা। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন বিক্ষোভকারীরা। নিউইয়র্ক, শিকাগো, হাস্টন, আটলান্টা ও সান ফ্রান্সিসকো শহরে ভারতীয় কনস্যুলেটের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়া ওয়াশিংটন ডিসিকে ভারতীয় দ‚তাবাসের সামনেও শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘হিন্দু, মুসলিম, শিখ, ইসাই : আপস মে সাব ভাই ভাই স্লোগান দিতে দেখা যায়। সোমবার ভারতের সরকারি বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয় বংশোদ্ভ‚ত শত শত মার্কিন নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন। তবে এ সময় নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনেও অনেককে মিছিল করতে দেখা গেছে। নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুদের খোঁজ-খবর রাখে ভারত এবং সিএএ ভারতীয় নাগরিকদের কোনও ধরনের ক্ষতি করবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা। তবে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সিএএবিরোধীদের বিক্ষোভের আড়ালে ঢাকা পড়েন। কারণ সিএএবিরোধীদের সংখ্যা তাদের চেয়ে বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনবিরোধী ব্যানার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় তারা নাগরিকত্ব আইন বাতিল এবং প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকা প্রত্যাহারের দাবি জানান। তবে নাগরিকত্ব আইনবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে শিকাগো শহরে। এই শহরের প্রাণকেন্দ্রে কয়েক মাইল দীর্ঘ এক মানববন্ধন করেছেন নাগরিকত্ব আইনবিরোধী ভারতীয় নাগরিকরা। এবিপি, বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ