পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী আরবে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা প্রতারণার ফাঁদে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ক্ষুধা আর পুলিশের ভয়ে রাতে তাদের চোখে ঘুম নেই। কখন মিলবে আকামা সো নিশ্চয়তাও নেই। প্রতারক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক শুধু ইমোতে আশার বাণীই শোনাচ্ছে, আকামা হয়ে যাবে, হয়ে যাবে। সউদী প্রবাসীদের কেউ কেউ দেশের আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে টাকা নিয়ে খাবার কিনে খাচ্ছেন।
অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে মানব ও অর্থপাচারের অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঢাকায় সউদী দূতাবাসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সাথে উল্লেখিত রিক্রুটিং এজেন্সির যোগসাজশের অভিযোগ উঠছে।
সউদী আরবে বর্তমানে ২০ লক্ষাধিক নারী-পুরুষ কঠোর পরিশ্রম করে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছেন। জনশক্তি রফতানির সর্বোচ্চ দেশ সউদীতে প্রতারণা ও জালিয়াতি বন্ধ করতে না পারলে শ্রমবাজারে অশনিশঙ্কেত দেখা দিতে পারে। একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বিএমইটি সূত্র জানায়, গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাত লাখ ১৫৯ জন নারী পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ওই সময়ে শুধু সউদী আরবেই ৬২ হাজার ৫৭৮ জন নারী কর্মীসহ সর্বমোট তিন লাখ ৯৯ হাজার কর্মী চাকরি লাভ করেছেন। একই বছর দেশটি থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন তিন হাজার ৬৪৬ দশমিক ৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
জানা গেছে, রিক্রুটিং এজেন্সি আবিদ কর্পোরেশনের মালিক কালাম সউদী দূতাবাসের এক কর্মকর্তার সাথে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে এম এস আল মোজেল ইন্টারন্যাশনালের প্রসেসিং করে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের ১৫ কর্মীকে ৬/৭ মাস আগে সউদী পাঠায়। জনপ্রতি চার লাখ টাকা নিয়ে অদ্যাবধি এসব কর্মীকে আকামা ও চাকরির নিশ্চয়তা দেয়া হয়নি। এসব কর্মী রিয়াদ দাম্মাম, আল কাছিমসহ বিভিন্ন স্থানে কাজ ও বেতন ভাতা না পেয়ে অনাহার অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন।
মানিকগঞ্জের মো. আমজাদ, মো. ইমান আলী, ঢাকার সিদ্দিকুর রহমান, পাবনার রবিউল ইসলাম সরকার, মাসুদ রানা, বরিশালের কবির হোসেন, মাদারীপুরের আব্দুর রহিম হাওলাদার, শরিফুল তালুকদার ও নোয়াখালীর আহসান হাবিবসহ ১৫ কর্মী সউদীতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
গত শনিবার সউদী থেকে আমজাদ, ইমান আলী ও রবিউল ইসলাম সরকার টেলিফোনে ইনকিলাবকে বলেন, আবিদ কর্পোরেশনের কামাল কর্মীদের রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে আকামা ও নিয়মিত কাজ দিতে পারছে না। কর্মীদের মাসে ৭/৮ দিন কাজ করলে পুরো মাস বসে থাকতে হচ্ছে। সামান্য বেতন দেয়া হলেও খাবারের টাকাও হচ্ছে না। দুই মাস আগে কামাল আগে রিয়াদে এসে শিগগিরই আকামা হয়ে যাবে বলে দেশে ফিরে গা ঢাকা দিয়েছে।
আকামা না থাকায় দু’মাস আগে সউদী পুলিশ শরীয়তপুরের শাব্বির ও এনামুলকে ধরে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। আবিদ কর্পোরেশনের দালাল সাগর রিয়াদে অবস্থান করলেও এসব অসহায় কর্মীদের কাজ ও আকামা করে না দিয়ে পালিয়েছে। কুমিল্লার এক প্রবাসী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমিনের বাসায় আশ্রয় নিয়ে তারা কোনোভাবে দিন কাটাচ্ছেন।
প্রতারণার শিকার এসব প্রবাসী কর্মী ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস এন্ড ডিটেক্টিভ নিউজ সোসাইটির কাছে সহায়তা চেয়েছেন। উল্লেখিত সংস্থার জেনারেল সেক্রেটারি মাহবুব আলম খান গত ২২ জানুয়ারি বিএমইটির মহাপরিচালকের কাছে আবিদ কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রতারণার শিকার রবিউল ইসলাম, মাসুদরানা ও আমজাদ জড়িত আবিদ কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ তাদের আকামা ও কাজের নিশ্চয়তা প্রদানে উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকায় সউদী দূতাবাসের যে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যোগসাজসের তিনি গত শনিবার ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমি কাউকে সউদী আরবে পাঠাইনি। তবে একজনের অনুরোধে আবিদ কর্পোরেশনের কর্মীদের ভিসার ব্যাপারে সহযোগিতা করেছি মাত্র’।
এছাড়া বনানীর ফাতেমা ওভারসীজের মাধ্যমে বরগুনার খেজুরতলা গ্রামের আব্দুল লতিফ তালুকদারের ছেলে মো. খোকন গত আগস্টে চার লাখ টাকা দিয়ে সউদী আরবে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তাকে কোনো চাকরি এবং আকামাও দেয়া হয়নি। তার ভাই মো. রোকন জানান, ফাতেমা ওভারসীজের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ২৬ ডিসেম্বর ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস এন্ড ডিটেক্টিভ এর মাধ্যমে বিএমইটিতে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
বিএমইটি আগামীকাল সকাল ১১টায় ফাতেমা ওভারসীজের বিরুদ্ধে শুনানির তারিখ ধার্য্য করেছে। কর্মীদের সাথে প্রতারণার কথা অস্বীকার করে শনিবার আবিদ কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী কালাম বলেন, কারো কারো আকামা করে দিয়েছি এবং বাকিদেরও কাজ দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।