নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শেষ ওভারে দরকার ছিল ৫ রান। ক্রিজে শোয়েব মালিক। অপরপ্রান্তে মোহাম্মদ রিজওয়ান। বলহাতে সৌম্য সরকার। বাংলাদেশের মূল চার বোলার শফিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, আল আমিন হোসেন ও আমিনুল ইসলামের চার ওভারের কোটা শেষ হয়ে গেছে আগেই। তাই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে বিকল্প ছিলনা। তবে বিকল্প হিসেবে সৌম্যও ছিলেন না মন্দ। ইতিপূর্বে জাতীয় দলে বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছেন। এবারও হয়তো জন্ম দিতে পারতেন আরেকটি বিস্ময়ের। প্রথম দুই বলে তিন রান নিয়ে রিজওয়ানকে স্ট্রাইক দেন মালিক। ফিল্ডিংয়েও কিছুটা পরিবর্তন আনেন তিনি। ধারনা ছিল ¯েø বল করবেন। করলেনও তাই। কিন্তু মোহাম্মদ মিঠুনের ক্যাচ মিসের কারণে নাচকীয়তা শেষ পর্যন্ত গড়াতে পারেনি। উঁচুতে উঠা সহজ ক্যাচটি হাতছাড়া করার সুযোগে দু’রান নিয়ে ম্যাচটি চলে যায় পাকিস্তানের দখলে। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষ র্যাঙ্কিংয়ের দলটি। ক্রিকেট ইতিহাসে এরকম অনেক ম্যাচই শেষে ঘুরে যাওয়ার নজির রয়েছে। বাংলাদেশও হেরেছে এমন অনেক ম্যাচে। তবে গতকালের সুযোগটি হয়তো হাতছাড়া হয়ে গেল। এর মাধ্যমে হারেই শুরু হল পাকিস্তান মিশন।
এরআগে গতকাল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিয়ের সিদ্ধান্ত নেন মাহমুদউল্লাহ। ঐতিহাসিকভাবে লাহোরের রান বান্ধব উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে বড় রানই হয়ত প্রত্যাশা করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু উইকেটে মাঝে মাঝেই বল মন্থর হয়ে এল। তবু বুদ্ধি খাটিয়ে ব্যাট করলে চ্যালেঞ্জিং প‚ঁজিই আনা যেত এখানেও। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর নাঈম শেখ আউট হলেন না বটে, তবে আনতে পারলেন না ঝড়ো শুরু।
পাওয়ার প্লে কাজে লাগলো না, প্রথম ১০ ওভারও গেল জড়সড়। দুই ওপেনারের একজন করলেন ৪১ বলে ৪৩, আরেকজন ৩৪ বলে ৩৯। টি-টোয়েন্টির সঙ্গে বেশ বেমানান তাদের স্ট্রাইকরেট। পাওয়ার প্লেতে আনতে পারলেন মাত্র ৩৫ রান। ১০ ওভারে বিনা উইকেটে এলো কেবল ৬২! ডট বলে চাপ বাড়িয়ে বড় রানের আশা ওখানেই অনেকটা শেষ। ৩৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে তামিম ডট বল খেলেছেন ১৬টি, নাঈম শেখ তার ৪১ বলে ৪৩ রানের ইনিংসে রান আনতে পারেননি ১৮ বলে। দুজনে মিলেই খেলেছেন ৩৪টি ডট বল। এরমধ্যে পাওয়ার প্লেতেই তারা খেলেছেন ২২ ডট। বাকিরা কেউ নেমে ঝড় তুলে পুষিয়ে দিতে পারেননি। পুরো ইনিংসে ১২০ বলের মধ্যে বাংলাদেশ খেলল ৪৫টি ডট বল।
ওয়ানডাউনে নেমে লিটন দাস থিতু হতে হতেই রান আউট। আফিফ হোসেনেরও অবস্থাও একই, থিতু হতে হতে রান বাড়ানোর তাড়নায় বোল্ড। নেমেই মারতে হবে পরিস্থিতিতে সৌম্যেরওই একই দশা। তার আগে নিজের মন্থর ইনিংস তামিম থামিয়েছেন রান আউটে। দ্রæত রান না আনতে পারার হতাশা ঝেড়ে বেরুতে গিয়ে নাঈম ফেরেন ক্যাচ দিয়ে।
১৪ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থেকে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ কিছুটা ভদ্রস্থ করেছেন পরিস্থিতি। লাহোরের গাদ্দাফী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে এরচেয়ে কম রান করেনি আর কোন দল। ওই রান আটকাতে হলে বোলারদের হয়ে উঠতে হতো অতিমানবীয়। শফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেনরা ভাল বল করলেও মুস্তাফিজ থাকলেন ভীষণ খরুচে।
১৪২ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শফিউল ইসলাম দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বাবর আজমকে। তার ভেতরে ঢুকতে থাকা বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাবর। কিন্তু অভিষিক্ত আহসান আলি আর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ মিলে সামাল দেন পরিস্থিতি। দলে ফেরা হাফিজ অবশ্য থিতু হয়েও কাবু হয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমানের সেøায়ারে। বেশ কিছু আলগা বল দিয়ে মার খাওয়া মুস্তাফিজ হাফিজকে ফেরান গতির তারতম্যে।
এরপর শোয়েব মালিক এসে আহসানের সঙ্গে জুটি পোক্ত করেছেন একের পর এক সিঙ্গেলে। বাজে বল পেরে মেরেছেন বাউন্ডারি। লক্ষ্য ছিল একদম নাগালে, তাড়াহুড়ো করার কোন দরকারও হয়নি তাদের। আহসান ৩২ বলে ৩৬ করে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে ক্যাচ উঠিয়ে ফিরলে ভাঙে তাদের ৪৬ রানের জুটি। পরে ইফতেখার আহমেদের সঙ্গে ৩৬ রানের আরেক জুটিতে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান শোয়েব। দ্রুত খেলা শেষ করে দেওয়ার চিন্তায় শেষ দিকে আরও কিছু উইকেট পড়লেও ম্যাচ নিয়ে তৈরি হয়নি বড় কোন দোলাচল। একা হাতে ম্যাচ জেতানোর পুরস্কার উঠেছে শোয়েবের হাতেই। আজ একই মাঠে একই সময়ে সিরিজে টিকে থাকার লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।