Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্টিল সিলিন্ডার ব্যবহারে ক্যান্সারের ঝুঁকি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৪:৫৩ পিএম

গত কয়েক বছরে গৃহস্থালি, যানবাহন ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সকল প্রকার গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার মেয়াদোত্তীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ এবং নিম্নমানের সিলিন্ডার ব্যবহারেও বাড়ছে আতঙ্ক। এই আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তুলেছে এলপিজির স্টিল সিলিন্ডারের ব্যবহার। সম্প্রতি স্টিল সিলিন্ডার তৈরির প্রলেপ হিসেবে ব্যবহৃত জিঙ্ক ক্রোমেটে পাওয়া গিয়েছে ক্যান্সারসহ মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর উপাদান।

পালাদিন পেইন্টস্ অ্যান্ড কেমিক্যালস্ প্রাইভেট লিমিটেডের দায়ের করা এক আবেদনে দাবি করা হয়েছে, এলপিজি স্টিল সিলিন্ডার তৈরির প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত জিংক ক্রোমেট অত্যন্ত বিষাক্ত এবং এটি মানুষের মধ্যে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। গত ৬ জানুয়ারি ভারতীয় গণমাধ্যম আইপিটি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। এদিকে, মুম্বাই হাইকোর্ট গত সোমবার এলপিজি স্টিল সিলিন্ডারে ব্যবহৃত রাসায়নিক পর্দাথ জিঙ্ক ক্রোমেটের ব্যবহার বন্ধ করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে ভারতের কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে গৃহস্থালি, যানবাহন ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে এলপিজি স্টিল সিলিন্ডারের ব্যবহার তুলনামূলক বেশি। তাই সমস্যাটি সংশোধন করার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে স্টিল সিলিন্ডারে জিঙ্ক ক্রোমেট ব্যবহার নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। বিচারপতি এস সি ধর্মধিকারী এবং আর আই সাগলারের সমন্বয়ে একটি ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে এই আবেদনটি তাৎক্ষণিকভাবে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে।

২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশে রান্নার কাজে ব্যবহার শুরু হয় এলপিজির। পাইপলাইনে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধের পর কয়েক বছরে এটি দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সূত্রমতে, আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য দেশে এলপিজি সিলিন্ডারের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ। প্রতি বছর প্রায় ৭০-৮০ লাখ এলপিজি সিলিন্ডার রিফিল হয়। বাসাবাড়ি ছাড়াও হোটেল, রেস্তোরাঁ, অটোমোবাইল, ক্ষুদ্রশিল্পের জ্বালানি হিসেবে এলপি গ্যাস ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এগুলোর অধিকাংশই স্টিল সিলিন্ডার। বর্তমানে বাংলাদেশের ১৫টি শীর্ষস্থানীয় এলপিজি সংস্থা এই খাতে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এরমধ্যে ১২ কেজি ধারণ ক্ষমতার একটি আমদানিকৃত সিলিন্ডারের দাম ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তু সিলিন্ডার কিনতে গ্রাহকদের আগ্রহী করে তুলতে প্রারম্ভিক মূল্য ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্টিল সিলিন্ডারের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন দেশে কম্পোজিট ফাইবার সিলিন্ডার ব্যবহার শুরু করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশেও একটি কোম্পানি এই নতুন ধরণের সিলিন্ডার নিয়ে এসেছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই কম্পোজিট সিলিন্ডারে গ্লাস ফাইবার ও রেজিনের স্তর থাকে যা সিলিন্ডারকে মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টিল সিলিন্ডার থেকে কম্পোজিট সিলিন্ডার হালকা, বিস্ফোরণ প্রতিরোধক এবং এই সিলিন্ডারে জিঙ্ক ক্রোমেটের ব্যবহার নেই। তাই গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সিলিন্ডার ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ