পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে সড়কে নৈরাজ্য থামছে না। ভাঙ্গাচোরা সড়কে চলছে লক্কর-ঝক্কর যানবাহন। যত্রতত্র যাত্রী উঠানামার ফলে মোড়ে মোড়ে বিশৃঙ্খলা। নগরীতে নেই কোন কেন্দ্রীয় বাস, ট্রাক টার্মিনাল, সড়কেই রাখা হচ্ছে যানবাহন। বড় বাসের বদলে বৈধ-অবৈধ ছোট গাড়ির জোয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছে। বেপরোয়া বাসচালকদের একে অপরের সাথে পাল্লা দেওয়ার ঘটনায় বাড়ছে দুর্ঘটনা। বিশৃঙ্খল সড়কে তীব্র যানজটে অচলদশায় দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সড়কে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা, অপচয় হচ্ছে জ্বালানির। ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে একের পর এক নানা উদ্যোগেও সুফল মিলছে না।
এদিকে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে তোড়জোড়ের মধ্যে হাওয়া হয়েছে ৫০০ বাস। এতে করে গণপরিবহন সঙ্কট আরও তীব্রতর হয়েছে। চরমে উঠেছে জনদুর্ভোগ। রাস্তায় নেমে সীমাহীন দুর্ভোগের মুখোমুখি হচ্ছে নগরবাসী। বাস সঙ্কটকে পুঁজি করে অন্য পরিবহনে গলাকাটা ভাড়া আদায় হচ্ছে। তাতে স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী আর কর্মজীবী মানুষের আয়ের বিরাট অংশ যাতায়াত খাতে খরচ হয়ে যাচ্ছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহানগরীর জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে লোকসংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। ব্যক্তিগত গাড়ি আছে মাত্র কয়েক লাখ মানুষের। বাকি সবাই গণপরিবহনের উপর নির্ভরশীল। এদের বিশাল অংশ ইপিজেড ও বিভিন্ন কল-কারখানার শ্রমিক। নগরীর স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসার শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে কর্মজীবীরাও গণপরিবহনের উপর নির্ভরশীল। নানা কাজে প্রতিদিন নগরীর বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ নগরীতে আসছে। এতো বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য নেই পর্যাপ্ত গণপরিবহন।
এখনও পর্যন্ত এই মহানগরীতে সুষ্ঠু কোন গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। ভালমানের কোন বাস সার্ভিস নেই। গণপরিবহনের নামে নগরীতে যেসব বাস-মিনিবাস চলছে তার বেশিরভাগের নেই ফিটনেস। বাস সঙ্কটের কারণে নগরীতে ছোট যানবাহনের ছড়াছড়ি। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে রিকশার সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। তাতে সড়কে ছোট যানবাহনের জটলা বেড়েই চলেছে। এতে সড়কে বিশৃঙ্খলা কেবলই বাড়ছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীকে বলা হয় এক রাস্তার শহর। বিমানবন্দর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত মূল সড়কেও নেই শৃঙ্খলা। এই সড়কের কাটগড় অংশে চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। নগরীর আরও কয়েকটি বড় বড় সড়কের চলছে সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ। পাইপ লাইনের জন্য রাস্তা কাটছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। বিভিন্ন এলাকায় কর্ণফুলী গ্যাস, বিটিসিএলসহ নানা সংস্থার খোঁড়াখুড়ি চলছে। বেশিরভাগ সড়ক খানাখন্দে ভরা। মহানগরীর ফুটপাত বেদখল হয়ে গেছে। নিউমার্কেট এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে কিছুটা শৃঙ্খলা আনা গেলেও নগরীর অন্য এলাকার ফুটপাতের চিত্র উল্টো।
গত কয়েক বছরে নগরীতে বেশ কয়েকটি সড়ক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে একাধিক ফ্লাইওভার এবং ওভারপাস। তবে তার সুফলও মিলছে না দখল এবং বিশৃঙ্খলার কারণে। ফ্লাইওভারের নীচের সড়কের একাংশ দখল করে পার্কিং করা হচ্ছে। রাস্তা সম্প্রারণ হলেও দুইপাশে রাখা হয়েছে গাড়ি, দোকানের মালামাল আর নির্মাণ সামগ্রী।
প্রতিটি ব্যস্তমোড়ে যত্রতত্র সিটি সার্ভিসের বাস, মিনিবাস থামিয়ে চলছে যাত্রী উঠানামা। নগরীর প্রায় প্রতিটি সড়কের চিত্র অনুরূপ। দূরপাল্লার বাস কাউন্টার বড় বড় সড়কের পাশে। সেখানে যাত্রী উঠানামা করা হয়। ব্যস্ততম সড়কে নেই পর্যাপ্ত জেবরা ক্রসিং, পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা। নগরীর প্রতিটি প্রবেশ পথে চরম বিশৃঙ্খলা স্থায়ীরূপ নিয়েছে। ফেনীর লালপোল থেকে পৌনে এক ঘণ্টায় যে বাস সিটি গেইটে আসে, সিটি গেইট থেকে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে আসতে ঘণ্টা পার হয়ে যায়। একই অবস্থা নগরীর উত্তর প্রান্তের অক্সিজেন, কালুরঘাট সেতু এবং কর্ণফুলী সেতু এলাকায়ও। প্রবেশ পথের বিশৃঙ্খলা নগরীর যানজট বাড়িয়ে দিচ্ছে।
নগরীতে চলাচলকারী যানবাহন চালকদের মধ্যে নেই ট্রাফিক আইন মানার প্রবণতা। গণপরিবহন বিশেষ করে টেম্পু, মাহেন্দ্র ও টমটম চালকদের বেশিরভাগ শিশু-কিশোর। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঝে-মধ্যে অভিযান আর জরিমানা করেই দায়িত্ব শেষ করছে ট্রাফিক বিভাগ। নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের জন্য মাঠে নেমেও কোন সুফল মিলছে না। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে গণপরিবহন বিশেষ করে বাসে যাত্রী উঠানামার জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ‘এখানে সিটি বাস থামবে’ লেখা থাকলেও সেখানে কোন বাস দাঁড়াতে দেখা যায় না। যথারীতি আগের নিয়মেই ব্যস্তমোড়ের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়ে যাত্রী উঠানামা চলছে। নগরীর কয়েকটি সড়কে পার্কিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হলেও মানছেন না কেউ। মহানরীর বাইরে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কেও বেহাল দশা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে চলছে ছোট যানবাহন। তাতে বাড়ছে দুর্ঘটনা আর হতাহতের সংখ্যা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের-সিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, নগরীতে শৃঙ্খলা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরফলে অনেক এলাকায় যানজট সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। ধীরে ধীরে আরও সুফল মিলবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। নগরীতে রুটপারমিট আছে এমন ৫০০টি বাস চলছে না স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা বিআরটিএকে বলব এসব বাসের রুটপারমিট বাতিল করে নতুন বাস দেওয়ার জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।