Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশকে জনগণের পক্ষে কাজ করার আহ্বান ইশরাকের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২০, ৭:৩১ পিএম

পুলিশ প্রশাসনকে জনগণের পক্ষ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকা শহর হবে শান্তির জনপদ। এখানে কোন সন্ত্রাসীর স্থান হবে না।

আজ বুধবার (২২ জানুয়ারী) সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারণার ১৩তম দিনে পশ্চিম হাজারীবাগের ঝাউচর বাজার থেকে দিনের কর্মসূচী শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ইশরাক হোসেন বলেন, যেখানেই গিয়েছি সেখানেই ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার দেখেছি। ইনশাল্লাহ ১ ফেব্রুয়ারি আমরাই বিজয় উৎসব করব। এটি হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রাথমিক বিজয়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার বিজয়।

সকাল সাড়ে এগারটায় ঝাউচর বাজার থেকে আজকের গণসংযোগ কর্মসূচী শুরু করে তিনি। সেখান থেকে হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ হয়ে ৫৫, ৫৬, ৫৭ নং ওয়ার্ডের ইসলামবাগ ও চকবাজার হয়ে লালবাগ শাহী মসজিদে নামাজের বিরতি নেন। বিরতরি পর ২৯, ৩০, ২৭ ও ৩১ নং ওয়ের্ড ও নয়াবাজারে নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগ করেন।
এর আগে সকাল থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কামরাঙ্গীর চরের ঝাউচর বাজারে সমবেত হতে থাকেন। নেতাকর্মীরা খালেদা মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান ও ধানের শীষে ভোট চান। গণসংযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব-উন নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সফু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, মাহবুবুল হাসান পিংকু ভূইয়াসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক অংশ নেন।

প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য ইশরাক হোসেন-এর মতো লোক দরকার। আমরা বয়স্করা যা করতে পারিনি, তার হাত ধরে বাংলাদেশে নতুন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সূত্রপাত হবে। তার বাবা সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন আমার ছাত্র। খোকা বেঁচে থাকতে তার অধরা যে স্বপ্নগুলো ছিল, আমি ইশারাকের জন্য দোয়া করি সে যেন তার বাবার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারে।

তাবিথের ওপর হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ইশরাক হোসেন বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে গতকাল উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রচারণায় ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। ২৪ ঘন্টার বেশি হতে চললো, কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার হতে দেখলাম না।

তিনি পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের ওপর জাতীয় গুরুদায়িত্ব রয়েছে, সেটা পালন করুন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও আপনাদের যে সাংবিধানিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেটা নির্ভয়ে পালন করুন। জনগণের পক্ষ হয়ে কাজ করুন, জনগণ আপনাদের পাশে থাকবে।

অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদের হোসেন খোকার জ্যেষ্ঠ পুত্র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, আজকে এ শহরটাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এই ধ্বংসাত্মক অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের একটা পরিবর্তন দরকার। আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি নগরবাসির জন্য একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের অঙ্গীকার ছিল জনগণ হবে ক্ষমতার মালিক, জনগণ হবে রাষ্ট্রের মালিক। সেই অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে যারা ক্ষমতাসীন আছেন তারা এই দেশটাকে দখল করে রেখেছেন। ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারার বাইরের মানুষ তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মর্যাদাও পাচ্ছেন না। তাদের কথা বলার অধিকার নেই, বাক-স্বাধীনতা নেই, ভোটের অধিকার নেই। ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত একটা স্বাধীন দেশে এটা দীর্ঘদিন চলতে পারে না, আর আমরা এটা মানবো না। জনগণের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিতে পহেলা ফেব্রুয়ারি ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগে ও সভা-সমাবেশে বাঁধা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে ইশরাক হোসেন বলেন, “আজকেও এখানে আসার আগে আমাদের প্রচারনায় বাধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমি সংশিষ্টদের সতর্ক করে বলে দিতে চাই, আমি ইশরাক হোসেন একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। কোন ষড়যন্ত্র বাঁধা আমরা মানবো না। ঢাকা শহর হবে শান্তির জনপদ। এখানে কোন সন্ত্রাসীর স্থান হবে না। এই দেশটা আমাদের সবার। আমরা কারো জমিদারিত্ব মানবো না।”

তিনি বলেন, আমার কাছে মেয়র-মন্ত্রী-এমপি বড় বিষয় নয়। জনতার ভালবাসা নিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে আমার আমৃত্যু লড়াই। আমার বাবা সাদেক হোসেন খোকাও ছিলেন আপনাদের অতি পরিচিত; ছিলেন আপনাদের কাছের মানুষ।

আবেগ-আপ্লুত কন্ঠে ইশরাক বলেন, ‘আমি আপনাদেরই সন্তান, ঢাকার সন্তান। তাই সমস্ত ঢাকাবাসী আজকে এক হয়েছে। আমার বাবা বেঁচে নেই। বেঁচে থাকলে ঢাকাবাসিকে আমার পাশে দেখে উনি অবশ্যই খুশি হতেন, গর্বিত হতেন।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অভিভাবক খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দি। কারাগারের বাইরে থাকলে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার দেখে তিনিও খুশি হতেন।

এ সময় হাজারো কন্ঠে গগণবিদারী স্লোগান ওঠে- “মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই- খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, ইশরাক ভাই এগিয়ে চলো- আমরা আছি তোমার সাথে; ইশরাক ভাই ভয় নাই- রাজপথ ছাড়ি নাই”।

ইশরাক বলেন, “আমার বাবা অল্প বয়েসে গেরিলা বাহিনীর হয়ে জীবন বাজি রেখে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার যুদ্ধে সামিল হয়েছিলেন। বাবা সব সময় বলতেন- জনগন হবে বাংলাদেশের মালিক। এটাই ছিলো মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র। জনগণ হবে সকল ক্ষমতার মালিক এবং জনগণ ঠিক করবে কারা দেশ পরিচালনা করবে, কারা নগর পরিচালনা করবে। আজকে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হয়েছি শুধুমাত্র জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য।”



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইশরাক হোসেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ