Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী আশুড়ার বিলের হালচাল

মাহফুজুল হক আনার | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী আশুড়ার বিলের অস্তিত্ব ভ‚মিদস্যু-স্বার্থান্বেষী মহলের কারনে প্রশ্নবিদ্ধ। বিলটি রক্ষা করে দেশি-বিদেশি মাছের অভয়ারণ্য সৃষ্টির পাশাপাশি সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি করা বাঁধ রাতের অন্ধকারে কেটে ফেলা হয়েছে।
কাটা অংশ দিয়ে পানি বের হওয়ায় আশপাশের কয়েক হেক্টর জমির রবিশস্য নষ্ট হয়ে গেছে। নবাবগঞ্জ উপজেলার বিশাল শালবন সংলগ্ন দুই হাজার হেক্টরের বেশি জায়গায় বিলুপ্ত প্রায় বিলে পানি ধরে রাখার জন্য ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাবমাজড পাওয়ার ড্রাম তথা বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

দৃষ্টিনন্দিত কাঠের সেতু নির্মাণসহ সৌন্দর্যবর্ধন করে নামকরণ করা হয় শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান। কিছুদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসু সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি কতিপয় ভ‚মিদস্যু বিলের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করে আবাদি জমিতে পরিণত করে ভোগদখলের লক্ষ্যেই এই ঘৃণ্য কাজটি করেছেন। তবে দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলি সাদিকের ত্বরিত হস্তক্ষেপে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়দের প্রহরায় বাঁধ পুনঃনির্মাণে কাজ শুরু হয়েছে।

বিলের পানিতে ভাসতে থাকে সারি সারি শাপলা ফুল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বিলের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে আসে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপ্রিয় নারী-পুরুষ ছুটে আসেন আশুড়ার বিল এলাকায়। স্থানীয়দের মতে কয়েক বছর ধরে একটি চক্র অত্যন্ত সুকৌশলে আশুড়ার বিল এলাকায় আমন ও ইরি বোরো ধান আবাদ করতে থাকে।

সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনাজপুর জেলার অন্যতম এবং ঐতিহ্যবাহী আশুড়ার বিলের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। শুষ্ক মৌসুমে পানিশুন্য হয়ে পড়া বিলকে একটি চক্র অত্যন্ত সু-কৌশলে আবাদি জমিতে পরিণত করতে থাকে। সরকারি জায়গা হলেও তারা বিলের জায়গায় ধান আবাদ করে। বিলের পাশেই জেলার সবচেয়ে বড় শালবন।

অভিযোগ রয়েছে, সরকার দলীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় চক্রটি রাতারাতি পাওয়ার ড্রামের ক্ষতি করে বাঁধ কেটে দেয়। এতে আশপাশের কৃষকের কয়েক শ’ হেক্টর জমির রবিশস্য নষ্ট হয়ে যায়। বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে স্থায়ী বাসিন্দারা। তাৎক্ষনিকভাবে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন সংসদ সদস্য শিবলি সাদিক।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বাঁধ কেটে ফেলার কথা স্বীকার করে ইনকিলাব বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। থানায় দায়ের করা হয়েছে মামলা। বিরামপুর-নবাবগঞ্জ সার্কেল এএসপি মিথুন সরকার জানান, খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে র‌্যাব সদস্যরা। এলাকাবাসীদের সহায়তায় মাটির পাশাপাশি বালুর বস্তা ফেলে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পুনঃনির্মাণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিল সংলগ্ন বিশাল শালবনে দীর্ঘদিন ধরেই বিচরণ করছে দুস্কৃতিকারীরা। প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়। কিছুদিন আগে নবাবগঞ্জ এলাকা থেকে নৈশকোচে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে টহল পলিশ দুর্বৃত্তদের আটক করে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঐতিহ্যবাহী

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ