ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে
বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবির রিজভী। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় এলিফ্যান্ট রোডস্থ কফি হাউসের সামনে থেকে হাতিরপুল বাজার ও কাঁচা বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন তিনি। কফি হাউসের সামনে থেকে শুরু হয়ে হাতিরপুল বাজার ও কাঁচা বাজার এলাকার নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে
ধানের শীষ প্রতীকের ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করা হয়। এসময়
ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা গেছে। লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে
বিএনপি’র প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন,“হারানো গণতন্ত্র পুণ:রুদ্ধার এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি ঢাকা মহানগর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। দেশে গণতন্ত্রের ছিটেফোটাও অবশিষ্ট নেই, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস, নির্বাচন কমিশন সরকারের হুকুমের দাস। আর আইন শৃৃঙ্খলার চরম অবনতিতে মানুষ সবসময় আতঙ্ক ও ভীতির শিহরণের মধ্যে দিনযাপন করছে। মানুষের কথা বলার অধিকার, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক অধিকার অপহৃত হওয়ার কারণে মানুষকে ডানে-বায়ে কেউ কথা শুনে ফেলার ভয়ে সবসময় আতঙ্কিত থাকতে হয়। আওয়ামী লীগ দেশের ভোটারদের প্রতিপক্ষ ভাবে বলেই ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠী ভোটারদের ওপর প্রতিশোধ নিতে নানা কায়দায় জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে বিভিন্ন নীলনকশা অনুযায়ী কাজ করছে সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। ভোট গ্রহণে ইভিএম পদ্ধতি বিশ্বের প্রায় সবদেশেই এটা প্রত্যাখ্যাত, কিন্তু জালিয়াতির মেশিন ইভিএম এর মাধ্যমে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাসহ কমিশনের সদস্যদের তোড়জোড়ে প্রমান করে তারা আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে চায়।
রিজভী বলেন, আজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানেও কে এম নুরুল হুদা মার্কা নির্বাচন সকাল থেকে শুরু হয়েছে। সেখানে ১৭০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে সকাল ১১টার মধ্যে সবগুলো ভোটকেন্দ্র আওয়ামী-ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডার’রা দখল করে নিয়েছে এবং ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। মোবারক নামে একজন আওয়ামী কাউন্সিলর উক্ত নির্বাচনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এটিই হচ্ছে আওয়ামী নির্বাচনের সংস্কৃতি। সুতরাং আগামী ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কি পরিস্থিতি হবে তা নিয়ে জনগণ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন ও চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখার উদ্দেশ্যই হলো-তিনি যেন সরকারের অনাচার-অপকর্মের বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে রুখে দাঁড়াতে না পারেন। দেশের মানুষ জনগণের সবচেয়ে প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে ভয়াবহ দু:শাসন মোকাবেলা করে জননিন্দিত সরকারের পতন ঘটাতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রধান এবং একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তিলেতিলে নি;শেষ করতে চান। কিন্তু সরকার বুঝতে পারছে না যে, তাদের দিকে বিপদ ধেয়ে আসছে। আমি এই মূহুর্তে দেশনেত্রীকে নি:শর্ত মুক্তি দিতে জোর আহবান জানাচ্ছি।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে বিএনপি সমর্থিত দুই মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে মন্তব্য করে তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন-ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করতে হবে, ভোটারদেরকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার তথা ভোট প্রদানের সুযোগ দিতে হবে। সরকারদলীয় প্রার্থীদের সমর্থকদের হুমকি-ধামকি বন্ধ করতে হবে। ৩০ ডিসেম্বরের আগের রাতে ভোট ডাকাতির ব্যবস্থা আবারও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পুনরাবৃত্তি হলে জনগণ আপনাদেরকে কোনদিনই ক্ষমা করবে না।