নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গ্রুপপর্বের শেষ দুই ম্যাচে ফল যাইহোক সব দলই নিশ্চিতভাবেই যাচ্ছে প্লে-অফে। এই সমীকরণ সামনে রেখেই মাঠে নেমেছিল দুই ম্যাচের চারটি দল। দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রাজশাহী রয়্যালস। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকা প্লাটুনকে ৮ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান নিয়েই আসর শেষ করল খুলনা টাইগার্স। ঢাকাকে হারানোর মূল নায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এবারের বিপিএলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান ও প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই মাইলফল স্পর্শ করেন তিনি। এছাড়া বিপিএলের ইতিহাসে চতুর্থ বাংলাদেশী হিসেবে এই রেকর্ডে নাম লেখালেন তিনি। তার আগে মোহাম্মদ আশরাফুল, সাব্বির রহমান, তামিম ইকবাল করেছিলেন এই অর্জণ।
গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ঢাকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান মুশফিকুর রহিম। ইনিংসের শুরুতেই তামিম ও এনামুলকে ফিরিয়ে দেন ফ্রাইলিঙ্ক। এরপর জাকের আলিও টিকতে পারেননি। তবে জ্বলে উঠেছিলেন মুমিনুল হক। ৪টি ছয় ও ৭টি চারে ব্যক্তিগত ৯১ রানে ফেরেন তিনি। তবে ফেরার আগে দলকে তৈরি করে দিয়েছেন বড় রানের ভিত। তার সঙ্গী মেহেদী হাসান অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। ২০৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ঢাকা। ফ্রাইলিঙ্কের দুই উইকেট ছাড়াও শফিউল ও আমির একটি করে উইকেট পেয়েছেন। বিশাল রান তাড়ায় দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও শান্ত। ৭০ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে মিরাজের বিদায়ে। ৪৫ রানে থাকা অবস্থায় মেহেদীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বলের লাইনচ্যুত হন তিনি। তাতে বল আঘাত হানে তার স্ট্যাম্পে। এরপর ব্যাটিংয়ে নামা রাইলি রুশোকে নিয়ে এগিয়ে যান শান্ত। দলীয় ১৫১ রানে ব্যক্তিগত ২৩ রানে শাদাব খানের বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। তবে এই দিনটি ছিল আলাদা করে শান্তর। ৫৭ বলে আটটি চার ও সাতটি ছয়ে ১১৫ রানে অপরাজিত থেকে খুলনাকে এক নম্বর পজিশনে নিয়েই তবে ম্যাঠ ছেড়েছেন। নিজেকেও নিযে গেছেন সেই সাথে এক নম্বরেই। এবারের বিপিএলে তিনিই যে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান, যিনি ছুঁয়েছেন শতরানের মাইলফলক। মুশফিক ৯৬ ও ৯৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। মুমিনুল খেললেন ৯১ রানের ইনিংস। এছাড়া আশির ঘরেতো মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকারসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। কিন্তু অসাধ্য সাধন করলেন এক তরুণ। তিনি নামজুল হোসেন শান্ত।
এরআগে দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামকে ১৫৫ রানে আটকে রেখে রাজশাহী জিতেছে ১৪ বল বাকি রেখে। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে লিটন করেন ৪৮ বলে ৭৫ রান। এবারের টুর্নামেন্টে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে পার হলেন চারশ রান। ১৫৬ রান তাড়ায় রাজশাহীকে অনেকটা এগিয়ে দেয় লিটন ও আফিফ হোসেনের জুটি। শুরুতে দুজন পাল্লা দিয়ে ছুটেন। পরে চোখধাঁধানো সব শটে লিটন এগিয়ে যান অনেকটা। বরাবরের মতোই তার ব্যাটিং দর্শকদের চোখ আর মনকে দিয়েছে প্রশান্তি। দুজন ১০ ওভারে তুলে ফেলেন ৮৮ রান। এরপর আফিফ আউট হয়ে যান ৩১ বলে ৩২ করে। লিটন ও শোয়েব মালিক দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫০ রানের জুটি। দারুণ ব্যাটিংয়ের দিনে লিটনের আক্ষেপ থাকতে পারে ম্যাচ শেষ করে আসতে না পারায়। ১১ চার ও ১ ছক্কায় ৭৫ করে বিদায় নেন জিয়াউর রহমানের বলে। ২৫ বলে অপরাজিত ৪৩ রান করে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন শোয়েব মালিক।
ম্যাচের মাঝবিরতিতে যদিও চট্টগ্রামের রানকে বেশ চ্যালেঞ্জিংই মনে হচ্ছিল। ম‚ল কারণ, কন্ডিশন। বোলারদের জ্বলে ওঠার উপকরণ ছিল বেশ। রাজশাহীর বোলাররা যেমন শুরু থেকেই চেপে ধরে চট্টগ্রামকে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রামের ইনিংস শুরু করেন জুনায়েদ সিদ্দিকের সঙ্গে ক্রিস গেইল। কিন্তু এনে দিতে পারেননি তারা ঝড়ো শুরু। পাওয়ার প্লেতে উইকেট না পড়লেও রান আসে কেবল ৩৮। দুই ওপেনার পরে পুষিয়েও দিতে পারেননি শুরুর মন্থরতা। ২৩ বলে ২৩ করে জুনায়েদ সীমানায় ধরা পড়েন শোয়েব মালিকের ওভারে।
গেইল বিদায় নেন ২১ বলে ২৩ করে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ইমরুল কায়েসও পারেননি থিতু হয়ে ইনিংস লম্বা করতে (১৮ বলে ১৯)। মিডল অর্ডারে ব্যর্থ চাডউইক ওয়ালটন। শেষ তিন ওভার থেকে ৪৫ রান তোলে চট্টগ্রাম। ছাড়িয়ে যায় দেড়শ। কিন্তু লিটন-মালিকরা সেই রানকে বানিয়ে ছাড়লেন মামুলি।
সমান ১৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ পর্ব শেষ করেছে খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম। তবে নেট রান রেটের বিচারে এগিয়ে থেকে এক নম্বর অবস্থানে থেকেই শেষ করেছে খুলনা (০.৮৯৯)। এরপরে আছে রাজশাহী (০.৪২)। চট্টগ্রামের অবস্থান তিনে ((০.১২৯)। চারে অবস্থান করা ঢাকার অর্জণ ১৪ পয়েন্ট। যা তাকে টেবিলের চারে জায়গা করে দিয়েছে। আগামীকাল পয়েন্ট টেবিলের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা দুই দল লড়বে প্রথম কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে। আর তিন ও চারে থাকা দুই দল খেলবে এলিমিনেটরে। কোয়ালিফাইয়ারে জিতে গেলে সেই দল সরাসরি খেলবে ফাইনালে। আর হেরে যাওয়া দলের জন্যও থাকছে সুযোগ। এলিমিনেটরে জয়ী দলের বিপক্ষে জিতে ফাইনালে যেতে পারবে দলটি। আর এলিমিনেটরে যেই দল হারবে, সেই দল বিদায় নেবে আসর থেকে।
আগামীকাল এলিমিনেটরে চট্টগ্রাম মুখোমুখি হবে ঢাকার। আরেক ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে খুলনা লড়বে রাজশাহীর বিপক্ষে।
এলিমিনেটর : চট্টগ্রাম-ঢাকা, দুপুর দেড়টা
প্রথম কোয়ালিফাইয়ার: খুলনা-রাজশাহী, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা
ভেন্যু : শেরে বাংলা স্টেডিয়াম, মিরপুর
পয়েন্ট টেবিল
দল ম্যাচ জয় হার পয়েন্ট নে.রা.রে
খুলনা ১২ ৮ ৪ ১৬ ০.৯১২
রাজশাহী ১২ ৮ ৪ ১৬ ০.৪২
চট্টগ্রাম ১২ ৮ ৪ ১৬ ০.১২৯
ঢাকা ১২ ৭ ৫ ১৪ ০.৫৭২
কুমিল্লা ১২ ৫ ৭ ১০ -০.৩৩৫
রংপুর ১২ ৫ ৭ ১০ -০.৮২৬
সিলেট ১২ ১ ১১ ২ -০.৮২২
সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান
নাম ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক রেট ১০০/৫০
রাইলি রুশো (খুলনা) ১২ ৪৫৮ ৭১* ৫০.৮৮ ১৫৮.৪৭ ০/৪
মুশফিকুর রহিম (খুলনা) ১২ ৪৪৯ ৯৮* ৭৪.৮৩ ১৪৮.১৮ ০/৪
ডেভিড মালান (কুমিল্লা) ১১ ৪৪৪ ১০০* ৪৯.৩৩ ১৪৫.০৯ ১/৩
লিটন দাস (রাজশাহী) ১২ ৪২২ ৭৫ ৩৮.৩৬ ১৩৯.৭৩ ০/৩
ইমরুল কায়েস (চট্টগ্রাম) ১১ ৪০৫ ৬৭* ৫৭.৮৫ ১৩২.৭৮ ০/৪
সেরা পাঁচ বোলার
নাম ম্যাচ উইকেট সেরা গড় ইকো. ৪/৫
মুস্তাফিজুর রহমান (রংপুর) ১২ ২০ ৩/১০ ১৫.৬০ ৭.০১ ০/০
রবি ফ্রাইলিঙ্ক (খুলনা) ১২ ১৮ ৫/১৬ ১৮.৩৩ ৭.৩৩ ০/১
মেহেদী হাসান রানা (চট্টগ্রাম) ৮ ১৭ ৪/২৩ ১২.২৯ ৬.৯৬ ২/০
শহিদুল ইসলাম (খুলনা) ১১ ১৭ ৪/২৩ ২১.০৫ ৮.৭৩ ১/০
রুবেল হোসেন (চট্টগ্রাম) ১১ ১৬ ৩/১৭ ১৮.২৫ ৭.১৫ ০/০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।