পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামী পরশু থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব মুসল্লিম উম্মাহ ও তাবলীগ জামায়েতের ৫৫তম গণজমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। মুসলমানদের এ মহাসমাবেশে আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানে প্রায় ৮৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান আয়োজক কমিটি।
ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, ময়দানের প্রস্তুতি কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ১৬০ একর বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ইজতেমা ময়দানে বিশাল সামিয়ানা টানানোর কাজ চলছে দ্রæতগতিতে। এছাড়াও খিত্তাভিত্তিক চলছে মাইক বাঁধা ও বৈদ্যুতিক তার ও বাতি টানানোর কাজ। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তাবলীগ জামাতের অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ময়দানে এসেছেন। ময়দানের প্রস্তুতি কাজ শেষে আগামী শুক্রবার প্রথম পর্বে তারা অংশ নিবেন এবং তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শুনবেন। সেই সাথে ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে ১, ২, ৩ চিল্লায় বেরিয়ে যাবেন।
ইজতেমা সূত্রে জানা যায়, ইজতেমার দুই পর্বের প্রথম পর্ব আগামী পরশু আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে। মাঝখানে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপ।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইজতেমার প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষের দিকে। ইজতেমা সফল করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ময়দানে বালি ফেলা, ময়লা আর্বজনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বিভিন্ন উন্নয়ণ কাজ চলছে। মেয়র নিজে প্রতিদিন ময়দানের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল জানান, ইজতেমা ময়দানে আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের যাতে কোন ধরনের অসুবিধা না হয় তার জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি, নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ইজতেমা ময়দানে জেলাওয়ারি প্রথম ধাপে অংশ নেয়া মুসল্লিদের জন্য ৮৭টি খিত্তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া ময়দানে প্রবেশের জন্য ২০টি প্রবেশ পথ করা হচ্ছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কলকারখানার শ্রমিক-মালিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আল্লাহর বিশেষ রহমত হাসিলের আশায় বিশ্ব ইজতেমা মাঠে কাজ করছেন।
কেউ প্যান্ডেলের চট টানাচ্ছেন, কেউ খুঁটি পুতছেন, কেউ মাঠ পরিস্কার করছেন। ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দান প্রস্তুতির প্রায় শতকরা ৮৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ময়দানে মুসুল্লিদের কাতারবদ্ধ হওয়ার জন্যে পুরো ময়দানে দাগ কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
ইজতেমা ময়দানের উন্নয়ন কাজে অংশ নেয়া মুসল্লিরা জনান, ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির কাজ তাবলীগের মুরুব্বিরা তদারকি করছেন। সব কাজ করা হচ্ছে মোশাহারার (পরামর্শ) মাধ্যমে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রæপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে। বিদেশি মুসল্লিদের থাকার জন্য ইজতেমা মাঠের উত্তর-পশ্চিম পাশে বিশেষ কামরা তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মুসল্লিদের তুরাগ নদ পারাপারের জন্য ভাসমান সেতু (পল্টুন) স্থাপন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেড ওই ব্রিজ স্থাপনের কাজ করেছে।
এছাড়া ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের ওজু, গোসল, পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানি সরবরাহের জন্যে ইজতেমা ময়দানে গভীর নলক‚পের মাধ্যমে প্রতিদিন ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি গ্যালন সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। ওজু-গোসলের হাউজ ও টয়লেটসহ প্রয়োজনীয় স্থানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে।
ইজতেমা উপলক্ষে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত মহাসড়কের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, রাস্তার ওপর পার্কিং করা গাড়ি সরানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ইজতেমা মাঠের চারপাশের রাস্তার ধূলাবালি নিয়ন্ত্রণে পানি ছিটানোর জন্য গাজীপুর সিটি কপোরেশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের জন্য নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।