Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাইকো মামলার রায়ে খালেদা জিয়া নির্দোষ প্রমাণিত

জাতীয় প্রেসক্লাবে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

নাইকো দুর্নীতি মামলার রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নাইকোর দুর্নীতির মামলা সরকার করেছে। মূল মামলা কানাডাতে, সেখানে আন্তর্জাতিক সালিশ নিষ্পত্তিকারী ট্রাইব্যুনালের রায়ের তথ্য গোপন করে রেখেছে এই সরকার। ইতোমধ্যে এই মামলার রায় হয়েছে। এই মামলায় বলা হয়েছে যে, কোনো রকম দুর্নীতি হয়নি এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য যাদেরকে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিলো তারা সম্পূর্ণ নির্দোষ।

গতকাল (শনিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনটির মরহুম চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের স্মরণে এক নাগরিক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়াকে অসুস্থবস্থায় আটক রাখা হয়েছে। কিভাবে তার বিরুদ্ধে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। নাইকো দুর্নীতি মামলা করেছে সরকার। যার মূল মামলাটি হয়েছে কানাডায়। সেখানে আন্তর্জাতিক সালিশ নিষ্পত্তিকারী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিষয়টি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেলেটমেন্ট অব ইনভেস্টম্যান্ট ডিসপিউট যেন জনসমক্ষে প্রকাশ না করে এজন্য চাপ দিয়েছে সরকার। অভিযোগটা নিয়ে আমাদের সরকারও সেই ট্রাইব্যুনালে ছিলো। সেই ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছেন, নাইকো চুক্তি সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিমুক্ত এবং বেগম খালেদা জিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং যাদের আসামী করা হয়েছে তাদের দুর্নীতির কোনো প্রমাণ তারা পারেনি। এভাবে প্রায় প্রত্যেকটি মামলা গ্যাটকো মামলাসহ অন্যান্য মামলাগুলো মিথ্যা মামলা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাসমূহও মিথ্যা। বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে সরকার তার করায়াত্ব করেছে এবং তার একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য সে বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে। আজকে বাংলাদেশ বলতে যে রাষ্ট্র, এই রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, এখানে কোনো প্রতিষ্ঠানকে রাখা হয় নাই।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি পাবলিক ইউনির্ভাসিটিতে আজকে যাদেরকে ভাইস চ্যান্সলর নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তাদের একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড যদি দেখেন- সবচাইতে নিম্নমানের লোকগুলোকে নিয়ে এসে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তাদেরকে ভাইস চ্যান্সেলর করা হচ্ছে এবং সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ভিত্তিকে প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, একইভাবে বিচারক নিয়োগ এবং বিসিএসের নিয়োগ দেয়া হয়-সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করছে। অর্থনীতি সম্পূর্ণ ইম্পটি ভ্যাসেলের মতো হয়ে গেছে। বাইরে থেকে ঢোল উন্নয়ন উন্নয়ন কিন্তু ভেতরে একদম ফোকলা হয়ে গেছে।

বাংলাদেশে ‘পরিবারতন্ত্র’ চলছে অভিযোগ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, এখানে একদলীয় শুধু নয়, এক ব্যক্তিও হয়ে যাচ্ছে, একটা পরিবার হয়ে যাচ্ছে। পরিবারতন্ত্র চলছে এখন। তাঁকিয়ে দেখেন নমিনেশন কাকে দেয়, কারা আসে, কে কোথায় আসে, আপনার সংগঠনগুলোর প্রধান কারা হয়? তাহলে বুঝা যাবে যে, তারা আজকে পরিবারতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সংগ্রাম, এই লড়াই কোনো ছোট-খাটো লড়াই নয়, জোর লড়াই। এই লড়াইয়ে সবাইকে অংশ নিতে হবে।

নির্বাচনে অংশগ্রহণ আন্দোলনের অংশ আবারো উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেকে প্রশ্ন করছেন, আপনারা নির্বাচনে যাচ্ছেন কেনো, বিগত নির্বাচনের এই অবস্থার পরেও। আমরা বলেছি যে, নির্বাচনটাকে আমরা একটা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের কাছে যেতে চাই। আমরা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি হিসেবে আমাদেরকে নির্বাচন যেতে হবে এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাবো। সেই জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা এই সরকারকে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই তাদেরকে পরাজিত করব। এটাই আমাদের কাজ, সেই কাজটি আমরা করে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, এতে আমরা সফল হবো।

জিয়া পরিষদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর এম সলিমুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জিয়া পরিষদের প্রফেসর আব্দুল কুদ্দুস, প্রফেসর মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর লুৎফর রহমান, প্রফেসর মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, অ্যাড. মাহফুজুর রহমান ফরহাদ, প্রফেসর এমতাজ হোসেন, প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ, মরহুম কবীর মুরাদের স্ত্রী বেগম মমতাজ কবীরসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবী নেতারা।##



 

Show all comments
  • Khokon Chowdhuri ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৩ এএম says : 1
    খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খ্যেছেন এটা বারবার আদালতে প্রমাণ হয়েছে। তাই এটা নিয়ে আপনি যে দাবী করলেন তার সাথে একমত প্রকাশ করতে পারলাম না। একজন অপরাধীকে অপরাধী বলতে শিখুন।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Sohag Munshi ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৩ এএম says : 0
    খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়া যোগ্য আ আদালত সরকার কারণে জামিন দেয় না
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ রাবিব হাসান ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৪ এএম says : 0
    খালেদা জিয়া একজন দুর্নীতিবাজ এটা তাকে নিয়ে আপনারা যাই বলেন কোন লাভ নেই। আপনাদের কথা মানুষ কখনোই বিশ্বাস করে না। আর এটার প্রমাণ হলো আপনারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এতো আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন কিন্তু জনগণ তাতে সাড়া দিচ্ছে না।
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৫ এএম says : 0
    নির্দোষ হোক বা না হোক, আদালতের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ তোফায়েল হোসেন ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৫ এএম says : 0
    মরণের আগে তাকে জেল থেকে ছাড়া হবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্নীতি

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ