মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারত মনে করছে, আবারও সন্ত্রাসী অর্থায়ন নজরদারি সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশান টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) ‘কালো তালিকাভুক্তির’ প্রচেষ্টা থেকে পাকিস্তান ফসকে বেরিয়ে যাবে, যদিও ইসলামাবাদের উপর এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। সূত্র দ্য প্রিন্টকে এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, নয়াদিল্লি পাকিস্তানকে ‘গ্রে লিস্ট’ থেকে ‘বø্যাক লিস্টে’ নেয়ার যে চেষ্টা চালালেও সেটা কার্যকর করা কঠিন হবে। এ প্রক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে সেই একই ধরনের কৌশল নেবে ইসলামাবাদ, যেটা ২০১৯ সালের অক্টোবরে ব্যবহার করে কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা থেকে রক্ষা পেয়েছিল তারা। সূত্র জানিয়েছে, এবারও পাকিস্তানকে সমর্থন দেবে চীন, তুরস্ক ও মালয়েশিয়া।
এই আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্ট শীর্ষ এক কর্মকর্তা দ্য প্রিন্টকে বলেছেন, “পাকিস্তান এফএটিএফের সমস্ত আইন ও নীতি মানতে পারবে না। এক মাস মাত্র বাকি আছে এবং তারা খুব বেশি কিছু করতে পারেনি। কিন্তু তারা কালো তালিকাভুক্ত হবে না, কারণ তারা নিজেদের পক্ষে ভোটের ব্যবস্থা করতে পারবে”।
গত অক্টোবরে, প্যারিস-ভিত্তিক এফএটিএফ পাকিস্তানের প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা জারি করে যাতে পরবর্তী বৈঠকের আগেই সবগুলো শর্ত পূরণ করা হয়।
এফএটিএফ পাকিস্তানকে কী করতে বলেছে
এফএটিএফ নীতিমালা অনুযায়ী, ইসলামাবাদকে তাদের আর্থিক নেটওয়ার্ক সিস্টেম পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে হবে, তাদের মানি লন্ডারিং বিরোধী/সন্ত্রাসবাদকে অর্থায়ন বিরোধী ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। অন্যভাবে বললে তাদেরকে জামাত-উদ-দাওয়া এবং লশকরে তৈয়্যবার মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালাতে হবে।
এফএটিএফের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী মাসে প্যারিসে বৈঠকে বসবে এবং ইসলামাবাদ এ পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোর পর্যালোচনা করবে। ২০১৮ সালের জুন থেকে এই প্রক্রিয়া চলে আসছে। তবে সূত্র জানিয়েছে, এফএটিএফ চলতি মাসে বেইজিংয়ে একটা পর্যালোচনা বৈঠকে বসবে এবং প্রাথমিক পর্যালোচনার জন্য প্রস্তুতি নেবে।
‘কালোতালিকাভুক্তি অসম্ভব’
দ্য প্রিন্টের সাথে আলাপকালে বিশিষ্ট ক‚টনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব কানওয়াল সিবাল বলেন, “এই পর্যায়ে এসে এফএটিএফের পক্ষে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করা অসম্ভব হবে। সন্দেহ নেই যে, তারা আন্তর্জাতিক চাপে আছে এবং সে কারণে তারা কিছু পরিবর্তন আনবে কিন্তু তারা খুব বেশি কিছু করতে পারবে না, কারণ অতটা সময় হাতে নেই।
“আর কথিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর আর্থিক নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে সেটা পাকিস্তানের পরিস্থিতির আরও অবনতি করবে”।
সিবাল আরও বলেন, চীন, মালয়েশিয়া ও তুরস্ক আবারও পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াবে এবং তাদেরকে কালোতালিকাভুক্তির হাত থেকে রক্ষা করবে। তিনি আরও বলেন, এফএটিএফের প্রেসিডেন্সি যেহেতু এখন চীনের কাছে, তাই সেটাও এখানে সাহায্য করবে। বেইজিংয়ের সেন্ট্রাল ব্যাংকের আইনি বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল শিয়াংমিন লিউ বর্তমানে এফএটিএফের প্রেসিডেন্ট।
তবে, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর জেনারেল এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার টি.সি.এ রাঘবন বলেছেন, ‘পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং তাদের বিচার ব্যবস্থা সরকারকে আর্থিক রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক পুনর্গঠনের সুযোগ দেবে না’।
পাকিস্তানের বিচার ব্যবস্থা বিগত কয়েক মাস ধরে সেনাবাহিনীর সাথে এক ধরনের টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এফএটিএফ যদি পাকিস্তানকে কালোতালিকাভুক্ত করে, তাহলে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইসলামাবাদকে অর্থ সহায়তা দিতে পারবে না। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের এক রিপোর্টে আইএমএফ বলেছে যে, এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানে মূলধনের প্রবাহের উপর প্রভাব ফেলবে। গত বছর আইএমএফ কঠিন শর্তে পাকিস্তানকে ৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।