Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তুরস্ক লিবিয়ায় সেনা মোতায়েন করছে, সিসি ও ট্রাম্পের কড়া হুশিয়ারি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২০, ২:৪৮ পিএম
লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে সেখানে সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়ে বিল পাস হয়েছে তুর্কি পার্লামেন্টে। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে ৩২৫ ভোট পেয়ে অনুমোদিত হয় বিলটি। এর বিপক্ষে ভোট দেন ১৮৪ জন। লিবিয়ার জাতিসংঘ স্বীকৃত সরকারের মিত্র দেশ তুরস্ক। ত্রিপলি-ভিত্তিক ওই সরকার বর্তমানে দেশটির পূর্বাঞ্চলে জেনারেল খলিফা হাফতার নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
এদিকে, মার্কিন গণমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, তুর্কি পার্লামেন্টে বিল পাসের কয়েক ঘণ্টা পর লিবিয়া নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোয়ান। হোয়াইট হাউজের বরাত দিয়ে পলিটিকো জানিয়েছে, এরদোগানকে লিবিয়ায় হস্তক্ষেপের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, লিবিয়ায় বিদেশি হস্তক্ষেপ সেখানকার পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলবে।
এছাড়া, তুরস্কের সিদ্ধান্তের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মিসর। বলেছে, এতে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীলতায় বিরূপ প্রভাব পড়বে। উল্লেখ্য, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসির সরকার জেনারেল হাফতারের সমর্থক।
লিবিয়া সরকারের এক অনুরোধের পর গত সপ্তাহেই সেখানে সামরিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে পার্লামেন্টের অনুমোদন চাওয়ার ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবার বিরোধী দলের কোনো সমর্থন ছাড়াই বড় ব্যবধানে বিলটি পাস করাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তার নেতৃত্বাধীন একে পার্টি পার্লামেন্টে একচ্ছত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতার দখলদার।
পাস হওয়া বিল অনুসারে, লিবিয়া সরকারকে ‘নন-কমব্যাট’ বা সরাসরি শারীরিকভাবে লড়াইয়ে অংশ নেবে না এমন সামরিক সহায়তা প্রদান করবে তুরস্ক। এসব সহায়তার মধ্যে রয়েছে, উপদেষ্টা পাঠানো, হাফতারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সরকারি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য প্রশিক্ষক পাঠানো ইত্যাদি
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই বিলের মাধ্যমে লিবিয়ায় তুরস্কের অংশগ্রহণ আরো গভীর হবে। এতে হাফতার বাহিনীর সমর্থক দেশেগুলোর সঙ্গে তুরস্কের সরকারের উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে। মিসর, জর্ডান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও রাশিয়া হাফতারকে সমর্থন করে।
তুর্কি ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় বিলটি নিয়ে বলেন, ‘এর মেয়াদ থাকবে এক বছর।’ তবে এর আওতায় লিবিয়ায় কী পরিমাণ সামরিক সহায়তা প্রদান করা হবে সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি তিনি। তিনি জানান, এই বিল হাফতার বাহিনীকে একটি রাজনৈতিক সংকেত পাঠাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও প্রস্তুত।’
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু টুইট করেছেন, ‘বিলটি লিবিয়ায় আমাদের স্বার্থ রক্ষা এবং অঞ্চলটির শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’  
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে ৪২ বছর ধরে লিবিয়া শাসন করা মুয়াম্মর গাদ্দাফির পতন হয়। এরপর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ লেগে আছে। দেশটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই কোনো অংশের কাছেই। সর্বশেষ সংঘাতের শুরু হয় গত বছরের এপ্রিল থেকে। ত্রিপলি দখলের উদ্দেশ্যে সেখানে হামলা চালানো শুরু করে জেনারেল হাফতার। কিন্তু এখনো ব্যর্থ তিনি। সম্প্রতি রাজধানী দখলে চূড়ান্ত লড়াই শুরুর ঘোষনা দিয়েছেন জেনারেল। ত্রিপলি ভিত্তিক সরকারটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ফয়েজ আল-সিরাজ।
এদিকে, তুরস্কের বিলটির তীব্র সমালোচনা করেছে মিসর। লিবিয়ায় সেনা মোতায়েনের পরিণতি নিয়ে তুরস্ককে সতর্ক করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, লিবিয়ায় তুরস্কের সামরিক হস্তক্ষেপের পরিণতি নিয়ে সতর্ক করছে মিসর। এমন হস্তক্ষেপ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মিসরের প্রেসিডেন্ট সিরি লিবিয়ায়া বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠকও ডাকেন।

 



 

Show all comments
  • jack ali ৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:০২ পিএম says : 0
    May Allah destroy CC Ibless and Trump Ibless. Ameen
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:০২ পিএম says : 0
    May Allah destroy CC Ibless and Trump Ibless. Ameen
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ