পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একদিকে শীত আরেকদিকে অসুস্থতা নিয়েও অনশন ভাঙেননি শ্রমিকরা। গতকাল সকালে দাবি আদায়ে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে মাঠে নেমেছেন তারা। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাদের স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরাও। শ্রমিকরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যেতে অনড় রয়েছেন। খুলনা, রাজশাহী ও নরসিংদীতে চলমান অনশনে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অসুস্থ শ্রমিকের সংখ্যা।
খুলনা : অনশনে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অসুস্থ শ্রমিকের সংখ্যা। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ৫ম দিনেও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে শ্রমিকরা ছিলেন সোচ্চার।
“পিতার চাকুরির নিশ্চয়তা চাই; পিতার মজুরি কমিশন চাই; বাঁচার মতো বাঁচতে চাই; আমি শ্রমিকের সন্তান এটাই কি আমার অপরাধ; পিতা কেন অনশনে, জবাব চাই” এসব কথা কাগজে লিখে রাজপথে নেমে স্লোগান দিয়েছে খুলনায় আমরণ অনশনে অংশ নেয়া পাটকল শ্রমিকের সন্তানেরা।
বছরের প্রথমদিনই বই মিলেছে স্কুলে স্কুলে। তারপরও মনে আনন্দ নেই পাটকল শ্রমিকদের সন্তানদের মনে। তাই নতুন বই হাতে নিয়েই আন্দোলনস্থলে জড়ো হয়েছে পাটকল শ্রমিকদের সন্তানরা।
তারা বলছে, নতুন বই পেলেও এখনো স্কুলে ভর্তিসহ আরও অনেক খরচ বাকি রয়েছে। এছাড়া বই ছাড়াও আরও অনেক শিক্ষা উপকরণ কিনতে হবে। কিন্তু এত টাকা কোথায়? তাদের বাবার অনেকেই বছরে ঠিক মতো বেতন পান না। আবার অনেকের বেতন বকেয়াও পড়ে আছে।
এ অবস্থায় সন্তানদের শিক্ষার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন পাটকল শ্রমিকরা। অনেকের পক্ষেই শিক্ষাব্যয় বহন করা দুরূহ হয়ে উঠেছে। তাই ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন বই নিয়ে বাবাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে কোমলমতি শিশুরাও।
শ্রমিকদের আমরণ অনশনের কারণে খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে খালিশপুর, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, দৌলতপুর, আলিম ও ইস্টার্ন জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ আছে। এতে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দিনরাত এক করে প্রতিটি মিলের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলেছেন শ্রমিকরা। বাবার অনশন দেখে সন্তানরাও রাজপথে নেমে আসে।
শ্রমিক নেতারা জানান, বছরের শুরুতে অর্ধলাখ শ্রমিকের জীবন এখন অনিশ্চিত। পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে আছে সবাই। প্রতিশ্রুতি অনেক হয়েছে, এবার আর কোনো প্রতিশ্রুতি শুনতে চাই না। এবার শ্রমিকরা মজুরি কমিশন না নিয়ে ঘরে ফিরবে না। জীবনের বিনিময়ে হলেও মজুরি কমিশন মেনে নিতে হবে।
পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন বলেন, সাতটি পাটকলের প্রায় ২০ হাজার স্থায়ী শ্রমিক এ অনশনে অংশ নিয়েছেন। টানা অনশনে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা শরীরে স্যালাইন নিয়ে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। যতদিন দাবি না মানা হবে, ততদিন অনশন চলবে।
রাজশাহী : রাজশাহীতে প্রচ- শীতে অনশনরত শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রাজশাহীর চার পাটকল শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ শ্রমিকরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা নওশাদ আলী, এমরান আলী, নজরুল ইসলাম ও মো. ইসলাম। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে।
দাবি আদায়ে গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর থেকে প্রথম দফায় আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। এর পর ১৪ ডিসেম্বর থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন না করায় শ্রমিকরা আবার আন্দোলনে নেমেছেন।
রাজশাহী পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জিল্লুর রহমান জানান, তীব্র শীত উপেক্ষা করেই তারা কর্মসূচি পালন করছেন। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তার পরও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না। অবিলম্বে তাদের নায়্যদাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান।
নরসিংদী : পাঁচদিনের আন্দোলনে বেশ কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে হারুনুর রশিদ ও দুলাল মিয়া নামে দুই শ্রমিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ক্রমান্নয়ে দুর্বল হয়ে পড়া শ্রমিকদের। শ্রমিক আন্দোলনের ফলে মিলের সকল ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
ইউএমসি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন চলছে। আমরণ অনশনে আমাদের বেশ কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রশাসন বা সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো খোঁজখবর নেয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।