পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশজুড়ে মধ্য-পৌষে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ‘শীত নামানো’ অকাল বর্ষণে পাল্টে গেছে শীত ঋতু। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া পৌষের বৃষ্টিপাত গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোথাও মাঝারি কোথাও হালকা ঝিরি ঝিরি গুঁড়ি গুঁড়ি ঝরেছে। আকাশ মেঘে ঢাকা। আজও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সারাদেশে বর্ষণের সাথে বেড়ে গেছে শীতের কাঁপন। উত্তরাঞ্চল ছাড়াও আরো অনেক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে শৈত্যপ্রবাহ।
কয়েকদিন বিরতি দিয়ে এ সপ্তাহের শেষ দিকে আবারও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। এভাবে কয়েক দফা বর্ষণের পর আকাশে মেঘ কেটে গেলেই আসছে জানুয়ারির প্রথম দুই সপ্তাহে তীব্র থেকে তীব্রতর শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে প্রায় সারাদেশে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গতকাল রংপুর ছাড়া সবক’টি বিভাগে বৃষ্টিপাত হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বর্ষণ ভোলায় ১৮ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ৫, টাঙ্গাইলে ৬, গোপালগঞ্জে ৯, চট্টগ্রামে ১০, সীতাকু-ে ১৪, রাঙ্গামাটিতে ৬, কুমিল্লায় ৮, হাতিয়ায় ৮, নোয়াখালীতে ৪, ময়মনসিংহে ১, শ্রীমঙ্গলে ৪, ঈশ্বরদীতে ৬, খুলনায় ১৪, যশোরে ৯, বরিশালে ১২ মি.মি.সহ দেশের বেশিরভাগ জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বর্তমানে দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারীসহ দেশের উত্তর জনপদের ওপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তা অব্যাহত থাকতে পারে। তাপমাত্রার পারদ আরও হ্রাস পেয়ে বেড়ে যেতে পারে শীতের তীব্রতা। বিস্তৃত হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। টানা ৪ দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। তবে গতকাল পারদ ছিল অন্যদিনের চেয়ে ঊর্ধ্বে (৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি ছিল। কিন্তু কখনও কুয়াশা, বৃষ্টিপাত, কনকনে হিমেল হাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে প্রায় সর্বত্র। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পোহাচ্ছে অগণিত হতদরিদ্র মানুষ। দিনে এনে দিনে খাওয়া লোকজনের আয় রোজগারে ভাটা পড়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৮.৮ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ১৮.৭ এবং সর্বনিম্ন ১৫.২ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে ২৬.৩ এবং ১৩.৫ ডিগ্রি সে.।
এদিকে গত দু’দিনে মেঘ-বৃষ্টি-কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া মিলিয়ে বৈরী আবহাওয়ায় হাসপাতাল ক্লিনিকে প্রতিদিনই বেড়েছে ঠা-াজনিত রোগীর ভিড়। সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ভাইরাস জ্বর, ডায়রিয়া, চর্মরোগে আক্রান্ত বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগ দুঃসহ। শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যেই গেল দু’দিনের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতে অসহ্য ধুলোবালি দূষণের যন্ত্রণা থেকে আপাতত পরিত্রাণ পেয়েছে নগরবাসী। তবে বৃষ্টির সাথেই সড়ক রাস্তাঘাট কাদা-পানি ময়লায় সয়লাব হয়ে গেছে।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আজ রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
উত্তর জনপদের পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারী অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এমনকি শৈত্যপ্রবাহ বিস্তার লাভ করতে পারে। আজ সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্তমানে উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক একটি লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
নোয়াখালী : বৃহস্পতি ও শুক্রবার কুয়শার সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এবং উত্তরদিক থেকে প্রবাহিত বাতাসে শীত জেঁকে বসেছে। বৃহস্পতিবার রাতে হালকা বৃষ্টির সাথে থেমে থেমে বাতাস প্রবাহিত হয়। শুক্রবার সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি ও তীব্র শীতে নাকাল জনজীবন। অধিকাংশ সড়ক ফাঁকা রয়েছে। প্রয়োজন ব্যতীত লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। মেঘনায় নৌযান চলাচল হ্রাস পেয়েছে।
নীলফামারী : হাড় কাঁপানো শীত আর হিমেল বাতাসে কাহিল হয়ে পড়েছে এ জনপদের দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষজন। শীতবস্ত্রের অভাবে দুপুর পর্যন্ত তারা খড়কুটে জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তীব্র শীতে মানুষজনের পাশাপাশি গবাদি পশুও জবুথুব হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে শুক্রবার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ডিগ্রি সেলসিয়াসে। টানা ১০দিন ধরে মৃদু ও মাঝারী শৈত্যপ্রবাহে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। বিপাকে পড়েছ দিনমজুর ও দুস্থরা।
বিকেল থেকে ভোর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে পুরো এলাকা। দুপুরে কুয়াশার সাথে লুকোচুরী করে সূর্য। কয়েকদিনের তীব্র শীত ও হিমেল ঠান্ডা হাওয়ার কারণে মানুষের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগে পড়েছে গবাদিপশুও। এ পর্যন্ত জেলায় সহ¯্রাধিক ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগীর খামারে প্রায় দেড় শতাধিক মুরগী মারা গেছে বলে খামারীরা জানিয়েছেন। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় আলুর ক্ষেত আর বোরো বীজতলায় লেট ব্লাইট রোগের প্রার্দুরভাবের শংকায় রয়েছেন চাষীরা।
ঝালকাঠি : প্রচন্ড শীতে কাঁপছে দক্ষিণের জনপদ ঝালকাঠি। শীতের তীব্রতার সাথে বইছে ঠান্ডা বাতাস। এদিকে ঘন কুয়াশা পাশাপাশি বৃষ্টিও হচ্ছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সকাল থেকে সূর্য্যরে মুখ দেখা যায় না। ফলে দিনের বেলায়ও সড়ক মহাসড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনগুলোকে। ঘণকুয়াশায় ব্যহত হচ্ছে নৌযান চলাচলও। ঢাকা রুটের লঞ্চ ও গাড়িগুলো কুয়াশার কারনে অনেক দেরিতে পৌছাচ্ছে। প্রচন্ড শীতে চরম দুর্ভোগে পরেছে শ্রমজীবী মানুষ। প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাস ও বৃষ্টিতে আমন ধান ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা।
গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে দফায় দফায় বৃষ্টিতে শীতে তীব্রতা বেড়েছে। শুক্রবার তাপমাত্রা আরো কমেছে। গোপালগঞ্জের সর্বনি¤œতাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় এ জেলায় ৮.৯ মি.লি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর শীতে জেঁকে বসতে শুরু করে। কমেতে শুরু করে তাপমাত্রা। গতকাল বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অফিস ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্র রেকর্ড করে।
তেঁতুলিয়া ( পঞ্চগড়) : পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা হিমালয় ঘেষা হওয়ায় জেঁকে বসেছে শীত। হিমালয়ের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারনে খেটে খাওয়া মানুষ বাড়ী থেকে বের হতে পাড়ছেনা। ফলে নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছে চরম বিপাকে।
হিমেল বাতাস বইছে ফলে ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকেই তবে সাধারন মানুষরা যারা জীবিকার তাগিদে বাইরে কাজ করেন তারা এই কনকনে শীতে পরেছে চরম দূর্ভোগে। তবুও থেমে নেই কাজ না করলে পেটের ভাত হবে না। এখন পর্যন্ত কোন সরকারি দেয়া শীতের কম্বল তাদের হাতে পৌছায় নাই বলে জানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।