Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভেজালে বীজে প্রতারিত হচ্ছেন কৃষক

এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৪ এএম

কুষ্টিয়ায় শহরের সরকারি কলেজ মোড়ে ১০টি বীজ বিক্রয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও শহর, শহরতলী, উপজেলা শহর এমনকি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে শত শত বীজ বিক্রয় প্রতিষ্ঠান। এসব বীজ বিক্রয় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে অধিত মুনাফা এবং কৃষকদের প্রতারিত করতে। তবে সব বীজই ভেজাল একথা বলা মুশকিল। কেননা ভেজাল বীজ সনাক্ত করণের যন্ত্র নেই কৃষকের হাতে। নেই বীজ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের হাতেও। বীজ বিক্রেতাদের ভাষ্যমতে বীজ বিক্রি হয় বিশ্বাসের ওপর। বিশ্বাস করলে বীজ নিবেন না করলে নিবেন না। কিন্তু কৃষক বেচারাতো সব সময়ই ভাল বীজের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছে। কেউ একটু চটকদার প্রচারনা এবং মন ভোলানো কথা বললেই হলো। অমনি কৃষক বেচারা যা ধরিয়ে দেয়া যায় তাই গিলে ফেলে। তবে বীজের মান বোঝা যায় যখন কৃষক কাঙ্খিত ফলন না পায়। অনেক সময় কৃষক বুঝতেও পারে না তার ব্যবহৃত বীজটি ভেজাল ছিল।
কেননা এ সংক্রান্ত কোন প্রকার প্রশ্ন তোলা হলে তার দিকে ছুড়ে দেয়া হবে হাজারো প্রশ্নের তীর। কিভাবে জমি চাষ করেছিলেন, কখন সেচ দিয়ে ছিলেন, কি কি ধরনের সার দিয়ে ছিলেন, কতবার নিড়ানী দিয়েছিলেন, ক্ষেতে ঠিক মতো কীটনাশক দেয়া হয়েছিল কিনা। এমন হাজারো প্রশ্ন এড়িয়ে চলতে কৃষক আর কোন প্রকার অভিযোগ তুলতে সাহস পায় না। গত রবি মৌসুমে এমন প্রশ্নের শিকার হয়েছিলেন কুষ্টিয়া এবং চুয়াডাঙ্গার ভূট্টা চাষীরা। কৃষকের ক্ষেতে উৎপাদিত ধান এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা মন। ওই ধানই বাজার থেকে কিনে ঝেড়া মুছে হালকা তালে কিছু পাউডার আকৃতির উপাদানের প্রলেপ মিশিয়ে প্যাকেট বন্দি করে আবার বাজারে ছাড়া হচ্ছে বীজ হিসেবে। প্রতি ১০ কেজি বীজের প্যাকেট বিক্রি করা হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা। কৃষক বেচারা বুঝতেও পারছে না তার ক্ষেতের ধানই বীজ হিসেবে তার কাছে দ্বিগুন মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মোড়ের জসীম বীজ ভান্ডার, কুষ্টিয়া সীড স্টোর, শাহিন বীজ ভান্ডার, চাঁদনী বীজ ঘর, সাগর সীড স্টোর, মামুন বীজ ঘর, পল্লী বীজ ভান্ডার, লাকী বীজ ভান্ডার ও কৃষি বীজাগার।এখানকার সবকটি বীজের দোকানেই দেখা গেছে গুটি স্বর্ণার ১০ কেজি প্যাকেট বীজ। তবে প্যাকেটের গায়ে উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, আমদানী কারক প্রতিষ্ঠানের কোন নাম নেই। নেই বিএসটিআই’র সীল কিংবা বীজ প্রত্যায়ন এজেন্সির সিল।
এজেন্সির লাইসেন্স থাকলে যে কেউ এভাবে প্যাকেটজাত ধান বীজ হিসেবে বিক্রি করতে পারেন। কেবল কুষ্টিয়া শহরে নয় এভাবে প্রতারনার ফাঁদ পেতে বসে আছে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বীজ ব্যবসায়ীরা। প্রতারনার হাত থেকে কৃষকদের রক্ষায় অভিযান জরুরি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ