পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্রমেই বাড়ছে তাপমাত্রা। তবে ঘন কুয়াশা ও বাতাসে ধুলোবালি-ধোঁয়ায় ব্যাপক দূষণের কারণে মাটিতে রোদের তেজ বা স্বাভাবিক উষ্ণতা ব্যাহত হচ্ছে। এ সপ্তাহে আগামী বুধ-বৃহস্পতিবার নাগাদ বিক্ষিপ্তভাবে দেশের কয়েক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গুঁড়িবৃষ্টির পরই ক্রমশ: তাপমাত্রার পারদ নিচের দিকে নেমে যেতে পারে। সঙ্গে বিস্তৃত হতে পারে কুয়াশা। হিমালয়, সুদূর উত্তুরের সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে হিমেল বায়ুমালা ধেয়ে আসতে পারে। সেই সাথে ঊর্দ্ধাকাশের শীতল জেটবায়ু নিচের দিকে প্রবল বেগে নামলে আর্দ্র বাতাসে বেড়ে যাবে হাঁড় কাঁপানো শীতের কামড়।
গতকাল (রোববার) আন্তর্জাতিক আবহাওয়া-জলবায়ু নেটওয়ার্ক এবং আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্রে এ পূর্বাভাস মিলেছে। এসব পূর্বাভাস বাস্তবেই যদি ফলে তাহলে চলতি পৌষ মাসেই অর্থাৎ মাঘের আগে প্রচন্ড শীতের কবলে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাছাড়া আসছে জানুয়ারি-২০২০ সালের মাঝামাঝির দিকেও আরেক দফায় তীব্র আকারে শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে।
প্রসঙ্গত: চলতি ২০১৯ সাল এমনিতেই চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ায় কেটে যাচ্ছে। অতিমাত্রায় তাপদাহ ও ধারাবাহিক উষ্ণতা, হঠাৎ অতিবৃষ্টি, পাহাড়ধস, পানিবদ্ধতা, বন্যা, নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাত, কালবৈশাখী ও বজ্রঝড়ের আধিক্য, অনাবৃষ্টি ও খরা পরিস্থিতি ইত্যাদি ছিল বিদায়মান বর্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাকের ক্ষেত্রে আবহাওয়াগত বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায়ও ২০১৯-এর আবহাওয়া ছিল বৈরী রুদ্র প্রকৃতির।
আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানা গেছে, ডিসেম্বরের শেষে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১ থেকে ২টি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের সময়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে পারদ নামতে পারে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সে.। অন্যদিকে আসছে জানুয়ারি মাসে দেশে ২ থেকে ৩টি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের এবং ২টি তীব্র রূপে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তীব্র বা প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহের সময়ে পারদ নেমে যেতে পারে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সে.।
তাপমাত্রা বাড়ছে, ধূলিযুক্ত কুয়াশা
আগের চার-পাঁচ দিনের তুলনায় গতকাল দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৯ এবং সর্বোচ্চ টেকনাফে ২৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বায়ুমন্লেড বিশেষ করে ভূপৃষ্ঠের দিকে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার সাথে ধুলোবালি ও ধোঁয়ার ব্যাপক মিশ্রণের কারণে মাটির দিকে সূর্যের তাপ বা রোদের তেজ যথেষ্ঠ মাত্রায় পড়েনি। তাছাড়া উত্তুরের কনকনে হাওয়া বয়ে যাচ্ছে দেশজুড়ে।
এ অবস্থায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান খুব বেশি কমেনি। যেমন- গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ১৬.৭ এবং ১৩ ডিগ্রি সে.। অর্থাৎ মাত্র ৩.৭ ডিগ্রির ফারাক। তেমনি দেশের সর্ব-উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৫ এবং সর্বনিম্ন ৯.৫ ডিগ্রি সে.। রংপুরে যথাক্রমে ১৬.১ এবং ১১.৮ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ১৭.৮ এবং ৯.৫ ডিগ্রি সে.। সৈকত শহর কক্সবাজারেও পারদ নেমে গেছে ১৩.৫ ডিগ্রিতে।
এদিকে বাংলাদেশের উপকূলভাগের কাছাকাছি উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে আসা বায়ু প্রবাহ, বিক্ষিপ্ত মেঘ ও বাতাসে জলীয়বাষ্পের অত্যধিক উপস্থিতির কারণেও ঠান্ডা বেশিহারে অনুভূত হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার ছিল ৮৫ শতাংশ। ধূলোবালি ও ধোঁয়ায় দূষিত ঘন কুয়াশার সঙ্গে অধিক মাত্রায় আর্দ্র বাতাসে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে কনকনে হিমেল হাওয়া বইছে। এখন বাতাসে জলীয়বাষ্প বা আর্দ্রতার হার যতটা কম থাকার কথা তার চেয়ে বেশিই রয়েছে। এর ফলে আর্দ্র বাতাসের কনকনে ঠান্ডা মানুষ নানামুখী দুর্ভোগে পড়েছে।
সর্বশেষ আবহাওয়া ও পূর্বাভাস
গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মাঝরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়বে। রাজশাহী, পাবনা, যশোর, তেঁতুলিয়া ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু এলাকায় অব্যাহত থাকতে পারে। আজ সারাদেশের রাত ও দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সপ্তাহের পূর্বাভাস
চলতি সপ্তাহের (২২ থেকে ৩১ ডিসেম্বর) কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের কৃষি আবহাওয়া মহাশাখার উপ-পরিচালক কাওসার পারভীন জানান, এ সপ্তাহে দৈনিক উজ্জ্বল সূর্য কিরণকাল সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টার মধ্যে থাকতে পারে। আগামী সপ্তাহের বাষ্পীভবনের দৈনিক গড় ২ থেকে ৩ মিলিমিটার থাকতে পারে।
এ সময়ে সারাদেশে কিছু কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টিপাত (৪ থেকে ১০ মি.মি.) কিংবা গুঁড়িবৃষ্টি হতে পারে। এ সপ্তাহে সারাদেশে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময়ের প্রথমদিকে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে শেষের দিকে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।