গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা : গাজীপুরে এসপি হারুনের তৎপরতায় আবার গর্তে ঢুকছে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যুরা। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়েও এখন আর কেউ অপকর্ম করার সাহস পাচ্ছে না। মাঝে বেশ কিছু দিন এসপি হারুনের অনুপস্থিতিতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা। তখন হঠাৎ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল জেলাবাসী। বিশেষ করে মহানগরীর গাছা অঞ্চলে ত্রাসের রাজস্ব কায়েম হয়েছিল। সন্ত্রাসীদের ভয়ে তটস্থ সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। এসপি হারুন-অর-রশিদের পুনরায় যোগদানের ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে এখন স্বস্তি ফিরে এসছে।
এদিকে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলার পুলিশ সদস্যদেরকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন এসপি হারুন। তার নির্দেশে সড়ক মহাসড়ক যানজটমুক্ত ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ। এ উপলক্ষে সম্প্রতি গাজীপুর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রস্তুতি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বিপিএম,পিপিএম (বার) ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নির্ভিঘœ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলার বিভিন্ন স্তরের পুলিশ কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনা দেন। পুলিশ সুপার জানান, সড়ক মহাসড়কগুলো যানজটমুক্ত রাখতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রায় ১১শ’ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি আরো দেড় সহস্রাধিক কমিউনিটি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ইতিমধ্যে মহাসড়ক দখলমুক্ত রাখতে হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাশাপাশি মহাসড়কে পুলিশের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে গাজীপুরকে একটি মডেল জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এসপি হারুন আরো জানান, উত্তর বঙ্গের ১৬টি ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৬টি মোট ২২টি জেলার লাখ লাখ মানুষ গাজীপুর জেলার উপর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন।
এসপি হারুন আরো বলেন, পুলিশ বাহিনীকে বর্তমান সরকার জনগনের দাড়প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে বাহিনী প্রধান আইজিপি মহোদয় কমিউিনিটি পুলিশ গঠনে সর্বোচ্চ জোড় দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশনানুয়ী আমি গাজীপুর জেলায় দুইবারই যোগদানের সাথে সাথে এই কমিউনিটি পুলিশিং এর ওপর বেশি মনোনীবেশ করি। ফলে পুলিশের চেয়ে কমিউিনিটি পুলিশ সদস্য বেশি মোতায়েন করা সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদে যাতায়াত অধিকতর সহজ হবে।
অপরদিকে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে গাজীপুর জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি স্থানীয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যুদের কঠোর হাতে দমন করে জেলার আইন-শৃখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। গত ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জেলার শ্রীপুর, কাপাসিয়া ও কালিয়াকৈর উপজেলার ইউপি নির্বাচনের ঠিক একদিন আগে এই মেধাবী পুলিশ অফিসারকে গাজীপুর জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এতে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের ভয়ে পুনরায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
এদিকে স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে কোন প্রার্থীর পক্ষে পুলিশ সুপার হারুনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তাকে পুনরায় গাজীপুর জেলায় ফেরত পাঠানো হয়। তিনি গত ২৮ মে পুনরায় যোগদান করে জেলার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির প্রতি নজর দেন। তিনি আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলার যানজট নিরসন,ঈদগামী মানুষের নিরাপদ যাত্রা সুনিশ্চিত করতে এবং সমাজ হতে সন্ত্রাস, মাদক, ভুমিদস্যুদের নির্মূল করার জন্য রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও কমিউনিটি পুলিশের সদ্যস্যদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করেন।