পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী আরবের কোম্পানিতে কর্মরত অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের নিজ খরচে শিগগিরই দেশে ফিরতে হবে। রাজকীয় সউদী সরকার নতুন বছরের শুরু থেকে দেশটির অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নের উদ্যোগ নিয়েছে। যাদের ইকামার মেয়াদ দীর্ঘদিন যাবত শেষ হওয়ার কারণে দেশে ফিরতে পারছিল না তারা এ সুযোগ পাবে। এ খবর দ্রæত ছড়িয়ে পড়ায় সউদী প্রবাসীদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। ফ্রি ভিসার নামে সউদী গিয়ে ইকামার ফি পরিশোধ না করায় অনেক প্রবাসীই অবৈধ হয়ে পালিয়ে পালিয়ে কাজ করছে।
কতিপয় শর্ত পূরণ করে দূতাবাসের মাধ্যমে সউদী লেবার কোর্ট ও জাওয়াজাতের সহযোগিতায় ভিসা নিয়ে দেশে ফিরবে বিপুল সংখ্যাক অবৈধ বাংলাদেশিরা। সউদীর রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ গত ১৯ ডিসেম্বর কোম্পানিতে কর্মরত অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের স্বদেশে ফেরার জন্য করণীয় এবং শর্তাদি উল্লেখ করে একটি জরুরি নোটিশ জারি করেছে। রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ দেশটিতে প্রবাসী অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে না। একাধিক জনশক্তি রফতানিকারক এসব অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
জনশক্তি রফতানির সর্বোচ্চ দেশ সউদীতে বর্তমানে ১৫ লক্ষাধিক নারী-পুরুষ কর্মী কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে। ২০১৮ সনের জুলাই মাস থেকে গত জুন মাস পর্যন্ত সউদী প্রবাসী কর্মীরা ৩ হাজার ১১০ দশমিক ৩৯ মিলিয় মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছে। রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ এসব রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বৈধতা লাভের সুযোগ সৃষ্টি এবং দেশে ফেরার পর তারা পুনরায় দেশেটিতে যাওয়ার সুবিধা পাবে কি না তা’ নিশ্চিত করতে পারেননি। বাংলাদেশি অবৈধ কর্মীদের আইনী সহায়তা দিতেও ব্যর্থ হচ্ছে।
অনেক প্রবাসী নারী ও পুরুষ কর্মীরা ইকামা নবায়নের জন্য সউদী কফিলের কাছে নির্ধারিত রিয়াল জমা দিয়েও নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। মদিনার এক কফিলকে ইকামা নবায়নের জন্য নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের লাখি ১৮০০ রিয়াল দিয়ে সম্প্রতি মদিনা সেল্টার হোম থেকে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। জেদ্দাস্থ কনস্যুলেটের মদিনার দায়িত্বে নিয়োজিত এল এ মহসিন উল্লেখিত কফিলের কাছ থেকে ইকামা নবায়নের ১৮০০ রিয়াল আদায় করে কথা বললে সে এখনো তা ফেরত পায়নি। এ ব্যাপারে নারী কর্মী লাখি জেদ্দাস্থ কনস্যুলেটের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলেও তাকের কোনো সহায়তা না দিয়ে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রাতে সে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিএমইটির সূত্র মতে, ২০০৯ সন থেকে সউদী সরকার বাংলাদেশ থেকে অঘোষিতভাবে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহু কূটনৈতিক তৎপরতার পর ২০১৫ সনে বাংলাদেশ থেকে মহিলা গৃহকর্মীসহ পুরুষ কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ঐ বছরই স্বল্প সংখ্যক পুরুষ কর্মীসহ প্রায় ৫৮ হাজার ২৭০ জন মহিলা গৃহকর্মী দেশটিতে চাকরি লাভ করে। দেশটিতে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা থাকায় ২০১৬ সনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯১৩ জন, ২০১৭ সনে ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩০৮ জন, ২০১৮ সনে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৩১৭ জন এবং গত জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৪ জন নারী-পুরুষ কর্মীর সেখানে চাকরি লাভ করেছে। গত জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সউদীতে শুধু ৫৮ হাজার ২৮৩ জন নারী গৃহকর্মী চাকরি লাভ করছে। অতিসম্প্রতি দেশটি থেকে নানা নির্যাতনের শিকার হলে বেশ কিছু নারী গৃহকর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছে।
গত মাসে রিয়াদে উভয় দেশের টেকনিক্যাল কমিটির যৌথ মিটিংয়ে প্রবাসী সচিব মো. সেলিম রেজার নেতৃত্বে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল প্রবাসী নারী গৃহকর্মীদের নির্যাতনসহ সুরক্ষার বিষয়গুলো তুলে ধরেন। সউদী কর্তৃপক্ষ প্রবাসী নারী গৃহকর্মীদের সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ সম্প্রতি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সউদী সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষায় কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে। আশা করছি সউদ আরব থেকে আরো কোনো নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরছে না। এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী মন্ত্রী বলেন, বিগত দশ বছরে ৯ হাজার প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছে।
রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এক জরুরি সার্কুলারে জানিয়েছে, সউদীর কোম্পানিতে কর্মরত অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে যাদের ইকামার মেয়াদ শেষ হওয়ায় দেশে ফিরতে পারছে না তাদের কতিপয় শর্তাদি পূরণ করে নিজ খরচে দেশে ফিরতে পারবেন। রিয়াদস্থ দূতাবাসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার পর তা’ সউদী লেবার কোট ও জাওয়াজাতের সহযোগিতায় দেশে ফিরার ভিসা (এক্সিট ভিসা) অনলাইনে দেয়া হবে।
যাদের মেয়াদসহ পাসপোর্ট আছে তারা নিজে বিমানের টিকিট সংগ্রহ করে সরাসরি সউদী ত্যাগ করতে পারবে। যেসব কোম্পানির অবৈধ কর্মীদের বৈধ ইকামা নেই এবং পাসপোর্টের মেয়াদও নেই তাদেরকে রিয়াদ দূতাবাস ও জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সিজি ফয়সাল আহমদ রাতে ইনকিলাবকে বলেন, রিয়াদস্থ দূতাবাস অবৈধ কর্মীদের দেশে ফেরার নোটিশ জারি করেছে। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তবে আগামীকাল রোববার তিনি দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করবেন বলে জানান। বায়রার ইসির অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ আলী রাতে ইনকিলাবকে বলেন, সউদীর কোম্পানির ভিসার অনেক কর্মী ইকামার নবায়ন করতে না পেরে অবৈধ হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই ফ্রি ভিসায় সউদী গিয়েও অবৈধ হয়ে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।