শীতের প্রকোপে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে ঠাকুরগাঁওয়েও। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছেন, যারা অভাবের কারণে সামান্য শীতের বস্ত্রও ব্যবহার করতে পারছে না।
ঠাকুরগাঁও কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব উদ্দীন জানিয়েছেন, ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রকোপ বাড়ছে। এখানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আশঙ্কা করা হচ্ছে আরও নিচে নামতে পারে।
কয়েকদিন আগে শীতের প্রকোপ এতটা বেশি ছিল না। হঠাৎ করে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আসায় কাবু হয়ে পড়েছেন মানুষজন। সারাদিনের মধ্যে সূর্যের দেখা মিলছেই না। ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে চারদিক।
শীত নিবারণের জন্য নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা রাতের বেলা নিজ নিজ এলাকা ঘুরে অসহায়দের মাঝে কম্বল বিতরণ করছেন। তাতে কিছু স্বস্তি পেয়েছে তারা।
যদিও আয়-রোজগার কমে গেছে তাদের। কর্ম খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে গেছে একরকম। আবার পেলেও তেমন কাজ করতে পারছে ঠাণ্ডায় কাবু শরীরে।
ঠাকুরগাঁও শহরের সুমাইয়া ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের মাত্রা বাড়ছে। তিনদিন আগেও ভালো ছিল। রোদে ঝলমল করতো আবহাওয়া। আর এখন ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা প্রায় মিলেই না। বরং মেঘের মতো কুয়াশার পানি পড়ছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বাসিন্দা শামীম রহমান বলেন, দুইদিন ধরে ঠাকুরগাঁয়ে যে হারে শীতের তীব্রতা বাড়ছে, এভাবে থাকলে আমাদের মোকাবিলা করা কঠিন। নিম্ন আয়ের মানুষ খুব কষ্টে পড়ে গেছে এখনই। অবশ্য আমরা চেষ্টা করছি তাদের সহযোগিতা করার। আর সহযোগিতা করেও তাদের কতটুকু শান্তি দেওয়া যাবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। কারণ কিছু একটা করে খেতে হবে তো তাদের!
বড়গাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিম বলেন, আমি মানুষের বিভিন্ন ক্ষেতে, খামারে কাজ করে সংসার চালাই। কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড ঠাণ্ড। কাজ করা খুব কষ্টদায়ক। তারপরও করতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমার মতো লোকদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হলে বেঁচে যেতে পারি। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এই আবেদন জানাই।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ইতোমধ্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৩৩ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এসব ভাগ করে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বিতরণও শুরু হয়েছে। এছাড়া শীতার্তদের মাঝে ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও কিছু লেপ তৈরি করে বিতরণ করেছি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শীতের প্রকোপ অনেক বেশি। অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষের মোকাবিলা খুব কষ্টদায়ক হয়ে উঠেছে।
আমরা সদর উপজেলার পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। কম্বল বিতরণ করছি বাড়ি বাড়ি গিয়ে।