Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতের কামড় দুর্বিষহ জীবন

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

মাঘের তীব্র শীতের হুল ফুটানো কামড় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বত্র দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সর্ব-উত্তর জনপদের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা কনকনে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় দেশের সবক’টি বিভাগের অধিকাংশ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়েছে। এরফলে কর্মজীবী সর্বস্তরের মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম, সার্বিক উৎপাদনশীলতায় ভাটা পড়েছে।
শীতবস্ত্রের অভাবে সমাজের হতদরিদ্র জনগণের কষ্ট-দুর্ভোগ অসহনীয়। শীতবস্ত্র বিতরণের সামাজিক মহতি উদ্যোগ এখন পর্যন্ত সীমিত ও অপ্রতুল। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও কুয়াশার দাপটে সর্দি-কাশি, জ¦র, ডায়রিয়া, শ^াসকষ্ট, চর্মরোগসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রকোপ বেড়ে গেছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার রাত ও দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড অঞ্চলসহ গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, ফেনী, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও বরিশাল জেলাসমূহ এবং সমগ্র রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত বা কমে আসতে পারে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চল থেকে বিহার হয়ে সরে গেছে। এরফলে ‘শীতের বলয়’ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে গতকাল থেকে পঞ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ আবারও হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে আগামী দুয়েকদিন পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে আসা উষ্ণ মেঘ ও জলীয়বাষ্পের প্রভাবে শীতের দাপট কিছুটা কমে আবারও তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
চলমান শৈত্যপ্রবাহে গতকাল পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াও উত্তরাঞ্চল তথা রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ স্থানে রাত থেকে ভোর-সকাল পর্যন্ত তাপমাত্রা ৭ থেকে ৯ ডিগ্রিতে অবস্থান করে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মতো মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার সাথে শীতের তীব্রতায় কমেছে সূর্যের উত্তাপ। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পারদও হ্রাস পেয়েছে। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৪, চট্টগ্রামে ১৩, ময়মনসিংহে ৯.৮, শ্রীমঙ্গলে ৯, রাজশাহীতে ৮.৮, রংপুর ও যশোরে ৯.২, বরিশালে ৯.৬, দিনাজপুরে ৭.৮, কুড়িগ্রামে ৭.৪ ডিগ্রি সে.। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মংলায় ২৭.৩, ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪, চট্টগ্রামে ২৪.৩ ডিগ্রি সে.।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদ-নদী অববাহিকায় ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তীব্র শীত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ