মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফকে ফাঁসির আদেশ দিল পাকিস্তানের বিশেষ আদালত। ২০০৭ সালে সংবিধান বাতিল করে সাংবিধানিক জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য তিন সদস্যের বেঞ্চ তাকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে। ২০১৪ সালেই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চার্জ গঠন হয়। তার পাঁচ বছর পর রায় দিল বিশেষ আদালত। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের ঘোষণা দিয়েছে ইমরান খান সরকার।
১৭ ডিসেম্বর এই মামলার রায় দেয়া হবে, আগেই জানিয়েছিল বিশেষ আদালত। এ দিনের সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বিচারকরা জানিয়েছেন, প্রায় তিন মাস ধরে তারা অভিযোগ, দাখিলকৃত তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখেছেন। যুক্তি তর্কও হয়েছে আদালতে। বেঞ্চের মন্তব্য, ‘পাকিস্তানের সংবিধানের ৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মুশারফকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।’ ২-১ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই রায় দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে আদালত।
২০০৭ সালে পাকিস্তানের সংবিধান বাতিল করে দিয়েছিলেন তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ। ঘোষণা করেছিলেন সাংবিধানিক জরুরি অবস্থা। সেই ঘটনাতেই মুশারফের বিরুদ্ধে ‘হাই ট্রিজন কেস’ বা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
২০১৩ সাল থেকে সেই মামলার শুনানি প্রক্রিয়া চলছিল। যদিও মুশারফ এই মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। তার দাবি ছিল, শারীরিক ভাবে সুস্থ হয়ে আদালতে হাজির না হওয়া পর্যন্ত যেন রায় না দেয় আদালত। সেই মামলার জেরে রায়দান পিছিয়ে যায় নিম্ন আদালতে। হাইকোর্ট মুশারফের আবেদন খারিজ করার পরই এ দিন রায় দিল নিম্ন আদালত।
মঙ্গলবার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করবে বলে জানান পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ফেরদৌস আশিক আওন। তিনি বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফকে বিশেষ আদালতের দেওয়া মৃত্যুদÐাদেশের বিরুদ্ধে আমরা রিভিউ আবেদন করব। রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ইমরান খান সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রীয় সফর করছেন। আগামীকাল বুধবার তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এরপর সকল আইনি বিষয়গুলো পর্যালোচনার মাধ্যমে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা হবে। যদিও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলা ছাড়া এখনই বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়।’
বর্তমানে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে রয়েছেন ৭৬ বছরের মুশারফ। একটি দুর্নীতির মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদÐের নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তানেরই অন্য আদালত। সেই মামলায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে জামিন পেয়েছেন তিনি। মুশারফ প্রায় তিন বছর ধরে দুবাইয়ে থাকেন। ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ চিকিৎসার জন্য দুবাইয়ে গিয়ে আর ফেরেননি। তার কয়েক মাস পরেই বিশেষ আদালত তাকে ধারাবাহিক অপরাধী ঘোষণা করে। বারবার আদালতে হাজির না হওয়ায় পাকিস্তানে থাকা মুশারফের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয় আদালত। পরে আদালতের নির্দেশে বাতিল হয় তার পাসপোর্ট এবং সমস্ত পরিচয়পত্রও। ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন পারভেজ মুশারফ। ২০০৮ সালে ইমপিচমেন্ট এড়াতে প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের পক্ষে আইনজীবী আলী জিয়া বাজওয়া সাবেক এই সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন।
২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন পারভেজ মোশাররফ। রাষ্ট্রদ্রোহ, জরুরি অবস্থা জারি, বেআইনি উপায়ে বিচারপতি বরখাস্ত, বেনজির ভুট্টো হত্যা এবং লাল মসজিদ তল্লাশি অভিযান-সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি মামলায় পলাতক রয়েছেন সাবেক এই পাক সেনাপ্রধান। ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে দেশটির আদালতে মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে এই মামলার রায় আদালতে ঝুলে ছিল। ২০১৪ সালে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত হন মুশারফ। রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৬ বছর বয়সী পারভেজ মুশারফের বিবৃতি রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছিল লাহোরের ওই বিশেষ আদালত।
রায় ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ বলেন, তার বাবা আগেই দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মুশারফকে অভিযুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তখনই নওয়াজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। সূত্র : ডন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।