বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নারায়ণগঞ্জে মহান বিজয় দিবসের র্যালিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে জেলা ও মহানগর বিএনপির ১৯ নেতার নাম উল্লেখ করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে সদর মডেল থানার এসআই ছাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামী করা হয়েছে তিনশ জনকে। এদিকে মামলা দায়েরের পরেই গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসেন কালজকে তাদের নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে ঘটনার দিন বিজয় র্যালি থেকে আটক মহানগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক নূর এলাহী সোহাগ ওরফে রাকিব, বিএনপির কর্মী স্বপন মিয়া, কামরুল হাসান ও মামুনকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে এ মামলায় এজাহারনামীয় ৬ জনসহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে গ্রেফতারকৃতদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আফতাবুজ্জামান আগামী বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানীর তারিখ ধার্য করেন।
মামলার অন্যান্য আসামীরাা হলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মাসিকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউর রহমান জিয়া, বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম সজল, অহিদুল হক ছক্কু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি, মঞ্জু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আকরাম প্রধান, মাহমুদুল হাসান লিঙ্কন ও মন্টু মেম্বার।
মামলায় এসআই ছাইফুল উল্লেখ করেন, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধে রাস্তার যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়ে ভাঙচুর করছে এমন সংবাদে ঘটনাস্থলে পৌছালে আসামিরা পুলিশের সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। এ সময় আমাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ সরকারি অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ সময় চারজনকে আটকসহ ঘটনাস্থলে থেকে ৫টি বাঁশের লাঠি, ৬টি ভাঙ্গা ইটের টুকরা জব্দ করা হয়।
মামলায় গাড়ি ভাঙ্গচুরের অভিযোগ আনা হলেও এ অভিযোগের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে যোগাযোগ করলে সোমবার বিজয় দিবসের দিন নগরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় কোন গাড়ি ভাঙ্গচুর করা হয়েছে বলে কেউ জানাতে পারেনি।
মামলা বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, আমি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা। এ দিবসটিকে কেন্দ্র করে সবার মধ্যেই উচ্ছাস এবং উত্তেজনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বিজয় দিবসে বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনগুলো শান্তিপূর্ণভাবে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিজয় র্যালি বের করে। কিন্তু অতি উৎসায়ী কতিপয় দুই-তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা বিনা উস্কানীতে কোন কোন র্যালিতে বাধা দেয়। বাধার কারণ জানতে চাইলে পুলিশ নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে ব্যানার কেড়ে নেওয়া নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। তবে যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করে পুলিশ উদর পিন্ডি বুধোর গাড়ে চাপানো চেষ্টা করেছে। পুলিশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা বানোয়াট গল্প সাজিয়ে বিএনপির ৩ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এটা অত্যন্ত দু:খজনক। আমরা পুলিশের এই মিথ্যা বানোয়াট মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নাশকতা ও সরকারি কাজে বাধা দিয়ে পুলিশকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ১৯ জনের নাম উলে¬খসহ অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।