মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের দীর্ঘ পর্বতশ্রেণীগুলোর ভেতর দিয়ে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের দিকে চলে যাওয়া কারাকোরাম হাইওয়ে থেকে অনেকটা প্রত্যাশা রয়েছে। উভয় দেশই এই সড়কের সংস্কার করছে, কারণ এটিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ হিসাবে দেখা হচ্ছে। পাকিস্তানের কাছে এই সড়কের আরেকটি তাৎপর্য আছে। তা হলো এটি প্রতিদ্ব›দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে বাড়তি সুবিধা দেবে তাদেরকে।
তবে ৫০০ মাইলব্যাপী এই পথ সব জায়গায় একরকম নয়। কিছু কিছু অংশ বেশ সরু, সেসব জায়গায় দুটি যান পাশাপাশি চলাচল করা কঠিন। কোথাও কঠিন পাহাড় খোদাই করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে যা নীচের উপত্যকার দিকে তীব্রভাবে ঢালু হয়ে নেমে গেছে। এসব জায়গা পাথরধস, বন্যা এবং ভ‚মিকম্প দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ২০১০ সালে একটি ভ‚মিধসে সেখানকার নদীপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে প্রায় ১৪ মাইল রাস্তা ডুবে যায়। ভারী তুষারপাতের সময় রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশটি চীনের শেষ প্রান্ত। হাইওয়েতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত ভূতত্ত্ববিদ সরফরাজ আলী বলেন, ‘আমরা রাস্তার এই অংশটিকে প্রাকৃতিক বৈচিত্রের সংগ্রহশালা বলতে পারি।’ ১৯৫৯ সালে কারাকোরাম হাইওয়ের কাজ শুরু হয়েছিল এবং ১৯৭৯ সালে সম্পূর্ণ হয় এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়েছিল। সে সময় এটি ছিল কারিগরি দক্ষতার একটি অসাধারণ নিদর্শন। কারাকোরাম পর্বতমালার মত দুর্গম এলাকার ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া এ রাস্তার নাম দেয়া হয়েছে পর্বতমালার নামেই। এই পাহাড়ের ৬০টি শৃঙ্গ আছে। এগুলোর উচ্চতা গড়ে প্রায় ৬ হাজার ৬০০ মিটার।
বর্তমানে চীন সরকার ১৬০ মাইল রাস্তা পুনর্র্নিমাণের জন্য প্রায় ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের হাভেলিয়ান থেকে রায়কোট শহর পর্যন্ত পুরানো কারাকোরাম মহাসড়কটি প্রতিস্থাপন করা হবে। আগামী বছরের মার্চ মাসের সম্পন্ন মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কারাকোরাম মহাসড়ক পুননির্মাণ ও বর্ধিত করার প্রকল্পটি চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা সিপিসির মূল পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। যেখানে পাকিস্তানের জ্বালানি ও পরিবহণ খাতে ৬০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে চীন। তবে চীনের গ্লোবাল বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ সিপিসিই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে কারণ কোনও দেশই চুক্তির শর্ত ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কোন কিছু স্পষ্ট করেনি।
কারাকোরাম বেশিরভাগ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত, তবে বিদেশী সাংবাদিকদের জন্য এর সুদূর-উত্তরাঞ্চল পরিদর্শন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অনুমতি নিতে হয়। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এনপিআর এর প্রতিনিধিরা এই এলাকা পরিদর্শনে যান। তাদের অভিমত, এই রাস্তা আশেপাশের এলাকার মানুষদের জীবন বদলে দিয়েছে।
বর্তমানে, যানবাহনগুলি ইসলামাবাদের উত্তরে নতুন হাইওয়ে দিয়ে পুরানো কারাকোরাম রাস্তায় আসে। এই রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় অসংখ্য কোলাহলপূর্ণ আঞ্চলিক বাজার, নদী ও প্রাচীন বৌদ্ধ নিদর্শন চোখে পড়ে। রাতে সরাইখানাগুলোর এবং চায়ের দোকানগুলোর ফ্লোরোসেন্ট আলোয় রাস্তার অনেক অংশ আলোকিত থাকে। এসব জায়গায় চালকরা বিশ্রাম নেন। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।