পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতো খিলগাঁও, মালিবাগ, বাসাবো ও গোড়ান এলাকার রাস্তাগুলোতেও চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। এসব রাস্তায় চলাচলে বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই। দু’য়েকটি দিয়ে কোনো রকম চলাফেরা করা গেলেও অনেক রাস্তাই এখন চলাচলের অনুপযোগী। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কগুলোতে কাদা, পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। বোঝার উপায় থাকে না কোথায় খানাখন্দ আর কোথায় সমান। রোদ উঠলে ধুলা-বালিতে দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি ছাড়াও এসব সড়কের অনেক জায়গায় কার্পেটিং, পাথরকুচি ও ইট উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এ এলাকার বিভিন্ন সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকি, বিড়ম্বনা ও কষ্টকে সঙ্গী করেই মানুষ রাস্তায় নামছে।
খিলগাঁও রেললাইন থেকে খিলগাঁওয়ের দিকে যেতে মূল সড়কটি বেহাল হয়ে আছে গত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময়। এই সড়কটির দুইপাশে রয়েছে, খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, খিলগাঁও মডেল কলেজ, খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু নামি-দামি স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ঢাকা ওয়াসার স্যুয়ারেজ লাইন বসানোর কাজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে এখানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলার কারণে প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে এই সড়কটিতে। ওই সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরাসহ শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন দীর্ঘযানজটের বিড়ম্বনা সহ্য করেই এই সড়কটি দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, এ এলাকায় নানা নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর এ জরাজীর্ণ ভাঙা রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, রাজধানীর পানিবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে এই মুহূর্তে সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ চলছে। এই কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হচ্ছে। দ্রæততম সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে আমাদের ওপর নির্দেশ রয়েছে। আমরাও নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মাটির নিচের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে জনগণের ভোগান্তি দূর করা হবে। উন্নয়ন কাজের ফলে জনগণের সাময়িক ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এই কর্মকর্তা বলেন, তবে সব কাজ সিটি কর্পোরেশনের নয়। ডিপিডিসিসহ আরো কয়েকটি সংস্থাও উন্নয়ন কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ২ হাজার ২৮৯ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। তবে অনেক রাস্তাই সবসময় চলাচলের উপযোগী থাকে না। কখনো সিটি কর্পোরেশন, কখনো ওয়াসা, আবার কখনো অন্যান্য সেবামূলক সংস্থার উন্নয়ন কাজের অজুহাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলতেই থাকে। সরকারের বার্ষিক বাজেট ঘোষণার কয়েক মাস আগে থেকে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়। তারপর সেই রাস্তা যথাযথ মেরামতের জন্য আর কোনো সংস্থাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সা¤প্রতিক সময়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, মালিবাগ, গোড়ান, সবুজবাগ এলাকায় সবচেয়ে বেশি রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এই অবস্থায় থাকছে মাসের পর মাস। যে সংস্থা রাস্তা খুঁড়ছে এবং যে ঠিকাদার কাজ করছে তারা কেউই কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর খিলগাঁও, বাসাবো, গোড়ানসহ এর আশপাশের রাস্তাগুলোর অবস্থা একেবারেই বেহাল। এই এলাকার সড়কগুলো দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা নিজের জান নিয়েও চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। সড়ক খুঁড়ে বিশাল বিশাল গর্ত করে রাখা হয়েছে। এ এলাকায় বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকার কারণে প্রতিদিন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের। শাহজাহানপুরের ভেতর দিয়ে যাওয়া সড়কটির ভূমি অফিস থেকে খিলগাঁও ফ্লাইওভার পর্যন্ত অংশ খুঁড়ে রাখা হয়েছে গত প্রায় এক বছর। গত প্রায় ছয় মাস ধরে সড়কটি বাঁশ গেড়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও এই এলাকার প্রায় সড়কেই চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। যে কারণে সড়কগুলো এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। সেখানে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ে রিকশা, ম্যাক্সি, হিউম্যান হলার, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন। খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ি অংশে সড়কের দুই পাশেই বেহাল অবস্থা। বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দে ভরা। ফলে সেখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা অঞ্জনা দেবি মিত্রা জানান, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন। তিলপাপাড়া এলাকায় প্রবেশের মূল সড়কটি ছয় মাস আগে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এই রাস্তাটি এখন পর্যন্ত একই অবস্থায় রয়েছে। খিলগাঁও বালুমাঠ থেকে সিটি কর্পোরেশন অফিসের দিকে রাস্তা, পোস্ট অফিস গলি, তালতলা মার্কেটের বিপরীত পাশসহ ‘এ’ বøক, ‘সি’ বøক, তিলপাপাড়া আলী আহমেদ স্কুলের পাশের রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে বিশাল এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে।
গোড়ান এলাকার বাসিন্দারাও স্বস্তিতে নেই। এই এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা জানান, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে চরম ভোগান্তির মধ্যে আছি। তিলপাপাড়া ১৬ নম্বর সড়ক থেকে গোড়ান পর্যন্ত রাস্তাটিও খোঁড়াখুঁড়ির ফলে এলাকাবাসীর ভোগান্তি বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। খিলগাঁও মডেল কলেজের দক্ষিণ পাশের রাস্তাটিও খোঁড়াখুঁড়ির ফলে বন্ধ রয়েছে। খিলগাঁও থেকে গোড়ান পর্যন্ত একই অবস্থা।
সবুজবাগ বৌদ্ধ মন্দিরের পাশের বাসিন্দা আরিফা জাহান মুন্নি জানান, তার বাসার পাশের রাস্তাটিতে গত রমজানের আগে থেকে খোঁড়াখুঁড়ি কাজ শুরু হয়েছে। এখনো কাজ শেষ হয়নি। প্রতিদিন যাওয়া-আসার পথে তাকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। উন্নয়ন কাজ যেন শেষ হয় না। কবে নাগাদ শেষ হবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররাও তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে জানা গেছে, রাজধানীর পানিবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশন একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ছয় মাস আগে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে পানিবদ্ধতা নিরসন করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। প্রকল্প হাতে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, গোড়ান ও মালিবাগ এলাকাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করা হয়। পর্যায়ক্রমে নগরীর অন্যান্য এলাকায়ও একই ধরনের উন্নয়ন কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে। নতুন অর্থবছরের উন্নয়ন কাজ করতে গেলে রাস্তা খোঁড়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেও সূত্র জানায়।
জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও আরো কয়েকটি সংস্থাও এই মুহূর্তে রাজধানীতে উন্নয়ন কাজ করছে। এর মধ্যে ওয়াসা অন্যতম। ওয়াসার পক্ষ থেকেও পানির পুরাতন লাইন পরিবর্তনের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে। সেখানেও জনগণের ভোগান্তি বেড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।