পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মিয়ানমারের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে গতকাল হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে হাজিরা দিলেন ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী ও নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চি। আজ বুধবার তিনি বিচারকদের সামনে অভিযোগের বিরুদ্ধে তার বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। এদিকে, নিপীড়িত গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে করা অপরাধের কথা প্রকাশ্যে স্বীকারের জন্য সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের ৭ নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে। এই শুনানি চলবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। গতকাল গাম্বিয়া তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করেছে। আজ বুধবার মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন সু চি। এরপর আগামীকাল সকালে গাম্বিয়া বক্তব্য উপস্থাপন করবে এবং একই দিন বিকালে মিয়ানমার প্রতিপক্ষের যুক্তি খন্ডন ও চ‚ড়ান্ত বক্তব্য উত্থাপন করবে। গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে শুনানিতে অংশ নিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। তাছাড়া ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনা করছেন তিনি।
হেগের আদালতে শুনানিতে সভাপতিত্ব করেন সোমালিয়ার বিচারপতি আবদুল কাবী আহমেদ ইউসুফ। সহ-সভাপতি ছিলেন চীনের বিচারক সুই হানকিন। অন্য বিচারকরা হলেন, সেøাভাকিয়ার বিচারক পিটার তোমকা, ফ্রান্সের বিচারক রোনি আব্রাহাম, মরক্কোর বিচারক মোহাম্মদ বেনোউনা, ব্রাজিলের বিচারক অ্যান্তানিও অগাস্তো ক্যানকাডো ত্রিনডাডে, যুক্তরাষ্ট্রের বিচারপতি জোয়ান ই ডোনোঘুয়ে, ইতালির বিচারক জর্জিও গাজা, উগান্ডার বিচারক জুলিয়া সেবুতিনডে, ভারতের বিচারক দলবীর ভান্ডারি, জ্যামাইকার বিচারক প্যাট্রিক লিপটন রবিনসন, অস্ট্রেলিয়ার বিচারক জেমস রিচার্ড ক্রফোর্ড, রাশিয়ার বিচারক কিরিল জেভোরজিয়ান, লেবাননের বিচারক নাওয়াফ সালাম এবং জাপানের বিচারক ইউজি ইয়াসাওয়া।
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল তথ্য উপাত্ত নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। এই দলে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের তিনজন প্রতিনিধিও রয়েছেন। ক‚টনীতিক ছাড়াও প্রতিনিধি দলে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিকেও রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, অপরাধের কথা প্রকাশ্যে স্বীকারের জন্য সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশ্বের ৭ নোবেলজয়ী গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে আমরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যাসহ অপরাধগুলো প্রকাশ্যে স্বীকারের জন্য নোবেলজয়ী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, নৃশংস এই ঘটনায় নিন্দা জানানোর বিষয়টি সু চি অস্বীকার করেছেন।’ তারা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ঘটনায় একমাত্র মিয়ানমারকে দায়ী করার জন্য আমরা গাম্বিয়ার প্রশংসা করছি। এমনকি শান্তির মানুষ হিসেবে আমরা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য মোকাবিলা ও রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা, ভ‚মির মালিকানা, আন্দোলনের স্বাধীনতাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানাই।’ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- শান্তিতে নোবেলজয়ী ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী, ইরানের শিরিন ইবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কার্মান, লাইবেরিয়ার লেমাহ গবোই, গুয়েতেমালার রিগোবার্টা মেনচ তুম, উত্তর আয়ারল্যান্ডের মাইরেড মাগুয়ের ও যুক্তরাষ্ট্রের জোডি উইলিয়ামস।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ সময় হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ। চলতি বছরের ১১ নভেম্বর জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলা গ্রহণ করে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক আদালত। জাতিসংঘ এই অভিযানকে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ পরিচালিত আখ্যা দিয়েছে, যেখানে ব্যাপক হত্যা ও ধর্ষণ চালানো হয়েছে। মিয়ানমার সবসময় গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। মিয়ানমার বলেছে যে, রোহিঙ্গা জঙ্গিরা যে হামলা করেছিল, তার জবাবেই সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অভিযান চালিয়েছিল। সূত্র : এবিসি নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।