Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুয়াকাটার বুক চিরে চর বিজয় পর্যটকদের মন কেড়েছে

এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে : প্র | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

কৃতির খেলায় বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে উঠেছে নয়নাভিরাম বিশাল এক চর। বিজয়ের মাসে এ চরটির সন্ধান পায়, তাই এর নাম দেয়া হয় ‘চর বিজয়’। সমুদ্রের মঝে নয়নাভিরাম অপরূপ সৌন্দর্যের হাতছানি।
চারিদিকে সাগরে অথৈ পানিরাশিতে ঘেরা এই চরটিতে সব সময় থাকে হাজারো অতিথি পাখির কোলাহল। প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও দেড় কিলোমিটার প্রস্থ এ চরটিতে লাল কাকড়ার লুকোচুরি খেলা যেন পর্যটকদের চোখ জুড়িয়ে যায়। জেলেসহ স্থানীয়দের কাছে এ চরটি হাইরের চর নামে পরিচিত। ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে পূর্ব দক্ষিণ দিকে গভীর সমুদ্রে এটির সন্ধান পায় বলে স্থানীয়রা জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে চরটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে ও নিরাপদ ভ্রমণের সম্ভাব্যতা নিশ্চিত করতে ২০১৭ সালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন, কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন, বন বিভাগ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ, হোটেল মালিক সমিতি, পর্যটন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন চরটি পরিদর্শন করেন। এ সময় ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বাগান সৃজনের জন্য প্রায় ২ হাজার গোল, ছইলা, কেওড়া ও সুন্দরী গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা ও সাইনবোর্ড টানিয়ে চরের নামকরণ করা হয় ‘চর বিজয়’। কুয়াকাটা সৈকত থেকে ট্যুরিস্ট বোট নিয়ে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছানো যায় এ চরটিতে।
জেলেরা জানান, বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস চরটি সাগরের পানিতে হাটু পরিমাণ ঢাকা থাকে। আবার শীত মৌসুমে উঁকি দেয়। প্রান্তিক জেলেরা তখন মাছ ধরতে সাগরে যায় এবং মাঝেমাঝে ওই চরটিতে অবস্থান নেয়। এছাড়াও ছোট ছোট ডেরা তৈরি করে শুঁটকি করার জন্য দুই তিন মাস এ চরে থাকেন অনেক জেলেরা।
এদিকে, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে গত বুধবার চরবিজয়’র ৩য় বার্ষিকী পালন করে স্থানীয় ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের সুবিধার্থে ওই চরে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য একটি টিউবওয়েল স্থাপন ও একটি টয়লেট নির্মাণ করেন তারা। এছাড়া চরটিতে কয়েকশ’ চারা রোপন করেন। এ সময় কুয়াকাটার পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লাসহ প্রায় শতাধিক পর্যটক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চর বিজয় ঘুরে এসে সিমা আক্তার বলেন, চর বিজয়ের নাম শুনে আমরা সেখানে যাই। অনেক আনন্দ করি। জেলেদের জাল দিয়ে চরে মাছ শিকার ছিল বেশি আনন্দময়। সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময় চরটিতে অপরূপ দৃশ্য আর ঢেউয়ের শব্দ, অগণিত অতিথি পাখির কিচির মিচির ও লাল কাঁকড়াদের বর্ণিল আলপনা অসাধারণ লেগেছে। অপর এক পর্যটক আক্তার হোসেন জানান, গভীর সাগরে জেগে আছে মনোমুগ্ধকর দ্বীপ চর বিজয়। চারদিকে সাগরের অথৈ পানি। চরে নেমেই কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যাই। প্রকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে।
ফটো সাংবাদিক আরিফুর রহমান বলেন, বিজয়ের মাসে চরটি আবিষ্কার হয় বলেই চরটির নামকরণ করা হয় চর বিজয়। এ চরটি নয়নাভিরাম অপরূপ সৌন্দর্যের হাতছানি। সম্ভাবনাময় এই চরটি ইতোমধ্যে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়েছে।
চর বিজয়ের নামকরণকারীদের একজন ট্যুরিজম ব্যবসায়ী হোসাইন আমির বলেন, কুয়াকাটার সমুদ্র মাঝে জেগে ওঠা চরটি ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর বিজয়ের এই মাসে আবিষ্কার হয়েছে। তাই এ চরটির নামকরণ করা হয় চর বিজয়।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আ. বারেক মোল্লা বলেন, চর বিজয়ে পর্যটকদের আকর্ষন বাড়াতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

 

 



 

Show all comments
  • ** মজলুম জনতা ** ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৭:২১ এএম says : 0
    এ এম মিজানুর রহমান বুলেট"আপনার লেখাটি পড়লাম।আর ও সমুহ সম্ভাবনা নিয়ে লিখবেন।এক সময় পাখির কিচির মিচির ডাকের সংগে মানুষের পদভারে ও ভারীত হোক চর বিজয়।এ চর বিজয় থেকে ভেসে আসুক আযানের ধ্বনি।বেজে উঠুক শংঙধ্বনি।শিশু কিশোরের কন্ঠে ধ্বনিত হোক আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসী।
    Total Reply(0) Reply
  • ** হতদরিদ্র দিনমজুর ** ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৮:৫৫ এএম says : 0
    হতদরিদ্র দিনমজুর,যাদের জমি নাই,নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে ,এরকম ভুমিহীনদের জন্য আবাসস্থল হোক চর বিজয়।মানুষের বসবাস উপযোগী হোক এ চর ভুমি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পর্যটক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ