Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোদাগাড়ীতে সাংবাদিক অলিউল্লাহ প্রতারণা, যৌতুক ও নির্যাতনের স্বীকার হয়ে থানায় মামলা

গোদাগাড়ী ( রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:৫০ পিএম

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বাসিন্দা মফিজুলের ছেলে অলিউল্লাহ (৩৩)। অলিউল্লাহ ও সানজিদা রহমান বিথীর পরিচয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে, দীর্ঘ দিন ফেসবুকে পরিচয় ঘটে এবং পারিবারিক ভাবে অলিউল্লাহ তিন সন্তানের জননী মোসাঃ সানজিদা রহমান বিথীকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে ঘরে আনেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অলিউল্লাহ পেশায় সংবাদ কর্মী তিনি অনলাইন নিউজ চ্যানেল T1 এর গোদাগাড়ী প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। বিথীকে বিয়ে করার পর অলিউল্লাহর তেমন রোজগার ছিল না, তাই অলিউল্লাহর প্রথম স্ত্রী বিথী নিজ টাকায় একটি ট্রাক কিনে দেন। কিন্তু ট্রাক রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ালেও ট্রাকের আয় বাবদ কোন টাকা বিথী পান না বলে জানান।অলিউল্লাহর স্ত্রী বিথী বলেন, সে আমাকে ও আমার তিন সন্তানের কোন দ্বায়িত্ব নিতে চাই না অলিউল্লাহ। বাচ্চাদের স্কুলের খরচ ও বাজার সহ সমস্ত কিছু আমাকেই করতে হয়। বিথী আরো বলেন, প্রায় প্রতিদিন অলিউল্লাহ নানান মিথ্যা বানোয়াট বাহানা প্রতারনার করে টাকা চাইতো আর টাকা না দিলে শুরু করত অকথ্য শারীরিক নির্যাতন। এমন ঘটনা চলতে থাকলে আমি অলিউল্লাহর থেকে ট্রাকটি নিয়ে নিই এবং সেটা থানায় অভিযোগ করে পুলিশি মাধ্যমে ট্রাকটি নিই। ট্রাক নেওয়ার পরই অলিউল্লাহর পরিবার অলিউল্লাহকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন প্রথম স্ত্রীর কোন প্রকার অনুমতি ছাড়ায়। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ের দ্বন্দ সেই সাথে অমানবিক নির্যাতন ও যৌতুক মামলায় স্বামী অলিউল্লাহকে আসামী করে মামলা দায়ের করতে বাধ্য হয়েছেন বিথী।

নারী শিশু নির্যাতন ও যৌতুকের মামলায় গত ৫ নভেম্বর গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ তাকে আটক করে রাজশাহী জেলা জর্জ কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলার আসামী অলিউল্লাহ গোদাগাড়ী পৌর এলাকার লালবাগ কোকড়া পাড়া গ্রামের মফিজুলের ছেলে।

এছাড়াও একই মামলায় অলিউল্লার মা চেনুয়ারা বেগম, ভাই কারিমুদ্দিন মাঝি, ভাতিজা ওয়াজিব ও শরবরি বেগম কে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান গোদাগাড়ী থানা পুলিশ।

অলিউল্লার প্রথম স্ত্রী সানজিদা রহমান বিথির দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানাযায়, গত ২ বছর পূর্বে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে বিয়ে করে । এর আগে সানজিদা রহমান বিথির পূর্বের স্বামীর সাথে তালাক হয়ে যায় এই যৌতুকের কারণেই।

বিয়ের পর হতেই স্বামী অলিউল্লাহ সহ সকল আসামীরা সানজিদা রহমান বিথিকে যৌতুকের জন্য পরিবারের নিকট হতে টাকা পয়সাসহ মোটরসাইকেল দাবি করেন এবং শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছেন অলিউল্লাহ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ নভেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে অলিউল্লাহ কে বাসার বাজার করে আনতে বললে যৌতুক বাবদ নগদ ২ লক্ষ টাকা বাবার বাড়ী হতে এনে না দিলে বাজার করিবে না বলে লোহার রড দিয়ে বুকে আঘাত করে এবং দুই হাত দিয়া মুখ মন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ী ভাবে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে বিথীকে। তার চিৎকার শুনে মেয়ে সামিরা হোসেন রশনি আসিয়া অলিউল্লার হাত হতে রক্ষ করে। এই সময় আশে পাশের অনেক লোকজনও তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে। পরে তিনি চিকিৎসার জন্য গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়।

সানজিদা রহমান বিথি আরো জানান, গত ৩ ডিসেম্বর তার স্বামী অলিউল্লাহ আমার অনুমতি ছাড়াই ফরিদা পারভিন নামের এক নারীকে বিয়ে করে। আমি এসব কৈফিয়ত জানাতে চাইলে আবারও আমার সাথে ঝগড়া বিবাদ করে, এরপর আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়ে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ৪ ডিসেম্বর গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের করি।

তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশকে আমি অভিযোগ দিতে গেলে, গোদাগাড়ী মডেল থানার তদন্ত ওসি নৃত্যপদ দাস মামলা নিতে তালবাহানারকরে। থানায় কিছু স্থানীয় নেতা ও দালালের প্ররচণায় তিনি আমাকে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে। পরে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি মামলা নিতে বাধ্য হয়। বিথী এ প্রতিবেদককে আরো বলেন, মামলা দায়ের হওয়ার পর হতে অলিউল্লার ভাই সহ তাদের আত্নীয় স্বজনদের হুমকি অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

এই বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নৃত্যপদ দাস বলেন, থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পরই ১ নং আসামী অলিউল্লাহকে আটক করে বৃহস্পতিবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে । মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত সাপেক্ষে অন্য আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ