বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর এলাকার এক কুয়েত প্রবাসীর বাড়ি থেকে মা সহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশ প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করলেও কেন এবং কারা এই নৃশংসতা ঘটিয়েছেন তা জানাতে পারেননি । তবে পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন এটা কোন ডাকাতির ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে। বানারীপাড়া থানা পুলিশ ৩টি লাশের সুরতহাল করে ময়না তদন্তে বরিশাল মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে। নিহতরা হচ্ছে, কুয়েত প্রবাসী আবদুর রবের মা মা মরিয়ম বেগম (৭৫), ভগ্নীপতি অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক শফিকুল আলম (৬০) এবং খালাতো ভাই ভ্যান চালক মো. ইউসুফ (৩২)। এর মধ্যে শফিকুল গত ৩ দিন আগে ওই বাড়িতে বেড়াতে আসে এবং ইউসুফ মাঝেমধ্যে সেখানে রাত্রীযাপন করতেন।
১১ বছর ধরে কুয়েত প্রবাসে থাকা হাফেজ আব্দুর রব সেখানকার একটি মসজিদে ইমামতি করছেন। রবের স্ত্রী মিসরাত জাহান মিশু দুই সন্তান ইফাদ জাহান (৯) এবং নূরজাহান ও শ্বাশুড়িকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করছেন। তার বড় ছেলে ঢাকায় একটি মাদ্রাসায় হাফেজি পড়াশোনা করে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে ওই বাসায় ছিলেন মিসরাত ও তার দুই শিশু সন্তান, শ্বাশুড়ি, ভাতিজী চাখার কলেজের এইচএসসি’র প্রথম বর্ষের ছাত্রী আছিয়া আক্তার, রবের ভগ্নিপতি শফিকুল আলম এবং খালাতো ভাই মো. ইউসুফ। ওই রাতে নাতি আছিয়ার সাথে একই কক্ষে একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন বৃদ্ধা মরিয়ম।
শনিবার ভোর ৫টার দিকে আছিয়া ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দাদিকে বিছানায় না পেয়ে খুঁজতে গিয়ে বেলকনীতে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তার ডাক চিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে বাসার মধ্যে আরেকটি কক্ষে রবের ভগ্নিপতি শফিকুল আলমের এবং বাড়ির সামনে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় ইউসুফের পা বাঁধা লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবী করে গৃহকত্রী মিশরাত জাহান মিশু বলেন, গ্রামের কারোর সাথে তাদের কোন বিরোধ নেই। দুর্বৃত্তরা তার কক্ষের আলমিরা থেকে স্বর্নালংকার সহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে গেছে দাবী করলেও তিনি কিছুই টের পাননি বলেও জানান। এ ঘটনার পর সন্তান সহ পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত মিশু।
প্রবাসী রবের ভায়রা হারুন সিকদার বলেন, নিহত শফিকুলের সাথে তার ছোট ভাই শহীদুল ইসলামের জমি নিয়ে বিরোধ ছিলো। এ নিয়ে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে একাধিকবার সংঘাতও হয়। ৩ দিন আগে ওই বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শফিকুল তার কাছে বিষয়টি অবহিত করেন। ওই ঘটনার জের ধরে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হতে পারে বলে সন্দেহ করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমুলক বিচার চান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মাহমুদ জানান, আব্দুর রবের পাকা ঘরের সকল দরজা-জানালা ভেতর থেকে বন্ধ ছিলো। কোন গ্রীলও কাটা কিংবা ভাঙ্গা নেই। ডাকাতির কোন আলামতও দেখা যায়নি। বিষয়টি রহস্যে ঘেরা বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ওই বাসার ভেতর থেকে সব দরজা-জানালা আটকানো ছিলো। গৃহকত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী তার আলমিরা থেকে একটি বা দুটি স্বর্নের চেইন খোয়া গেছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। নিহত ৩জনের নাক এবং কান থেকে রক্ত ঝড়ছিলো। ধারনা করা হচ্ছে কোন আঘাত করে তাদের ৩জনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।