Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত দশ হাজার গরু

এস এম বাবুল বাবর, লক্ষ্মীপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন রোগের (এলএসডি) প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত আড়াই মাসে ভাইরাসজনিত এ রোগে প্রায় ১০ হাজার গরু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে খামারীসহ কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কমলনগর উপজেলায় খামারীসহ সাধারণ কৃষকদের ৩৯ হাজার ৯৯৫টি গরু রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে এ এলাকায় প্রথমে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু দেখা দেয়।
রোগটি ছড়িয়ে পড়লে গত আড়াই মাসে প্রায় ১০ হাজার গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়। রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ এর চিকিৎসা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে আক্রান্ত গরু নিয়ে আসা লোকজনের ভিড় দেখা যায়। এ ভিড় সামলাতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত সবাই চিকিৎসা প্রদান করছেন।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ হাসপাতাল সূত্র আরও জানা যায়, এ পর্যন্ত তারা শুধু হাসপাতালে অবস্থান করেই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত প্রায় ৫ শতাধীক গরুকে চিকিৎসা দিয়েছেন। এর বাইরেও মাঠপর্যায়ে গিয়ে প্রাণী সম্পদ বিভাগের স্টাফরা ৪ শতাধিক গরুকে চিকিৎসা দিয়েছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাসজনিত এ রোগটি মশা-মাছি ও পোকার মাধ্যমে গরুর শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা ১০৩-১০৫ ডিগ্রিতে বেড়ে দাঁড়ায়। শরীরে প্রচ- জ্বর আসে। পাশাপাশি গরুর শরীরের বসন্তের মতো গুটি গুটি চাকা দেখা দেয়। পরে সেখান থেকে পুঁজ জমে ফেটে গিয়ে মাংস খসে পড়ে। গরু খাওয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে দুধ উৎপাদনও কমে যায়।
তারা বলছেন, এ রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য খামার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি আক্রান্ত গরুকে মশা-মাছি থেকে দূরে রাখতে হবে।
উপজেলার হাজিরহাট এলাকার খামারী আবুল কাশেম জানান, তার খামারে ১০টি গরু রয়েছে। গত কয়েক দিনে ওই খামারের বেশ কয়েকটি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত গরুগুলো তিনি আলাদা জায়গায় রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন।
পাটারীরহাট এলাকার এলাকার খামারী আবুল বাসার বাকী জানান, এ রোগে আক্রান্ত চারটি গুরুর চিকিৎসা করাতে তার প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এছাড়াও জেলার রামগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামেও এ রোগ দেখা দিয়েছে।
পৌর মধুপুর গ্রামের আহম্মেদ ফয়সাল জানান, আমাদের দুইটি গরুর শরীরে গুটি বসন্তের মতো দেখা দিলে রামগঞ্জ প্রাণী সম্পদ ডাক্তারকে অবহিত করা হয়। বর্তমানে গরুগুলোর চিকিৎসা চলছে।
কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আক্তারুজ্জামান জানান, আফ্রিকার জাম্বিয়ায় লাম্পি স্কিন রোগের ভাইরাসটির উৎপত্তি। রোগটি আমাদের দেশে এবারই প্রথম দেখা দিয়েছে। এর ভেকসিন না থাকায় আমরা সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন রোধে অবস্থা নির্ণয় পূর্বক এন্টিবায়োটিক দিচ্ছি এবং পাশাপাশি ব্যথানাশক ও এন্টিহিস্টামিন প্রয়োগ করছি। রোগ সামান্য হলে এক থেকে দু’সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। বেশি হলে আরও বেশি সময় লাগে। এ রোগে মৃত্যু হার কম হলেও গরুর ওজন ও দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ায় খামারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাম্পি স্কিন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ