মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : তাপমাত্রা কোথাও মাইনাস ২০ ডিগ্রি! কোথাও বা মাইনাস ১৮! কোথাও আবার মাইনাস ১৩! সেই সঙ্গে প্রবল শৈত্যপ্রবাহ। তারই মধ্যে সবে মেসিডোনিয়া-গ্রিস সীমান্ত পেরিয়েছে ইরাকের পরিবারটি। সাতজনের দলে তিনটি শিশু। তাদের সবার বয়স পাঁচ বছরের নিচে। লাগেজের সঙ্গে তিনজনই তাদের বাবা-মায়ের পিঠে রয়েছে। ওদেরই একজন শীতপোশাক পরেও প্রচ- ঠা-ায় ঠকঠক করে কাঁপছিল। কান্না থামাতে পাশে পাশে হেঁটে যাওয়া তাদের এক আত্মীয় ওই শিশুটিকে বল দেখায়। বরফের বল। বলটি তার হাতে দিতে গিয়েও বারবার কাছ থেকে সরিয়ে নিচ্ছিল। কান্না থামিয়ে হেসে উঠছিল শিশুটি। বল দাও বলে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছিল সে বারবার। কিন্তু, হাতে দেয়া মাত্রই এক ঝটকায় বলটা সে ফেলে দেয়। কারণ? শিশুটি জানতই না স্নো বল ঠা-া হয়। ঠা-া হাতে আরো শীতল স্পর্শে সে তীব্র স্বরে কেঁদে ওঠে। শুধু শিশুটি নয়, তার বাবা-মা; এমনকি মধ্য এশিয়া থেকে আসা এসব শরণার্থীর অধিকাংশেরই বরফের সঙ্গে সরাসরি কোনো পরিচয় এতদিন ছিল না। হয় বই, নয়তো বা খবরের কাগজে ছবি এবং সিনেমার পর্দাই ছিল তাদের বরফ পরিচিতির মাধ্যম। বরফের মধ্যে নায়ক-নায়িকার রোমান্স তাদের আনন্দ দিত। কিন্তু, জীবন বাজি রেখে একটু আশ্রয়ের খোঁজে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ছেড়ে অনেক কষ্টে ইউরোপে পৌঁছানো মানুষের কাছে বরফ এখন একটা ত্রাস। সারাদিন ঝিরঝির করে তুষারপাত হয়েই চলেছে। সেই সঙ্গে ঠা-ার হাওয়ার কামড়। সব মিলিয়ে গোদের ওপর বিষফোঁড়া অবস্থা তাদের। জীবনে প্রথম বরফ দেখার অভিজ্ঞতাটা তাদের কাছে তাই ভয়ংকর হয়েই থাকবে বাকিটা সময়। শুধু জাতিসংঘের আবহাওয়া দপ্তর নয়, অন্য সংস্থাগুলোও বারবার পূর্বাভাসে জানাচ্ছে, তাপমাত্রা আরো নামতে পারে। মাইনাস ২০ ডিগ্রিরও নিচে! এর মধ্যেই বেশ কয়েক কিলোমিটার করে হাঁটতে হচ্ছে শরণার্থীদের। রাত কাটাতে হচ্ছে স্টেশনে। এমনকি, ফুটপাথেও।
সার্বিয়া-মেসিডোনিয়া সীমান্ত থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার হেঁটে সার্বিয়া যাওয়ার ট্রেন ধরতে হয়। প্রবল তুষারপাতের মধ্যেই দিন-রাত এক করে হেঁটে চলেছেন শরণার্থীরা। নারী-পুরুষ-শিশু সবাই হাঁটছে। একটু আশ্রয়ের খোঁজে। ত্বক ফেটে চৌচির। কারো কারো মুখের ত্বক থেকে রক্ত ঝরছে! ফুটিফাটা ঠোঁট। হাত-পায়েরও একই অবস্থা। প্রবল বাতাসের শব্দে নিজেদের মধ্যে কথাও বলা যাচ্ছে না। এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। সীমান্ত পেরোনোর আনন্দে একটা সময় এই জায়গাতেই শরণার্থীদের মুখে হাসিটুকু দেখা যেত। এখন সেই সার্বিয়া-মেসিডোনিয়া সীমান্ত পেরিয়ে কাঁদছেন অনেকে। কষ্টে। ঠা-া সহ্য করতে না পেরে। সীমান্ত পেরিয়ে হেঁটে প্রিসেভো পৌঁছে সেখান থেকে ট্রেন ধরে প্রথমে ক্রোয়েশিয়া। তারপর অন্তিম গন্তব্য জার্মানি পৌঁছানোর আগে স্নোভেনিয়া এবং অস্ট্রিয়া পেরোনো। তাদের সম্বল বলতে কয়েকটা মাত্র ইউরো। তার আগেই ঠা-া না কেড়ে নেয় প্রাণ! এই আশঙ্কা নিয়েই তারা ঠা-ার মধ্যেই এগিয়ে চলেছেন জার্মানির উদ্দেশে। তাও তো তারা ইউরোপ পৌঁছেছেন। এর আগে তো অনেকে সেটাও পারেননি। তুরস্কের বোদরামের সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছিল ছোট্ট আয়লানের লাশ। এর আগেও শরণার্থীদের দুরবস্থা, মৃত্যুর খবর এসেছে। একের পর এক সংকট পেরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজটা চলছেই। এবিপি নিউজ, রয়টার্স অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।