পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ বলে জানিয়েছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নেতারা। আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, বেগম খালেদা জিয়া এতো অসুস্থ যে তিনি কারো সাহায্য ছাড়া চলাফেরা, খাওয়া দাওয়া এমনকি শরীরের তীব্র ব্যথার কারণে ভালোভাবে ঘুমাতে পারেননা। যেকোনো সময় তার শারীরিক পঙ্গুত্ব হয়ে যেতে পারে। তিনি সুচিকিৎসা পেলে এই অবস্থা হতো না । আমরা আশা করি মাননীয় আদালত তাকে তার প্রাপ্য জামিন দিয়ে মুক্ত পরিবেশে তার পছন্দমত হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেবে। অন্যথায় চিকিৎসক সমাজ নিরবে বসে থাকবে না। আপামর জনগণকে সাথে নিয়ে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন গড়ে তুলবে। ড্যাব ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য দেন ড্যাব ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ডাঃ সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপু, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ডাঃ মোঃ আবদুস সেলিম, ড্যাব ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ডাঃ মাসুম বিল্লাহ, ডাঃ গালিব প্রমুখ।
ডাঃ শামীম লিখিত বক্তব্যে বলেন, আগামীকাল ৫ই ডিসেম্বর আদালত বিএসএমএমইউ কতৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের সাবেক তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, যিনি সংসদীয় নির্বাচনে সবসময় সবকটি আসনে জনগনের বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, যিনি সাবেক সেনাপ্রধান, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপাসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট তলব করেছে। ৭৫ বছর বয়স্ক এই মহিয়সী নারী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বরণের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির হাল ধরেন। দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আপোষহীনভাবে নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালে নর্বাচনে জয়লাভ করে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হন এবং বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলেও ১/১১ পরবর্তী সময় তা ব্যাহত হয়। তদপরবর্তী সময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তার ভুমিকা সম্পর্কে আপনারা জানেন।
তিনি বলেন, ১/১১ সরকার কর্তৃক দায়েরকৃত একটি ভিত্তিহীন মামলায় আদালতের রায়ে বর্তমানে তিনি কারাবন্দী আছেন। একইসময়ে একই রকম মামলা যা ক্ষমতসীন দলের নেতা কর্মীদের নামেও ছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং অন্যরাও অধিকাংশ জামিনে আছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বেগম খালেদা জিয়া তার স্বাভাবিক আইনগত অধিকার থেকেও বঞ্চিত।
চিকিৎসক এই নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে Highly Active Deforming, Rheamatoid arthritis, Uncontrolled Diabetes Mellitus, Hypertension, Adhesive capsulitis, Recurrent hyponatraemia and Aneamia রোগে ভুগছেন। এমতাবস্থায় তিনি জেলখানায় সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় এবং স্বাভাবিক পরিবেশ না থাকায় উক্ত রোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে। যেমন- Rheumatoid arthritis, Diabeties রোগের কারণে তার Bilateral frozen shoulder, flexion deformities of both elbows, Wrist, Metacarpophalangeal (MCP) joint and Proxima interphalangeal (PIP) joint, Cervical spondylosis, Lumber spndylosis with Radiculopathy, Bilateral Carpal Tunnel Syndrome, Sjogren’s Syndrome.
উক্ত জটিলতার কারণে তার হাত এবং পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টগুলোসহ শরীরের ভিবিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে এবং তাতে তীব্র ব্যাথা অনুভূত হচ্ছে যার কারনে জয়েন্টগুলি Stiff (শক্ত) এবং deformed (বাঁকা) হতে চলেছে যা কিনা অচিরেই স্থায়ী রুপ ধারন করতে পারে এবং যার কারণে বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা, ওঠাবসা এমনকি নিজ হাতে খাবার পর্যন্তও খেতে পারছেন না।
ডাঃ শামীম বলেন, গত পরশুদিন (সোমবার) ডাক্তাররা বেগম খালেদা জিয়ার ওজন মাপতে বারবার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তীব্র ব্যাথায় তিনি বিছানা থেকে নামতে পারেন নি ।তাছাড়া তিনি ব্যাথার কারণে ঘুমাতেও পারছেন না ভালোভাবে।ভয়ংকর ব্যাপার হলো ওনার ডান পায়ে একটি গুটি উঠেছে যাকে মেডিকেল সায়েন্সের ভাষায় Rheumatic nodule বলে যা highly tender বা স্পর্শ করা মাত্রই তীব্র ব্যাথা অনুভুত হয়।যেটি পরবর্তীকালে vasculitis কিংবা gangrene এ পরিণত হতে পারে ।
তিনি বলেন, ১৯৯৯ সাল থেকে বেগম জিয়া Methotrexate নামক একটি ঔষধ Rheumatoid Arthritis জন্য খাচ্ছেন যা কিনা লিভার, কিডনী সহ রক্তের সকল সেল সমুহ কমিয়ে দিয়ে pancytopenia নামক ভয়ংকর এক অবস্থার সৃস্টি করতে পারে । তাছাড়া ম্যাডামের ডায়াবেটিস কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কারণ একটা ছোট বদ্ধ ঘরে এত দিন হাটাচলার সুযোগ পাননি ।
Sjogren syndrome কারণে চোখ শুকিয়ে যায় তাই দিনে কিছুক্ষণ পরপর artificial tear দিতে হয় ।
ড্যাবের এই নেতা বলেন, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে নিজ পায়ে হেটে জেলখানায় প্রবেশ করেন, নিজে হেঁটে দোতলায় তার নির্ধারিত রুমে যান, এমনকি জেলখানা থেকে এর আগের বার যখন বিএসএমএমইউতে আসেন তখন গাড়ী থেকে নেমে নিজে লিফ্ট পর্যন্ত হেঁটে যান। সময়ের পরিক্রমায় তিনি কিভাবে আজকের অবস্থায় উপনীত হলেন- আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে সঠিক চিকিৎসার অভাবে তিনি ধীরে ধীরে এই অবস্থায় উপনীত হয়েছেন। তিনি সুচিকিৎসা পেলে এই অবস্থা হতো না ।
ডাঃ শামীম আরো বলেন, আমরা জানি যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর সংজ্ঞা অনুযায়ী স্বাস্থ্য মানে হলো- কোনো ব্যাক্তির Physical, Mental, Spiritual wellbeing. কিন্তু উপরোক্ত তিনটি উপাদানের কোনো একটিও বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিপালিত হচ্ছে না বিধায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভীষণ অসুস্থ এবং যথাযথ চিকিৎসা না পেলে যে কোনো সময় তার শারীরিক স্থায়ী পঙ্গুত্ব এবং ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ জনিত বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই যে, এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সম্পুর্ণরুপে সরকারের, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকবৃন্দ ও সরকারকেই বহন করতে হবে। খালেদা জিয়াকে বন্দি করে বিনা চিকিৎসায় আপনি অমানবিক কষ্ট দিচ্ছেন। তার প্রতি এই নিষ্ঠুরতা বিশ্বের স্বৈরশাসকরা যে আচরণ করে সেই আচরণেরই সমতুল্য। জনগণের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ আঁচ করতে পারছেন না বলেই বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি না দিয়ে তাকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার চেষ্টা করছেন। তাই আমরা ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি যে, জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দ্বারা তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক এবং মেডিকেল রিপোর্ট মোতাবেক যে কোনো স্বাধীন বিচার ব্যাবস্থায় এই ধরনের মামলায় জামিন হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।