নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : ঘরোয়া ফুটবলে জায়ান্ট কিলার খ্যাত যে ক’টি দল রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। অতীতে প্রায় সব আসরেই তারা কোনো না কোনো অঘটন ঘটিয়েছে। মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তেমন সাফল্য না পেলেও ফেডারেশন কাপে তাদের অতীত রেকর্ড একেবারেই খারাপ নয়। এর আগে জনপ্রিয় এই টুর্নামেন্টে দু’বার রানার্স-আপ হয়েছে আরামবাগ। ১৯৯৭ সালে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে প্রথমবার খেলে তারা। যদিও তখন ঢাকা আবাহনীর কাছে ৩-১ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় আরামবাগের। শেষবার ২০০১ সালের ফাইনালে খেললেও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের কাছে ২-১ গোলে হারায় দ্বিতীয়বার শিরোপা বঞ্চিত মতিঝিল ক্লাব পাড়ার দলটি। ১৫ বছর পর সেই আরামবাগই এবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠেছে। গতকাল ওয়ালটন ফেডারেশন কাপের প্রথম সেমিফাইনালে আরামবাগ ৩-১ গোলে টিম বিজেএমসিকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে। বিজয়ী দলের হয়ে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড কেস্টর এ্যাকন দু’টি ও স্থানীয় ফরোয়ার্ড জাফর ইকবাল একটি গোল করেন। বিজেএমসির হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ফরোয়ার্ড জাকির হোসেন জিকু। এই জয়ের ফলে আজ আবাহনী ও শেখ রাসেলের মধ্যকার ম্যাচের বিজয়ীদের বিপক্ষে সোমবার ফাইনালে খেলবে আরামবাগ।
এবারের মৌসুমে জাতীয় দলের সহকারী কোচ সাইফুল বারী টিটু আরামবাগের দায়িত্ব নেয়ায় যেন অনেকটাই বদলে গেছে দলটি। ফেডারেশন কাপে গ্রæপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ঢাকা আবাহনী ও কোয়ার্টার ফাইনালে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়ে তারা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছে। এ দু’টি জয়ে সেমিফাইনালেও মনোবলের তুঙ্গে ছিল আরামবাগের খেলোয়াড়দের। তাই কাল শেষ চারের প্রথম ম্যাচে অনেকটা সহজ জয়ই তুলে নেয় তারা। বিজেএমসির বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে খেলতে থাকে আরামবাগ। তবে ম্যাচের ধারায় বিপরীতে প্রথম গোলটি পায় বিজেএমসিই। ২৫ মিনিটে সতীর্থর কাছ থেকে লম্বা থ্রু পাস পেয়ে বল নিয়ে বিজেএমসির বক্সে ঢুকে পড়েন আরামবাগের মিড ফিল্ডার মো. আবদুল্লাহ। কিন্তু বলের গতি বেশি থাকায় সুবিধা করতে পারেননি তিনি। তার দুর্বল শট গ্রিপে নেন বিজেএমসি গোলরক্ষক আরিফুজ্জামান হিমেল। তবে ৩৭ মিনিটে এগিয়ে যায় বিজেএমসি। এ সময় ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক করে তারা। বক্সে বল পেয়ে জোরালো শটে আরামবাগের গোলরক্ষক মিতুল হাসানকে পরাস্ত করেন ফরোয়ার্ড জাকির হোসেন জিকু (১-০)। এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বিজেএমসি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে গোলশোধে মরিয়া হয়েই লড়ে আরামবাগ। তারা একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে তুলে বিজেএমসির রক্ষণ ভাগকে। ফলে সফলতাও আসে। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে আরামবাগ মিড ফিল্ডার অনুচং মার্মাকে অবৈধভাবে বাধা দেন বিজেএমসি মিড ফিল্ডার শংকর দাস। রেফারি আজাদ রহমান পেনাল্টির নির্দেশ দিলে তা থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন আরামবাগের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড কেস্টার অ্যাকন (১-১)। ভাগ্য বদল শুরু আরামবাগের। এবার এগিয়ে যাওয়ার পালা। মিনিট পাঁচেক পর বামপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে দর্শণীয় শটে হিমেলকে পরাস্ত করেন সেই অ্যাকন (২-১)। তবে এর পরই হঠাৎ আরামবাগের স্বপ্নটা যেন ফিকে হতে শুরু করে রেফারি আজাদ রহমানের দেয়া পেনাল্টির বাঁশিতে। এ সময় আবদুল্লাহ পারভেজের ফ্রি কিকে কিংসলে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় বিজেএমসি। কিন্তু ক্যামেরুনের ডিফেন্ডার বাইবেকের শট সাইড পোস্টে লেগে ফেরত আসায় গোল বঞ্চিত হয় বিজেএমসি। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে আরো একটা সুযোগ নষ্ট করেন আবদুল্লাহ। বল নিয়ে বিজেএমসির বক্সে ঢুকেন ঠিকই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলে শট নিলে তা চলে যায় মাঠের বাইরে। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে বক্সে ঢুকে বাম পায়ে বল জালে ঠেলে দেন আরামবাগ ফরোয়ার্ড জাফর ইকবাল (৩-১)। আর তাতেই জয় নিশ্চিত হয় মতিঝিল পাড়ার দলটির। সেই সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠেন আরামবাগের ফুটবলাররা। শেষ পর্যন্ত জয়ের আনন্দেই মাঠ ছাড়েন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।