Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষণকারীদের প্রকাশে পিটিয়ে মারা উচিত : জয়া বচ্চন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:০৪ পিএম

সম্প্রতি ভারতের হায়দরাবাদে তেলেঙ্গানায় এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর নির্মমভাবেহত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো ভারত প্রতিবাদে উত্তাল। তার প্রভাব পড়েছে ভারতের সংসদেও। এর প্রভাব এতটাই যে, সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভা সাংসদ জয়া বচ্চন বললেন, ধর্ষণকারীদের জনসমক্ষে পিটিয়ে মেরে ফেলা উচিত। কারণ, এমন কঠোর শাস্তি দিতে হবে যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
জয়া বচ্চন বলেন, সরকার আইন পাশ করে ধর্ষণকান্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তারপরেও নিরীহ মেয়েরা কি সুবিচার পেয়েছে? নির্ভয়াও কি সুবিচার পেয়েছিল?
তিনি বলেন, এই সংসদে দাঁড়িয়ে এ ধরনের ঘটনা নিয়ে আমি কতবার যে বলেছি, ক্ষোভ প্রকাশ করেছি তার ইয়ত্তা নেই। তা সে নির্ভয়া কান্ড হোক, কাঠুয়া কান্ড আর এখন বলছি তেলেঙ্গানার ঘটনা নিয়ে। আমার মনে হয়, জনগণ এখন সরকারের থেকে একটা সুস্পষ্ট জবাব চাইছে।
তিনি বলেন, শিশু এবং মহিলাদের জন্য এই দেশ নিরাপদ নয়। পাশাপাশি আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তেলঙ্গানা ধর্ষণ তথা হত্যাকান্ডে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান ওই সাংসদ।
তিনি বলেন, হায়দরাবাদে যেদিন এই নারকীয় ঘটনা ঘটে, তার আগের দিনই প্রায় একই রকম কান্ড হয়েছিল। আমার প্রশ্ন হলো, পুলিশ তথা নিরাপত্তা বাহিনীর কি কোনও দায়িত্ব নেই? কেন তাঁদের দায়বদ্ধ করা হবে না। কেন ঘটনা ঘটার পর তবেই সবাই নড়েচড়ে বসবে?
এদিন রাজ্যসভা অধিবেশন শুরু হওয়ার পর সভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুও হায়দরাবাদের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ধর্ষণকারীদের কোনও ক্ষমা নয়। শুধু আইন করেই এই বিকার শোধরানো যাবে না। এ ব্যাপারে প্রতিকারের পথ সবাই মিলে খুঁজতে হবে। যা অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যেই দেরি হয়ে গিয়েছে।
রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদও বলেন, গোটা দেশ মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সামাজিক রোগের প্রতিকারের পথ বের করতেই হবে। এমন পরিবেশ দেশে গড়ে তুলতে হবে যাতে এ ধরনের ঘটনাই না ঘটে।
বাস্তবতা হলো অতীতে নির্ভয়া কান্ডের পরেও সংসদে এমন আলোচনা হয়েছিল। ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন দলমত নির্বিশেষে সাংসদরা। তারপর এ ব্যাপারে আইন সংশোধনের আগে একটি সংসদীয় কমিটিও গড়া হয়েছিল। যে কমিটিতে এমনকি ধর্ষকের যৌনাঙ্গ ছেদ করে দেওয়ার সুপারিশ পর্যন্ত এসেছিল। শেষমেশ আইন সংশোধন করে বলা হয়, ধর্ষণের শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত হতে পারে।
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ হলো, তখনও বিতর্ক ছিল যে, কঠোর শাস্তির বিধান দিলেই কি এ ধরণের ঘৃণ্য অপরাধ বন্ধ করা যাবে। সেটাই কি যথেষ্ট পদক্ষেপ? কারণ দেখা যাচ্ছে, তারপরেও ধর্ষণের ঘটনা কমেনি। নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ থেকে শুরু করে সমস্ত রকম ঘটনাই ঘটছে।

সাময়িক বরখাস্ত ৩ পুলিশ
এই নক্কারজনক ঘটনায় তেলেঙ্গানায় ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয় এবং সেই বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই ২০ থেকে ২৬ বছরের ৪ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং তদন্তে গড়িমসির অভিযোগে তিন পুলিশ কর্মীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
তবে জয়া বচ্চনই একা নন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যসভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অন্য সাংসদরাও। কংগ্রেস সাংসদ আমী যাজ্ঞিক “জরুরি ভিত্তিতে সামাজিক সংস্কার” করার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে একজোট হয়ে পদক্ষেপ করার দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জয়া বচ্চন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ