মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : নজিরবিহীন খাদ্যসঙ্কটে ভেনিজুয়েলা। অভূতপূর্ব, অবিশ্বাস্য অবস্থা হুগো শ্যাভেজের দেশে। খাবারের জন্য হাহাকার। দেশে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে খাবার। তার জোগান এত কম এবং দাম এত বেশি যে সাধারণ মানুষ খাবার কিনতে পারছেন না। তাই শহরে শহরে একই ছবি। কয়েক দিন অন্তর বাজার লুট করার চেষ্টা। সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ। খাবার না পেয়ে মার খেয়ে বাড়ি ফেরা। আর লুটতরাজের চেষ্টা সফল হলে বাজার থেকে আটা, ভুট্টা, নুন, চিনি, পানি, আলু, আর যা কিছু হাতের কাছে পাওয়া যায়, সব কিছু লুট করে নিয়ে যাওয়া। খবরে বলা হয়, এটিএম বুথে টাকা ভরার জন্য ব্যাঙ্কের যে সব অদ্ভুতদর্শন গাড়ি সশস্ত্র রক্ষী নিয়ে টহলদান করে, এখন প্রায় সেই রকম গাড়িতে করেই খাবার পাঠানো হচ্ছে শহরগুলোতে। বন্দুকধারী রক্ষী ছাড়া খাবারের ট্রাক রাস্তায় নামানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন শহরের সুপার মার্কেট ঘিরে মোতায়েন করা হয়েছে সেনা। সশস্ত্র বাহিনী ঘিরে রেখেছে বেকারিগুলো। তা সত্ত্বেও উন্মত্ত জনতা মাঝেমধ্যেই হামলে পড়ছে দোকানে, বাজারে, বেকারিতে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছুড়তে হচ্ছে পুলিশকে। কেউ জখম হচ্ছেন, খাবার ছিনিয়ে নেয়ার দাঙ্গায় কারও মৃত্যু হচ্ছে। তবু খাবার মিলছে না। সবচেয়ে বেশি খনিজ তেলের মালিক যে দেশ ভেনিজুয়েলা, খাবার নিয়ে এখন সে দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতিনিয়তই এমন দাঙ্গা হচ্ছে। দেশটার নাম ভেনিজুয়েলা। লাতিন আমেরিকান দেশটার মাটির নীচে যে পরিমাণ খনিজ তেল জমে রয়েছে, আরব দেশগুলোতেও তত তেল নেই। গোটা বিশ্বে তেল বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে যে রাষ্ট্রগোষ্ঠী, সেই ওপেক-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ভেনিজুয়েলা। কিন্তু চূড়ান্ত আর্থিক অব্যবস্থায় তীব্র খাদ্যসঙ্কট গোটা দেশে। সাধারণ মানুষের হাতে খাবার কেনার পয়সা নেই। অধিকাংশ পরিবার এক বেলা খেয়ে কাটাচ্ছে। কোনো পরিবারে আবার খাবার পাওয়ার রুটিন তৈরি হয়েছে, এক একজন সদস্যের জন্য এক একদিন খাবার বরাদ্দ। অন্যদের জন্য উপোস। বিগত দু’সপ্তাহে ভেনিজুয়েলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ৫০টি দাঙ্গার খবর এসেছে। শ’য়ে শ’য়ে খাবারের দোকানে হামলা হয়েছে, সুপার মার্কেট লুট হয়েছে, গণ-লুটতরাজ হয়েছে। তার সাক্ষী হয়ে রয়েছে দোকানপাটের ভাঙা দরজা, বন্ধ হয়ে যাওয়া বেকারি, সুপার মার্কেটের ফ্লোরে উল্টে পড়ে থাকা ফাঁকা শেল্ফ। দাঙ্গায়, সশস্ত্র বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত পাঁচ জনের। যেখানে যেখানে এমন ঘটনা ঘটছে, সেই সব এলাকাতেই এখন একই ছবি। ভাঙা ফ্রিজার আর ফাঁকা শেল্ফ নিয়ে খাঁ খাঁ করছে বাজারগুলো। সরকারি ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত দোকান খুলতে রাজি নন ব্যবসায়ীরা। অনেকে দোকান খোলার মতো পরিস্থিতিতেও নেই। কেন এই দশা ভেনিজুয়েলার? ওয়াকিবহাল মহল বলছে, শ্যাভেজের উত্তরসূরি নিকোলাস মাদুরোর সরকার অর্থব্যবস্থাকে সামলাতেই পারেনি। ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে গিয়েই নাকি এই অবস্থা। ভেনিজুয়েলার রাজস্বের সিংহভাগ আসত খনিজ তেল বিক্রি করে। তেলের দাম কমিয়ে দিয়ে বিপুল রাজস্বহানি ডেকে এনেছে সরকার নিজেই। দেশে মুদ্রাস্ফীতি ক্রমশ বেড়েছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়তেই থেকেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে অর্থব্যবস্থা নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে সরকারের। সারের অভাবে চাষ বন্ধ। মাইলের পর মাইল ফাঁকা পড়ে রয়েছে চাষের জমি। চিনি মিলগুলি বন্ধ। ভুট্টা, চাল-সহ যে সব শস্য এক সময় রফতানি করত ভেনিজুয়েলা, সে সব এখন আমদানি করতে হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি করার মতো সামর্থ্যও ক্রমশ হারাচ্ছে মাদুরো সরকার। পাঁচ শিশুর মা খাবার কেনার জন্য গোটা বাজার চষে হতোদ্যম। এপিবি, রয়টার্স, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।