পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন কূূটনৈতিক জোন গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ৭ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত একজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। ৫১ কার্যদিবস শেষে এ রায় প্রদান করা হয়েছে। রায় আদালতে পর্যবেক্ষণে জাপানের একটি প্রতিনিধি দলসহ বিদেশিরাও উপস্থিত ছিলেন। রায়ের সময় আট আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আদালতে তোলার সময় আসামি আসলাম হোসেন ভি চিহ্ন দেখান। তাদের মধ্যে অধিকাংশের মুখেই হাসি ছিল। আসামি জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীও হাসিমুখে ছিলেন। এদিকে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এ জঙ্গি হামলার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত পাড়াসহ রাজধানী ঢাকা ও সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আদালত চত্বর ও এর আশপাশের এলাকায় র্যাব, পুলিশ ও সাদা পোশাকের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নজরদারিতে থাকেন।
রায় শুনে তাদের কারও চেহারাতেই অনুশোচনার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। তাদের একজন উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, ‘আল্লাহু আকবর, আমরা কোনো অন্যায় করিনি।’ একটি ধারায় মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেয়া হয়। আরও দুটি ধারায় তাদের কয়েকজনে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদের কারাদন্ড।
বিচারক তার রায়ে বলেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্য দিয়ে আসামিরা ‘জঙ্গিবাদের উন্মুত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ’ ঘটিয়েছে। সাজার ক্ষেত্রে তারা কোনো অনুকম্পা বা সহানুভূতি পেতে পারে না। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সাত আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আদেশ দেয়া হয় রায়ে। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা আরেক আসামি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেয়া হয়েছে রায়ে। তাকে রায় শুনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-গাইবান্ধার জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, নওগাঁর আসলাম হোসেন ওরফে আসলামুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ওরফে র্যাশ, কুষ্টিয়ার আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, জয়পুরহাটের হাদিসুর রহমান ওরফে সাগর, বগুড়ার রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, একই জেলার মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও রাজশাহীর শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ। চাপাইনবাবগঞ্জের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে পুলিশ
গতকাল পুলিশ সদর দফতরে কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। সাত আসামি সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছে। আদালত একজনকে খালাস দিয়েছেন। যিনি খালাস পেয়েছেন, তার বিষয়ে আমরা আপিল করবো।
তিনি বলেন, মামলার তদন্তে যে ৮ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল তার ভিত্তিতে আদালত ৭ জনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে খালাস দিয়েছেন।
এ রায় সন্ত্রাসীদের জন্য একটি মেসেজ-মনিরুল
হলি আর্টিজান মামলার রায় সন্ত্রাসীদের জন্য একটা মেসেজ উল্লেখ করে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা একটা মেসেজ পেলো। ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মকান্ড ঘটাতে কেউ সাহস পাবে না।
আদালতের আদেশ
আদালত আদেশে উল্লেখ করেন-জাহাঙ্গির আলম, আসলাম হোসেন র্যাশ, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, আব্দুল সবুর খান, শরিফুল ইসলাম খালেক ও মামুনুর রশীদ রিপনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ৬ (২) (অ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হলো এবং তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হলো এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হলো। তাদের মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হলো।
আদালত রায়ে আরও উল্লেখ করেন, আসামি জাহাঙ্গীর আলম, আসলাম হোসেন র্যাশ, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, মো. আব্দুল সবুর খান ও শরিফুল ইসলাম খালেককে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ৭ ধারায় দোষীসাব্যস্তক্রমে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হলো। অনাদায়ে আরও দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হলো।
আদালত বলেন, আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন, আসলাম হোসেন র্যাশ, মো. আব্দুল সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, শরিফুল ইসলাম খালেক ও মামুনুর রশীদ রিপনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ৮/৯ ধারায় দোষীসাব্যস্ত করা হলো। এবং উক্ত আইনের ৮ ধারায় প্রত্যেককে ছয় মাসেন সশ্রম কারাদন্ড এবং উক্ত আইনের ৯ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হলো। এবং অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হলো। আসামি মামুনুর রশীদ রিপনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ৭ ধারায় অভিযোগ, আসামি মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন- ২০০৯ এর ৬ (২) (অ)/৭/৮/৯/১০/১১/১২/১৩ ধারার অভিযোগ এবং আসামি জাহাঙ্গির হোসেন, আসলাম হোসেন র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, মো. হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, শরিফুল ইসলাম খালেক ও মামুনুর রশীদ রিপনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ১০/১১/১২/১৩ ধারার অভিযোগ হতে বেকসুর খালাস প্রদান করা হলো। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ এ ধারা মতে আসামিদের বিচারকালীন হাজতবাস দন্ডাদেশ হতে কর্তন হবে। দন্ডপ্রাপ্ত হাজতি আসামিগণের বিরুদ্ধে সাজাপরোয়ানা ইস্যু করা হোক। জব্দকৃত অস্ত্রগুলো রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হলো এবং ধ্বংসযোগ্য আলামত বিধি মোতাবেক বিনষ্ট করার নির্দেশ প্রদান করা হলো।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মৃত্যুদন্ডাদেশ হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃৃক অনুমোদনের জন্য অত্র মামলার নথি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগে প্রেরণ করা হোক। অত্র রায়ের অনুলিপি বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা বরাবর প্রেরণ করা হোক।
আদালত রায়ে আরও উল্লেখ করেন, আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন, আসলাম হোসেন র্যাশ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, মো. আব্দুল সবুর খান ও শরিফুল ইসলাম খালেককে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ৭ ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হলো। অনাদায়ে আরও দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হলো।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, বাংলাদেশ তথাকথিত জিহাদ কায়েমের লক্ষ্যে জননিরাপত্তা বিপন্ন করার এবং আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএস এর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য জেএমবির একাংশ নিয়ে গঠিত নব্য জেএমবির সদস্যরা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নারকীয় ও দানবীয় হত্যাকান্ড ঘটায়। নিরপরাধ দেশি-বিদেশি মানুষ যখন রাতের খাবার খেতে হলি আর্টিজান বেকারিতে যায়, তখনই আকস্মিকভাবে তাদের ওপর নেমে আসে জঙ্গিবাদের ভয়াল রূপ। জঙ্গি সন্ত্রাসীরা শিশুদের সামনে এ হতাকান্ড চালায়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য জঙ্গিরা নিথর দেহগুলোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় হলি আর্টিজান বেকারি।
আদালত এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা
রায়কে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত এলাকায় নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়। বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রায় উপলক্ষে আদালত এলাকায় র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শুধু আদালত নয়, পার্শ্ববর্তী এলাকায়ও সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পুরো সড়কে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে পুলিশ। সেসঙ্গে সাদা পোশাকে তৎপর ছিল গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। বুধবার সকাল থেকেই পুরো আদালত এলাকা খালি করে রাখা হয়। গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া আদালতে প্রবেশে তল্লাশি চালায় র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। সকাল ১০টা নাগাদ আসামিদের প্রিজনভ্যানযোগে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ ডিভিশনের (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজান রেস্তোরায় জঙ্গি হামলার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আদালতপাড়া ও এর আশ-পাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ। আদালত প্রাঙ্গণে জনসাধারণের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। সবাইকে তল্লাশির মাধ্যমে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তোরায় প্রবেশ করে হামলা চালায় ৫ জঙ্গি। তারা ভেতরে থাকা সবাইকে জিম্মি করে নির্মম হত্যাকান্ড চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জঙ্গিদের হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। জঙ্গিরা নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছিলো ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে, যাদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি।
পরে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে রোহান ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, মীর সামিহ মোবাশ্বের, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল নামে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। সেখান থেকে ১৭ বিদেশি ও তিন জন বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার করা হয়। জঙ্গিরা তাদের কুপিয়ে ও গুলি করে নৃশংস কায়দায় হত্যা করে।
বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই ঘটনার দু’দিন পর গুলশান থানার এসআই উত্তম কুমার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। দু’বছর ২২ দিন তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের ইন্সপেক্টর হুমায়ুন কবীর সন্ত্রাস বিরোধী আইন-২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) এর ৬(২)/৭/৮/৯/১০/১২/১৩ ধারায় আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। চার্জশিটে অভিযুক্ত ১৩ জন ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে পরবর্তী সময় পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছেন। জঙ্গি হামলার অভিযোগ থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেজাউল হাসনাত করিম ও কানাডার টরেন্টো ইউনিভার্সিটির ছাত্র তাহমিদ হাসিব খানকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ঘটনা সম্পর্কে জানেন কিংবা ঘটনা দেখেছেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জানেন- এরকম ১১৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন সাক্ষী ঘটনার দিন হলি আর্টিজানের ভেতর অবস্থান করছিলেন। তাদেরকে কমান্ডো বাহিনী, পুলিশ ও র্যাব উদ্ধার করে। রায় ঘোষণার দিন ধার্য করার আগে এই মামলার ৭৫টি আলামত আদালত পর্যবেক্ষণ করেন।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বদলির আদেশ দেন। ওই হামলার কারণ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে মামলার চার্জশিটে বলা হয়, এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হলো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরী। ভয়াবহ এই হামলায় চিহ্নিত ২১ জনের মধ্যে ৫ জন সরাসরি অংশ নেয়। বাকিরা হামলার পরিকল্পনা, সমন্বয়, প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র-বোমা সংগ্রহসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত ছিলো। হামলার মূল প্রশিক্ষক (মাস্টার ট্রেইনার) মেজর (চাকুরিচু্যুত) জাহিদ কিংবা তানভীর কাদেরি, নুরুল ইসলাম মারজান ছিলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসামি। গুলশান হামলার জন্য বগুড়ার দুই জঙ্গিকে নিয়োগ করে রাজীব আর বসুন্ধরায় বাসা ভাড়া ও জঙ্গিদের উদ্বুদ্ধও করে সে। জঙ্গি সাগর সীমান্তের ওপার থেকে আনা অস্ত্র ঢাকায় মারজানের কাছে পৌঁছায়। বাশারুজ্জামান মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকে দু’দফা হুন্ডির মাধ্যমে আসা ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করে এবং সেই টাকা গুলশান হামলায় ব্যবহৃত হয়।
যারা এই হামলা চালিয়েছিলো তারা ৫ থেকে ৬ মাস ধরে পরিকল্পনা করেছিলো। সেখানে হামলা চালানো জঙ্গিদের উদ্দেশ্য ছিলো আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আর সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেও জঙ্গিরা এই হামলা চালিয়েছিলো। অভিযানে নিহত হলি আর্টিজানের পাচক সাইফুল ইসলামকে শুরুতে সন্দেহের তালিকায় রাখা হলেও তার সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ তদন্তকারীরা পাননি। এমনকি জঙ্গি হামলার পর আটক হলি আর্টিজানের ডিশ ক্লিনার জাকির হোসেন শাওনের কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
হামলায় অংশ নেয়া নব্য জেএমবির ৫ জঙ্গি নিবরাস ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল নিহত হয় ওই অভিযানে। আর পরে জঙ্গিবিরোধী বিভিন্ন অভিযানে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরী, মেজর (চাকরিচ্যুত) জাহিদুল ইসলাম, তানভীর কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সারোয়ার জাহান, বাসারুজ্জামান চকলেট ও ছোট মিজান নিহত হন। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।