নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আই এইচ বাপ্পি : কে বলে মেসি দেশের জন্য খেলে না! তাদের জবাব দিতেই হয়তো এবারের কোপায় মেসি আরো পরিণত, আরো দুর্বার, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, অথচ শান্ত, অবিচল। শিরোপা যেন এবার তাঁর চায়-ই চায়। তাঁর প্রেরণায় লক্ষ্যে অবিচল পুরো আর্জেন্টিনা শিবিরও। ৫ ম্যাচে ১৮ গোল করে ফাইনালে পা রাখা কি তারই ঘোষণা নয়? গতকাল যুক্তরাষ্ট্রকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের প্রতিপক্ষকেও যেন একটা বার্তাই দিয়ে রাখল লিওনেল মেসির দল। যে লক্ষ্য পূরণে ব্যক্তিগত রেকর্ডটাও যেন মেসির কাছে গৌণ। তাঁর যে আমৃত্যু ক্ষুধাÑ শিরোপা।
ম্যাচের বয়স যখন ৩২ মিনিট। তখনই মেসির সেই রেকর্ডের সাক্ষি হয় হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়াম। বল পায়ে ঝড়ের বেগে যুক্তরাষ্ট্রের ডি বক্সে ঢুকছিলেন আর্জেন্টাইন আধিনায়ক। তাঁকে থামাতে অবৈধ পথই বেছে নিতে হল স্বাগতিক ডিফেন্ডারদের। ফাউল করেই থামানো হল তাঁকে। ঠিক যেমনটি আগের দিন বলছিলেন কোচ জেরার্ডো মার্ঠিনোÑ মেসিকে থামাতে দলগুলো ন্যায়-অন্যায় বহু পথ বেছে নেয়, কিন্তু থামাতে পারে কি?
এদিনও থামানো যায়নি ফুটবল জাদুকরকে। আগত্য ফাউলে প্রাপ্ত ফ্রি-কিক থেকে যে গোলটা করে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুকে ছাড়িয়ে আর্জেন্টিনার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন, তাতে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকও হয়তো অবিভুত। এমন শৈল্পিক গোল দেখার ভাগ্যও বা ক’জনের ভাগ্যে জোটে! ৩০ গজ দূর থেকে এমনভাবে বল ভাসিয়ে জালে পাঠালেন, সেখানে ব্রেডলি গুজান কেন বিশ্বের যে কোন গোলরক্ষকেরই সাধ্যাতীত এই বল প্রতিহত করা। যেন কাটা কম্পাস দিয়ে মেপে নিখুঁত লক্ষ্যে বলকে অবতরণ করানো। আর্জেন্টিনার স্কোরবোর্ড তখন ২-০। এর আগে পরে আরো দুটি গোল করিয়েছেন ৫ বারের বিশ্বসেরা। আগের ম্যাচের মত এই ম্যাচেও জোড়া গোল করেন গঞ্জালো হিগুইন।
কি ভাবছিলেন মেসি ঐ অবিশ্বাস্য ফ্রি-কিকের সময়? “আমি দাঁড়িয়ে সবকিছু বিশ্লেষণ করে দেখছিলাম। ভালো একটা স্ট্যান্স নিতে চেয়েছি, যেন রানআপের সময় পিছলে না যাই। এরপর প্রতিরোধ দেয়ালটা দেখলাম, দেখলাম গোলকিপার কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। তারপর ঠিক করলাম বলটা কোথায় পাঠাব।” বলছিলেন মেসি। এই শট দিয়েই দেশের হয়ে গাবিগোলের করা ৫৪ গোলকে পিছনে ফেলে দেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ (৫৫টি) গোলদাতার আসনে বসেন মেসি। কিন্তু লক্ষ্য যার আরো বড় সেখানে এই রেকর্ডও যেন তাঁর কাছে মনে হল তুচ্ছ, “এত দূর আসতে পেরে আমি আনন্দিত, রেকর্ডটা পেয়েও। তবে আমরা এখানে এসেছি অন্য কিছুর জন্য।” তবুও এই অর্জনে স্বতির্থদের অবদানের কথা স্বীকার করে বার্সা তারকা বলেন, “স্বতীর্থদের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এর জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।” কোচ জেরার্ডো মার্টিনোও খুশি রেকর্ডটা বিশ্ব সেরা খেলোয়াড়ের দখলে থাকায়। তিনি বলেন, “এটা দারুণ যে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা।”
২০১৪ বিশ্বকাপ ও ২০১৫ সালের কোপার ফাইনালের পর আবারো এক ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা। আগামী রোববারের ফাইনাল থেকে এবার আর নিশ্চয় খালি হাতে ফিরতে চান না মেসি। কিন্তু প্রত্যাশার যে বাড়তি চাপ গত দুই ফাইনালে তাদের ডুবিয়েছিল, এবার তা থেকে দলকে মনে হচ্ছে অনেকটা মুক্ত। মেসির দর্শনটাও এবার মনে হচ্ছে ভিন্ন, “ফাইনালে হয় আপনি জিতবেন, নয়তো হারবেন। টানা তিনটা ফাইনালে উঠে আসাও কিন্তু অনেক বড় ব্যাপার, এর কৃতিত্ব দিতে হবে। আশা করি এবার আমরা জিতব।”
ফাইনালে মার্টিনোর দলের এবারো কি প্রতিপক্ষ চিলি? যাদের কাছে গতবার স্বপ্নবঙ্গ হয়েছিল? না কি ২০০১ সালের চ্যাম্পিয়ন কলম্বিয়া? তা হয়তো জেনে গেছেন ইতোমধ্যেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।