Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ-ভারত নতুন যুগে

দিবা-রাত্রির টেস্ট গোলাপি বলে

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার দুই দশক পর আবারও নতুন অভিষেকের সামনে বাংলাদেশ। শুধু বাংলাদেশেরই নয় ১৯৩২ সালে প্রথম টেস্ট খেলা ভারতীয় দলেরও অভিষেক। লাল বলের পরিবর্তে গোলাপি বল এবং দিনের টেস্টের বদলে দিবা-রাত্রির টেস্ট তৈরি করেছে আলোড়ন। লর্ডসের আদলে ঘণ্টা বাজিয়ে আনুষ্ঠানিকতার শুরু হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর হাত ধরে। উপস্থিত থাকবেন ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সব সদস্যরা। আয়োজন থেকে শুরু করে সবাইকে বরণ করার গুরুদায়িত্ব থাকবে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির কাঁধে। সবকিছুই গোলাপি বলকে কেন্দ্র করেই।

ভারতের অন্যসব রাজ্যের চেয়ে কোলকাতা গুণে অভিন্ন থাকলেও রংয়ে বৈচিত্রপূর্ণ। পুরো শহরজুড়ে গোলাপি রংয়ের আধিক্য। কোলকাতার নাম পিংক সিটি রাখলেও বেমানান হবে না। সেই পিংক সিটিতেই আজ দিবা-রাত্রির টেস্টে ইডেন গার্ডেনে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। সকালে দ্রুত ঘুম থেকে জেগে টিভি স্ক্রিণের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন পড়বে না এই টেস্টে। কেননা বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

রমরমা পরিবেশ ইডেনে গার্ডেন ও তার চারপাশে। গোলাপিপাড়ার বাসিন্দারা এই টেস্টের মাহাত্ত্ব ও মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুণে। তাছাড়া কোলকাতার যুবরাজ যখন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের কর্তা, উৎসবের আমেজ তৈরি হওয়াটা ছিল অনুমিতই। তবে ম্যাচকে উপলক্ষ করে এত আয়োজন কি শেষ পর্যন্ত স্বার্থক হবে কিনা, তাও রাখে প্রশ্নের দাবি। ইন্দোরে সিরিজের প্রথম টেস্টে মাত্র পৌনে তিনদিন টিকে থাকতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এবার নতুন আঙিকে সম্পূর্ণ ‘অপ্রস্তুত’ পরিস্থিতিতে কি করবে মুমিনুলের দল? ভাবাচ্ছে দলের কোচ, খেলোয়ার ও সমর্থকদের। মুখে কিছু না বললেও হুট করেই একটা গোলাপি বলের টেস্ট নামার আগে অস্বস্তি প্রকাশ করছিলেন ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও একটি প্রস্তুতি ম্যাচের আক্ষেপ লুকান নি। সবশেষে গতকালও বাংলাদেশ কোচের কণ্ঠেই সুর মিলিয়েছেন ভারতীয় অধিনাযক বিরাট কোহলিও। তবে যেহেতু প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়নি, দিনশেষে সবই বৃথা আলাপন।

প্রতিপক্ষ হিসেবে যেকোন ফরম্যাটেই ভারত শক্তিশালী। তাছাড়া বাংলাদেশ দলের জন্য বড় সংস্করণের ম্যাচ মানেই অস্বস্তি। যার প্রমাণ মেলে খুব কাছ থেকেই। র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ভারত আর বাংলাদেশ এখনও পড়ে আছে নয় নম্বরে। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরে চারটি টেস্ট ম্যাচের প্রতিটিতেই হার নিয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। জয় খুঁজতে গেলে ওল্টাতে হবে ২০১৮ সালের রেকর্ড বই। এতকিছুর ভীড়ে খেলাটা যেহেতু ভারতের মাটিতে, তাই পাঠকের জিজ্ঞাসা থাকতে পারে কবে বিদেশের মাটিতে টেস্ট জিতেছে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা? হিসেব বলছে, ১৭ ম্যাচ আগে। ২০১৭ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগারদের জয়টি ছিল ৪ উইকেটে। এর আগের জয়টি খুঁজতে হলে চলে যেতে হবে প্রস্তর যুগে। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে তাদের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।

সাদা পোষাকে ইনিংসে বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ রান ৬৩৮। আর ভারতের বিপক্ষে সেটি ৪০০। সেটা ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ২০০০ সালের কথা। বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচের গল্প। এরপরও তাদের বিপক্ষে নয়বার লড়াই করলেও টপকে যেতে পারেনি সেই সংগ্রহ। কয়েকবার তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ দাঁড় করালেও তাতে হার এড়ানো কিংবা ড্র করা সম্ভব হয়নি। মেনে নিতে হয়েছে অসহায় আত্মসমর্পণ। ভারতের বিপক্ষে ১০ টেস্ট ম্যাচের ৮টিতেই হার। বাকি দুটি ড্র। সেই দুটি ড্র’ও এসেছে বৃষ্টির কল্যাণে। বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় বাংলাদেশের চাষাবাদ বৃষ্টি নির্ভরতা কমালেও এখনো সেই ধাপ পেরুতে পারেনি দেশের ক্রিকেট।

অত্যন্ত আশাবাদীদের পক্ষেও হয়তো এই টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে ভালোকিছুর স্বপ্ন দেখা কঠিন। তবে অন্তত লড়াই করুক বাংলাদেশ দল। এ প্রত্যাশাটা থাকবে সবারই।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গোলাপি বলে

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ