রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
প্রায় ৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক ও জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ২২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও হাসপাতালটিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৫ জন চিকিৎসক। দেশের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারের সংখ্যা, জনসংখ্যার অনুপাতে একজন চিকিৎসকের বিপরীতে চিকিৎসা প্রার্থী মানুষের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৭৯ জন হলেও বাউফল হাসপাতালের ক্ষেত্রে এই অনুপাত একজন চিকিৎসকের বিপরীতে চিকিৎসাপ্রার্থী মানুষের সংখ্যা প্রায় একলাখ। আর এতে প্রকৃত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারণ। এমনই অভিযোগ বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের।
অবশ্য আর্থিকভাবে স্বচ্ছলরা চিকিৎসক না পেয়ে রোগী নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে পাড়লেও গরিব অসহায় রোগীরা চিকিৎসক না পেয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য আসেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকে প্রায় শতাধিক রোগী। রোগীদের সেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। চিকিৎসক সংকটের কারণে জরুরি বিভাগে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকল অফিসার দিয়ে।
জানা যায়, ১৯৬৫ সালে ১১টি শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৮২ সালে উন্নীত হয় ৩১শয্যায়। ২০১৩ সালে বর্তমান সরকার হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে। ৫০শয্যা হাসপাতালের জনবল কাঠামো অনুমোদিত হয় ২০১৭ সালে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৫০ শয্যার ১টি হাসপাতালে চিকিৎসক প্রয়োজন ২২ জন। কিন্তু ৫০শয্যা বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে বর্তমানে হাসপাতলে চিকিৎসকের ২২টি পদ রয়েছে। যার মধ্যে ১৭টি পদই শূন্য। কনসালটেন্ট ৪জনের বিপরীতে সবপদ শূন্য রয়েছে। এবং ১৭জন মেডিকেল অফিসারের বিপরীতে রয়েছে ৫ জন। নার্সের দুটি এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১৮টি পদ খালি রয়েছে।
রোগীর স্বজনরা বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তার না পেয়ে রোগীদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থেকেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ডাক্তার না পেয়ে অনেকেই তাদের রোগী শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যাও কম। ডাক্তার সংকট থাকায় রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। চিকিৎসার মান উন্নয়নে হাসপাতালের সকল বিভাগে ডাক্তার নিয়োগের জন্য তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, নোংরা পরিবেশ ও বেড সংকটের কারণে এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা প্রশ্নবিদ্ধ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একাধিক রোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নামে এটা সরকারি হাসপাতাল, টাকা ছাড়া এখানে কোনো সেবা পওয়া যায় না। হাসপাতালের কর্মরত সেবিকাদের ব্যবহার খুবই খারাপ। গত শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন একবার ডাক্তার তাদের দেখতে আসেন। গরিব এবং অসহায় বলেই তারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, জনবল সংকটের কারনে খুব সমস্যায় আছি। বিশেষ করে চিকিৎসক সংকটে সমস্যা বেশি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ইনডোর আউটডোরে রোগীর চাপ অনেক বেশি। মেডিকেল অফিসার না থাকায় রোগীর চাপ সামলাতে প্রতিদিন হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ ছাড়াও আউটসোসিংয়ের দুইজন পুরুষ, তিন জন নারী, একজন নিরাপত্তা প্রহরী, একজন অফিস সহায়ক, একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করলেও মামলা জনিত কারণে তাদেরকে প্রত্যাহার করে নেয়ায় চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত জনবল নিয়োগ দেয়া না হলে যেকোন সময় হাসপাতালটি অচল হয়ে যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।