জাতীয় লিগের ম্যাচে সতীর্থের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় দুই বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন শাহাদাত হোসেন। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এই পেসারকে।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে শাহাদাতের শাস্তির ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়। আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত এই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাচ্ছেন শাহাদাত।
খুলনায় জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে, গত রোববার সতীর্থ অফ স্পিনার আরাফাত সানি জুনিয়রকে মারধর করেন ৩৩ বছর বয়সী এই পেসার।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে জানা যায়, বল ঘষে উজ্জ্বল করা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আরাফাতের উপর ক্ষিপ্ত হন শাহাদাত। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে সতীর্থ এই ক্রিকেটারকে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করেন শাহাদাত। আম্পায়ার এসে সরিয়ে দেওয়ার পরও শাহাদাত আবার গিয়ে মারতে থাকেন। পরে সতীর্থরা তাকে একরকম জোর করেই নিয়ে যায় মাঠের বাইরে।
খেলা চলাকালীন সতীর্থ বা অন্য কারো গায়ে হাত তোলা আচরণবিধির লেভেল ৪ ভঙ্গ করার অপরাধ। এই ধারা ভঙ্গ করলে সর্বনিম্ন ১ বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে।
ঘটনার পর ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ আইন অনুযায়ী ম্যাচের শেষ দুই দিনের জন্য বহিষ্কার করেন শাহাদাতকে। আজ মঙ্গলবার টেকনিক্যাল কমিটির সভায় তাকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড।
সভাশেষে টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদীন জানান, শাহাদাতের অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় এনেই এই শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
“শাহাদাতের কিন্ত আগেও শৃঙ্খলাভঙ্গের ইতিহাস ছিল, সেটাকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। মাঠের মধ্যে সতীর্থের গায়ে হাত তোলা, এটা তো গুরুতর অপরাধ। টেকনিক্যাল কমিটির সবাই তার এই শাস্তির ব্যাপারে একমত হয়েছে।”
“আমাদের আশা, অন্য ক্রিকেটারদের জন্যও এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যে কোন ক্রিকেটারের জন্যই এটা একটা খারাপ ব্যাপার যে,সে বারবার এরকম অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়াচ্ছে। শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, এই বার্তাটা আমরা সবাইকে দিতে চাই।”
এর আগে নিজ বাসার শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে জেলে যেতে হয়েছিল শাহাদাতকে। একই মামলায় জেলে ছিলেন তার স্ত্রীও। জামিনে জেল থেকে মুক্তির পর নিজের ভুল স্বীকার করে দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন শাহাদাত।
সেবার এই পেসারকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি। পরে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জীবিকার কথা ভেবে আবার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ক্রিকেটে ফেরার।
বাংলাদেশের হয়ে ৩৮ টেস্ট, ৫১ ওয়ানডে ও ৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন শাহাদাত। সবশেষ জাতীয় দলে খেলেছেন ২০১৫ সালের মে মাসে।