লোহিত সাগরে সউদী আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের একটি জাহাজ জব্দ করেছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। গতকাল সোমবার (১৮ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এ খবর জানিয়েছে সউদী জোট। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
সউদী সামরিক জোটের মুখপাত্র কর্নেল তুর্কি আল মালকি’র এ সংক্রান্ত বিবৃতি প্রকাশ করেছে সউদী আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। তবে এতে হুথিদের জব্দ করা জাহাজটিতে ঠিক কত সংখ্যক ক্রু বা লোকজন ছিল সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
হুথি বিদ্রোহীদের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী আল হুথি রয়টার্সকে জানান, তাদের বাহিনী লোহিত সাগরে একটি সন্দেহজনক জাহাজ জব্দ করেছে। জব্দকৃত জাহাজের ক্রুদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা উপকূলরক্ষীরা তা খতিয়ে দেখছেন।
এর আগে রবিবার সউদী প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, ইয়েমেন সীমান্তে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দুই সউদী সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের নাম আল গামিদি ও বদর ইসা ইসসিলমি। প্রতিবেদনে নিহতদের পদমর্যাদা প্রকাশ করা হয়নি। ঠিক কখন, কী পরিস্থিতিতে তারা নিহত হয়েছেন সে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে সীমান্তে মাঝেমধ্যেই ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় সোদি সেনারা। সউদী আরবের নাজরান ও জিজানে একাধিক বার হুথি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এ মাসের গোড়ার দিকেই রিয়াদ জানায়, জিজানে তাদের পাঁচ সেনা নিহত হয়েছে।
২০১৪ সালে রাজধানী সানা দখলের পর সউদী সমর্থিত ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদু রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে হুথি বিদ্রোহীরা। পালিয়ে সউদীতে আশ্রয় নেন হাদি। তাকে ক্ষমতায় ফেরাতে ২০১৫ সালের জুনে ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে সউদী আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। পাল্টা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে সউদী সীমান্তবর্তী বিভিন্ন প্রদেশে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে হুথি বিদ্রোহীরা। গত মে মাসের শেষদিকে পবিত্র নগরী মক্কা ও জেদ্দায় দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হলে তা ধ্বংস করার দাবি করে সউদী প্রতিরক্ষা বাহিনী। প্রায় একই সময় সউদীর নাজরান বিমানবন্দরে তিন দফায় হামলা চালানোর দাবি করে হুথি বিদ্রোহীরা। এরপরও বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় তেলক্ষেত্রসহ সউদী আরবের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা অব্যাহত রাখে বিদ্রোহীরা। হুথিদের দাবি, তারা সউদী আরব, ইয়েমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৩০০ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে টার্গেট করে হামলা অব্যাহত রাখবে। সূত্র: রয়টার্স, আনাদোলু এজেন্সি।