Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দুর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে সেই টাকায় ফুটানি করলে দেশের মানুষ বরদাশত করবে না। অসৎ পথে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বিরিয়ানি খাওয়ার থেকে সৎপথে নুন ভাত খাওয়া অনেক মর্যাদার। গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এই দেশ থেকে মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি দূর করতে চাই। এর বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে, সেই অভিযান আমরা অব্যাহত রাখব। কারণ বাংলাদেশের মানুষের জীবনে শান্তি নিরাপত্তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আর একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলেই উন্নতি সম্ভব। সেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন দুর্নীতি করে, চুরি করে টাকা বানাতে হবে? আর ওই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন, করে সেটা দিয়ে আবার বিলাস বহুল জীবন যাপন করা, ওই টাকা দিয়ে ফুটানি করা, এটা কখনো বরদাশত করা হবে না, দেশের মানুষ তা বরদাশত করবে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে আমাদের বিরুদ্ধে অনেক তদন্ত করে। এরপরে আবার কেয়ারটেকার এসে তদন্ত শুরু করে। এর মধ্যে আবার আমেরিকায় জয়কে কিডন্যাপ করার পরিকল্পনা হয়। বিএনপি দুর্নীতি করে এত টাকা কামিয়েছিল যে আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র একজন অফিসারকে ভাড়া করে ফেলে, তাকে টাকা দিয়ে কিনে ফেলে। আমেরিকা সেই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বিএনপির খালেদা জিয়া, তার দুই পুত্রের দুর্নীতির তথ্য জানতে পারে। তাদেরই (এফবিআই) রিপোর্ট, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) এবং তার ছেলে ও বোন, আমাদের বিষয়ে কোথাও কোনো রকম কমিশন খাওয়া, চাঁদাবাজি বা দুর্নীতির কোনো দৃষ্টান্ত তারা পায়নি। যে অফিসারকে বিএনপি হায়ার করেছিল, এফবিআই তার বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে বের হয়ে আসে কোন কোন বিএনপি নেতা তাকে টাকা দিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট হত্যা করে থেমে যায়নি। তাদের চক্রান্ত অনেক দূর পর্যন্ত। তারা খুঁজতে গেল আমাদের দুর্নীতি, ধরা পড়ল নিজেরাই। আর যখন তারা জয়কে কিডন্যাপ করার পরিকল্পনা নিল, সেখানেও ধরা পড়ল। তাদের ওই দুই নেতার নাম চলে আসলো জাজমেন্টে। এই চক্রান্তকারী তারাই যারা খুনিদের মদদ দিতে পারে, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে পারে, পুরস্কৃত করতে পারে। যুদ্ধাপরাধীদেরকে যারা কাছে টেনে নিয়ে মন্ত্রী বানায়, যারা জনগণের ভোট চুরি করে জাতির পিতার খুনিদেরকে এমপি বানায়।

আজকে তারা অনেক কথা বলে। তাদের সময়েই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, গ্রেনেড হামলা হয়েছে। তারাই রাজনৈতিক হত্যাকান্ড শুরু করে। সেই জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়া পর্যন্ত। তাদের এই স্বভাব কোনোদিন যাবে না। ওই খুনি, দুর্নীতিবাজরা যেন আর কোনোদিন এই দেশে ক্ষমতায় আসতে না পারে, বাংলাদেশের জনগণকে সে ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। এরা আসা মানেই মানুষের দুর্ভোগ, এরা ক্ষমতায় থাকা মানেই দেশকে একেবারে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হলে যারা দরিদ্র বিক্রি করে চলত, তাদের আঁতে ঘা লাগে। তাই তারা বারবার বাগড়া দেয়ার চেষ্টা করে এবং অপপ্রচার চালায়। কেউ যেন এই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না আমি সেটাই বলব। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে জনগণের যে সেবা দিচ্ছে এই কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এই গতি আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

সকালে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ সভাপতি সম্মেলন স্থলে উপস্থিত হওয়ার পর জাতীয় সংগীতের সুরে সুরে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এবং বিশেষ অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এরপর প্রধান অতিথি মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহ ও সদস্য সচিব গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। এসময় সঙ্গে ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মঈন উদ্দিন মঈন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম বেপারী। অভ্যর্থনা উপ-কমিটির পক্ষ থেকে সহসভাপতি মতিউর রহমান মতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্থ ক্রেস্ট প্রদান করেন। এরপর প্রধান অতিথিকে উত্তরীর পরিয়ে দেন দুই নেত্রী মাহফুজা বেগম সাঈদা এবং কাজী শাহানারা ইয়াসমিন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ও অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি, সাংগঠনিক রিপোর্ট পাঠ করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।



 

Show all comments
  • Sukumar Das ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    দ্রুত দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখালে জনগন একটু হলেও নেক নজর দিতে পারে। ক্ষমতার অপ ব্যবহার করে বা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বা ধর্মের জোড়ে জমি দখল, নিপিড়ন সহ জঘন্যতায় যে সকল পশু ইতোপুর্বেই জাতীয় পশুর খেতাব পেয়েছে তাদের সবার অাগে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক জাতিকে অবহিত করার জন্য তড়িৎ উদ্যোগ বেশি লাভজনক হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Monir Chowdhury ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    দোহাই লাগে আমাদেরকে একটু স্বাধীন ভাবে বাচতে দিন,
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Abdul Kaium ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    সবাই দুর্নীতির সাথে জড়িত আপনি কত জনকে শাস্তি দিবেন...দুর্নীতি না করলে এদেশে ভাত জোটেনা..
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ মোশাররফ ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    ধন্যবাদ। তবে আমার প্রশ্ন শুদ্ধি অভিযান বন্ধ করে দেয়া হলো কেন? দ্রুত আবার অভিযান শুরু করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ মোশাররফ ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    এটা সত্যি সত্যিই করতে পারলে আপনাদের জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাসিম ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সেই শক্তি সাথর্ম দান করুক।
    Total Reply(0) Reply
  • Billal Hossain ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৯:৩৭ এএম says : 0
    দুর্নীতিবাজদের কারণেই আসকে দেশের এই করুণ অবস্থা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ