মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অযোধ্যা ভূমি বিরোধ প্রশ্নে ১০৪৫ পৃষ্ঠার রায়ে একটি শতাব্দীপ্রাচীন হিন্দু-মুসলিম ইস্যু নিরসনের চেষ্টা ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। যা অসাবধানতাবশত শিখদের ক্রুদ্ধ করে ফেলেছে। আদালত শিখদের ধর্মকে কাল্ট (‘উপাসনা প্রথা’) হিসেবে অভিহিত করেছে। সম্ভবত কোনো সাক্ষী ১৫১০-১৫১১ সালে অযোধ্যায় গুরু নানক দেবের সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে ভুল ব্যাখ্যার জের ধরে এমনটি ঘটেছে।
আদালত জনৈক রাজিন্দর সিংয়ের সাক্ষের ওপর নির্ভর করেছিল। অযোধ্যার বাবরি মসজিদের ওপর হিন্দুরা তাদের দাবি জোরদার করার জন্য ওই লোককে হাজির করেছিল। তার পরিচিতি হিসেবে বলা হয়েছিল যে এই লোক ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গ্রন্থরাজির ব্যাপারে আগ্রহী।
তিনি তার সাক্ষ্যে শিখ কাল্ট ও ইতিহাস নিয়ে বেশ কয়েকটি গ্রন্থের কথা উল্লেখ করেছেন। চন্ডিগড়ের কেন্দ্রি গুরু সিং প্রকাশ্যে রায়ের সমালোচনা করে বলেছেন, এটি শিখ সম্প্রদায়ের প্রতি ‘অমর্যাদাকর’। সভার সাথে সম্পৃক্ত শিখ ইতিহাসবিদ অধ্যাপক গুরদারশান সিং ধিলন বলেন, আদালত আমাদের ধর্মকে উপাসনা হিসেবে অভিহিত করেছে। এর নেতিবাচক অর্থ রয়েছে।
ক্যাম্ব্রিজ ইংরেজি অভিধানে কাল্টের অর্থ বলা হয়েছে, প্রায়ই একসাথে থাকা কোনো ধর্মীয় গ্রুপ, যাদের বিশ্বাসকে অনেক লোক চরম বা অদ্ভূত মনে করে। আর মেরিয়াম ওয়েবস্টার অভিধানে বলা হয়েছে, এমন ধর্ম যা অগতানুগতিক বা মেকি বিবেচিত হয়।
দিল্লির আইনজীবী নিনা সিং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে লিখেছেন যে শিখদের একটি প্রতিনিধিদল শিগগিরই প্রধান বিচারপতির সাথে সাক্ষাত করে শিখদের ধর্মকে কাল্ট হিসেবে অভিহিত করে দেয়া রায়কে সংশোধন করার অনুরোধ করতে চায়। তিনি বলেন, এটা অমর্যাদাকর রায় এবং তা শিখ ধর্মের বিরুদ্ধে যায়। বিচারকদের উচিত ছিল, এ ধরনের অমর্যাদাকর বক্তব্য রাখার জন্য ওই সাক্ষীকে তিরস্কার করা। আমাদের সম্প্রদায় এতে আহত হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। শিখ বুদ্ধিজীবীরা গুরু নানক সম্পর্কে কথিত জনম সাখিস বা জীবনীমূলক রচনা নিয়েও ক্রুদ্ধ। এলাহাবাদ হাই কোর্টে পেশ করা সাক্ষী থেকে সুপ্রিম কোর্ট তা গ্রহণ করেছে বলে বলা হচ্ছে। এতে বল হয়েছে যে গুরু নানক দেব ‘দর্শন’ দিতে অযোধ্যার রামজন্মভূমিতে গিয়েছিলেন।
সিং বলেন, গুরু নানক দেব মক্কা বা অযোধ্যার মতো ধর্মীয় স্থানগুলোতে গিয়েছিলেন অবয়বহীন ঈশ্বরের বাণী প্রচার ও প্রসারের জন্য। তিনি ‘দর্শন’ দিতে কোনো স্থানে যাননি। শিখ ধর্মের উপাসনা বা শাস্ত্রাচারে মূর্তির কোনো স্থান নেই। বরং গুরু এর বিরুদ্ধেই প্রচার করেছেন।
কেন্দ্রি গুরু সিং সভার সভাপতি গুরপ্রিত সিং বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় লোকের ওপর ভরসা করার বদলে আদালতের উচিত ছিল শিখ ইতিহাসবিদ বা আকাল তখত বা শিরোমনি গুরুদুয়ারা প্রবন্ধক কমিটির কাছ থেকে মতামত নেয়া। তারাই প্রখ্যাত শিখ লেখকদের ‘জনম সাখিস’ দিতে পারেন। তাদের লেখায় কল্পিত কিছু থাকত না। রায়ে নিহাং বা সশস্ত্র শিখ এক যোদ্ধার কথাও এসেছে। বলা হচ্ছে, ১৮৫৮ সালের ২৮ নভেম্বরে ফকির খাসা নামের ওই লোক রাম জন্মুভূমিতে পূজা করেছিলেন। শিখরা বলেন, তাদের ধর্মের সাথে পূজার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে শিখেরা সবচেয়ে বেশি ক্রুদ্ধ হয়েছে পুরোপুরি হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যকার একটি বিরোধে তাদেরকে টেনে আনায়। সভা সভাপতি বলেন, এটা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় কাজ হয়েছে। আমরা এই ইস্যুতে কোনো পক্ষ নিতে চাইনি। আমাদের ৫৫০ বছর প্রাচীন ইতিহাস ও ধর্মকে বিকৃত করা লজ্জাজনক কাজ, এতে বিশ্বের চোখে আমাদের ধর্মের অমর্যাদা করা হয়েছে। শিখ ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আপত দৃশ্যমান ‘অজ্ঞতা’ শিখ বিশেষজ্ঞ ও বিদ্বজ্জনদের বিভ্রান্তিতে ফেলে দিয়েছে। তাদের অনেকে একে তাদের গৌরবময় ঐতিহ্যের প্রতি সুনির্দিষ্ট আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করছেন। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।