Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পটুয়াখালীর শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে নেয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ১০:০৫ এএম

ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল' এর প্রভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ উপকূলীয় এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শনিবার সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সব মিলিয়ে এক ধরণের গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে জন্য বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে রাবনাবাদ নদীর জোয়ারের পানিতে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বানাতিপাড়া, চাড়িপাড়া, নয়াকাটা, চৌধুরীপাড়া, নাওয়াপাড়া, ছোট পাঁচ নং, বড় পাঁচ নং ও মুন্সীপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ্ছাড়া ওই ইউনিয়নের ৪৭/৫ নং বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধে ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় দুর্গত মানুষজনকে ১৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় দেয়া হয়েছে। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাতে ১৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় পৌনে দুই লাখ লোক আশ্রয় নিতে পারবে। তবে সন্ধ্যার পর থেকেই ওইসব আশ্রয় কেন্দ্র গুলো বিভিন্ন এলাকার লোকজন আশ্রয় নিতে থাকে।
এদিকে শুক্র, শনি ও রবিবার তিনদিনের ছুটিতে কুয়াকাটা সৈকতে বেশ কিছু পর্যটক বেড়াতে এসে আটকা পড়েছেন। তারা সবাই হোটেলে অবস্থান করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া কুয়াকাটা সৈকতের ভাসমান দোকানগুলি থেকে মালামাল সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে দোকানগুলো এখনও সরিয়ে নেয়া হয়নি। কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। খেপুরাপাড়া মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র দিয়ে দেখা গেছে। প্রতিটি রুমেই লোকজন কানায় কানায় পরিপূর্ন। এসময় কথা হয় আশ্রয় নেয়া আব্দুল রব মিয়ার সাথে। সে বলেন নদীর পারে আমরা থাকি। তাই কোন সময় পানিতে চাপ বুঝে উঠতে পারবোনা। তার চেয়ে আগেভাগেই ছেলে মেয়েদের নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছি। অপর এক গৃহিনী তাসলিমা জানান, ঘর্ণিঝড় বুলবুল কলাপাড়ায় আঘাত হানতে পারে। সিপিপির সদস্যদের মাইকিং শুনে এই আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছি। লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বিশ্বাস জানান, তার ইউনিয়নের ওই ৮টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৮-১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী এসব মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে।
কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশের পরিদর্শক মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, মাইকিং করে এসব পর্যটককে হোটেলে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। তাছাড়া বিপদ এড়াতে কুয়াকাটা সৈকতে নামার প্রধান সড়কসহ জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে যাতায়াত আটকে দেয়া হয়েছে। পর্যটকসহ কোনো মানুষ সৈকতে না নামতে পারে সে জন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহম্মদ আলী বলেন, পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে সকাল ৬ টা থেকে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সাথে পুলিশের একটি করে টিম এ জন্য কাজ করছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মুনিবুর রহমান জানান, এ উপজেলায় দুর্গত মানুষজনকে আশ্রয় দিতে ১৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র আগেই প্রস্তুত রাখা ছিলো। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯০০-১২০০ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। দুপুর থেকেই ওইসব আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্র শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড় বুলবুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ