Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহাকাশে তৈরি হল গরুর মাংস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:০২ পিএম

একটি বিফ-স্টেকে যত পরিমাণ মাংস থাকে ততটা পরিমাণ মাংস কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। মাংসখণ্ডটি পৃথিবীতে উৎপাদন করা হয়নি, উৎপাদন করা হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৪৮ কিলোমিটার ওপরে ভাসমান আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে এবং কোনও প্রাণীকে হত্যা না করেই।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের রাশিয়ার অংশে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখে এই ঐতিহাসিক পরীক্ষাটি হয়। রাশিয়ান মহাকাশচারী ও জীববিজ্ঞানী ওলেগ স্ক্রিপোচকা পরীক্ষাটি করেন। জীবিত গোরুর দেহ থেকে একটি ছোট্ট টিস্যুকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সুস্থ ও জীবন্ত রেখে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মহাকাশে। সেই জীবন্ত টিস্যুটির বায়োপ্রিন্টিং ঘটান বিজ্ঞানী ওলেগ স্ক্রিপোচকা।

জীবাণুমুক্ত পরিবেশে কোনও জীবদেহ থেকে নেয়া কলা বা টিস্যুকে কৃত্রিমভাবে পুষ্টি দিয়ে আয়তনে বাড়ানোর পদ্ধতির নাম টিস্যু কালচার। যেটি নতুন কোনও পদ্ধতি নয়। বহু লুপ্তপ্রায় উদ্ভিদকে সংরক্ষণ করা, প্রাণীর দেহের কোনও ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া, এমনকি ডিম্বাশয়ের টিস্যু থেকে ডিম্বানু তৈরির মতো ঘটনা ঘটিয়েছে বিজ্ঞান। টিস্যু কালচারের সাহায্যে। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইভলিন টেলফার ও তার টিম এই অসাধ্যসাধন করেছিলেন ২০১৮ সালে। এই টিস্যু কালচার পদ্ধতিরই আরেকটা রুপ হলো বায়ো-প্রিন্টিং। এই পদ্ধতিতে একটি থ্রি-ডি বায়ো-প্রিন্টার মেশিনের মধ্যে প্রাণীকোশ বা কলার কৃত্রিম বৃদ্ধি ঘটানো হয়। এর মধ্যে কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্যকারী বিভিন্ন উপাদান মেশানো থাকে।

জীবন্ত টিস্যুটির কোষগুলি অনবরত বিভজিত হতে থাকে বায়ো-প্রিন্টার মেশিনে থাকা বিশেষ তরলে। সাহায্য করে করে চুম্বক শক্তি। ফলে ক্রমশ আকারে বাড়তে থাকে টিস্যুটি। মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যে তৈরি হয়ে যায় বিফ-স্টেক করার উপযুক্ত বড়সড় একটি স্বাভাবিক মাংসখণ্ড এবং এটি পেতে কোনও প্রাণীকে হত্যা করতে হয়নি। বায়োপ্রিন্টিং পদ্ধতিতে তৈরি মাংসের বৈশিষ্ট্য হলো এই মাংস জীবাণুমুক্ত হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতেও তারা এই পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তবে পৃথিবীর চেয়ে মহাকাশে মাংসখণ্ডটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হিসেবে তারা মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণের অনুপস্থিতিকে দেখিয়েছেন। মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে পৃথিবীতে টিস্যুটির নিচের দিকের কোশের বৃদ্ধি ও বিভাজন হয়। কিন্তু মহাকাশে টিস্যুর সব দিকের কোষ একসাথে বিভাজিত হয় বলে মাংসখণ্ডটি সব দিকে একসঙ্গে ও দ্রুত বাড়তে থাকে। সূত্র: নিউজ ১৮।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ